ঢাকাকে দুই ভাগ করার সিদ্ধান্ত নগরবাসী মানবে না : বিএনপি

ঢাকা সিটি করপোরেশনকে (ডিসিসি) দুই ভাগ করার সিদ্ধান্ত নগরবাসী কোনোভাবেই মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনের আগে জনগণের কাছে বিভিন্ন ওয়াদা করে একটি প্রতারণা করেছে সরকার। আবার ঢাকা সিটিকে দুই ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে জনগণের সঙ্গে আরেকটি প্রতারণা করছে সরকার। রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া এই সিদ্ধান্তে নাগরিক দুর্ভোগ আরো বাড়বে। এ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করে যত দ্রুত সম্ভব ডিসিসি নির্বাচনের দাবিও জানান তিনি।


গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও ডিসিসির বর্তমান মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সদস্য সাবিহউদ্দিন আহমেদ। মির্জা ফখরুল বলেন, ডিসিসি নির্বাচনে ভরাডুবি বুঝেই সরকার এখন নতুন ফন্দি আঁটছে। ঢাকাকে দুই ভাগ করা হলে বিগত ১৩ বছর ধরে নগর জীবনকে সমৃদ্ধ করার জন্য যে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছিল তার পুরোটাই ভেস্তে যাবে। এতে প্রশাসনকে উপযোগী করতে আরো ১৫ থেকে ২০ বছর সময় লেগে যাবে। যাতে নাগরিক দুর্ভোগ আরো বাড়বে। তিনি বলেন, লন্ডন, নিউ ইয়র্ক এমনকি পাশের দেশ ভারতের দিলি্ল এবং কলকাতাতেও একটি সিটি করপোরেশনে একজন মেয়র। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শহর লসঅ্যাঞ্জেলেসেও একজন মাত্র মেয়র। তিনি বলেন, যে যুক্তি দিয়ে ঢাকাকে দুই ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ঢাকাকে দুই ভাগে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিএনপি আইনগতভাবে লড়বে কি না_এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ বিষয়ে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলাপ-আলোচনার পর করণীয় তাঁরাই নির্ধারণ করবেন।
এম কে আনোয়ার বলেন, ঢাকা ছোট একটি শহর। এই শহরে দুই মেয়র হলে দুর্ভোগ আরো বাড়বে। বিশেষ করে দুই রাজনৈতিক দলের দুজন হলে তো কথাই নেই। ভোটার তালিকা, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ সবকিছুই নতুন করে করতে হবে। ফলে আরো পিছিয়ে যাবে ডিসিসি নির্বাচন। তবে যেভাবেই আওয়ামী লীগ ঢাকাকে ভাগ করুক না কেন তাতেও নির্বাচনে তারা পরাজয় ঠেকাতে পারবে না।
সাদেক হোসেন খোকা বলেন, বিশিষ্ট নাগরিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ, ডিসিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারী এমনকি ডিসিসিতে আওয়ামী লীগের ২৫ জন কাউন্সিলরও সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে। তিনি বলেন, 'বিএনপির চলমান আন্দোলনে যেন শক্তিশালী ভূমিকা পালন না করতে পারি, সেজন্যই আমাকে অপসারণ করতে সরকার ঢাকাকে দুই ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করা সমীচীন হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।' খোকা বলেন, ঢাকা সিটিতে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় না থাকলে সারা দেশের পরিস্থিতিও ভয়াবহ হবে।

No comments

Powered by Blogger.