বাংলাদেশে ব্যবসা পরিবেশের অবনতি

বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু এবং পরিচালনা আগের চেয়ে আরও কঠিন হয়েছে। একটি দেশে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ কতটুকু সহজ তার ওপর বিশ্বব্যাংক পরিচালিত জরিপে বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি হয়েছে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ১৮৩টি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিবেশের ওপর বিশ্বব্যাংকের 'ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট-২০১২' গতকাল প্রকাশিত হয়েছে। এবার বাংলাদেশের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ১২২তম। গত বছরের রিপোর্টে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১৮ নম্বরে। বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে দ্বিতীয় খারাপ অবস্থার দেশ হয়েছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮২তম।


ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করার তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুরের পরে প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে রয়েছে হংকং, নিউজিল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ডেনমার্ক। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের তুলনায় র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে আছে শ্রীলংকা, পাকিস্তান, নেপাল ও মালদ্বীপ। অন্যদিকে পিছিয়ে আছে ভারত, আফগানিস্তান ও ভুটান। তবে ভারত ও আফগানিস্তান ও ভুটানের অবস্থান আগের তুলনায় ভালো হয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ১০টি বিষয়ে আলাদা আলাদা মানদণ্ডের ভিত্তিতে 'ডুয়িং বিজনেস' র‌্যাংকিং করা হয়। ব্যবসা শুরু করার মানদণ্ডে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৬তম, যা আগের চেয়ে ৬ ধাপ বেশি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ব্যবসা শুরু করার সূচকে বাংলাদেশের তুলনায় এগিয়ে আছে আফগানিস্তান, শ্রীলংকা, ভুটান ও মালদ্বীপ। পিছিয়ে আছে পাকিস্তান, নেপাল ও ভারত। বিদ্যুৎ সংযোগের সূচকেও বাংলাদেশের অবস্থান আগে ছিল ১৬৮তম, যা এবার অনেক পিছিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের তুলনায় রাশিয়ান ফেডারেশন বাদে পৃথিবীর সব দেশ এগিয়ে আছে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০১১ সালের মার্চ পর্যন্ত নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। এর ফলে এই সূচকে বাংলাদেশের ব্যাপক অবনতি হয়েছে।
বাংলাদেশ আরও যেসব সূচকে পিছিয়েছে তা হলো_ নির্মাণ কাজের অনুমতি, সম্পত্তি নিবন্ধন, ঋণ প্রাপ্তি, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর পরিশোধ, সীমান্ত বাণিজ্য, চুক্তি কার্যকর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দেউলিয়া দশার সমাধান।
এর মধ্যে প্রায় সবটাতেই বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি হয়েছে। সম্পত্তি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৩টি দেশের মধ্যে ১৭৩তম। বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করতে ৭টি প্রক্রিয়া রয়েছে। ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে কর কর্তৃপক্ষের নিবন্ধনে লাগে গড়ে ৯ দিন, ভ্যাট নিবন্ধনে লাগে ৭ দিন এবং ট্রেড লাইসেন্সে লাগে ৬ দিন। অনেক দেশে এর চেয়ে অনেক কম সময় লাগে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পেতে লাগে গড়ে ৩৭২ দিন যেখানে ভারতে লাগে ৬৭ দিন, নেপালে লাগে ৭০ দিন। বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে ৭টি ধাপ পেরোতে হয়, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় বেশি।
 

No comments

Powered by Blogger.