লিবিয়াজুড়ে উল্লাস

গাদ্দাফি নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃহস্পতিবার সারা লিবিয়া উল্লাসে ফেটে পড়ে। রাজধানী ত্রিপোলিতে সমুদ্রগামী জাহাজ এবং রাস্তায় গাড়িতে অনবরত হর্ন বাজতে থাকে এবং এনটিসি যোদ্ধারা শূন্যে ফাঁকা গুলি চালিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে। সিএনএন সংবাদদাতা ডন রিভার্স জানিয়েছেন, প্রচণ্ড জয়ে উল্লাস আর উত্তেজনায় ফেটে পড়ে গোটা নগরী। খবর সিএনএন অনলাইনের।ক্ষমতাচ্যুত লিবীয় শাসকের নিহত হওয়া সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে এনটিসি সরকারের তথ্যমন্ত্রী মাহমুদ শাম্মাম বলেছেন, এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। এর জন্য আমি দশকের পর দশক ধরে অপেক্ষা করছিলাম। ত্রিপোলির রাস্তায় জনতা ও যোদ্ধারা মিলে উল্লাস প্রকাশ করতে থাকে।


অনেকেই গাড়ি চালিয়ে, কেউ কেউ জানালায় দাঁড়িয়ে অথবা পিকআপ ট্রাকে চড়ে তাদের বিজয়ানন্দ ব্যক্ত করে। চারদিকে কেবল আনন্দ ধ্বনি। কেউ লাফাতে লাফাতে, কেউ নাচতে নাচতে রাস্তায় গাড়ির পাশ দিয়ে ছুটছিল। এক হোটেলের সামনে বাবুর্চিরা তাদের সাদা টুপি পরেই ভিড় জমায়। সেখানে নাচ-গানের তালে চলে লিবীয় পতাকার আন্দোলন। দারুণ স্বস্তি আর আনন্দে মেতে উঠেছে ত্রিপোলি। সিএনএন সংবাদদাতা রিভার্স মন্তব্য করেন_ না দেখলে বোঝাই যাবে না, মানুষ কতটা আনন্দে মেতেছিল! গাদ্দাফির নিজ শহর বলে পরিচিত সিরতেও দেখা গেছে জনতার উল্লাস। অনেকেই পতাকা নিয়ে গাড়ি হাঁকিয়ে চলছিল। হর্ন বাজানোর পাশাপাশি আকাশে গুলি ছুড়েছে শান্তির বার্তা হিসেবে। লিবীয় টেলিভিশনে সেলফোনে তোলা গাদ্দাফির রক্তাক্ত দেহ প্রদর্শন করা হয়। অনেক লিবীয় টুইটারসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে
এই অভিমত ব্যক্ত করে, গাদ্দাফির মৃত্যুতে সে দেশের কিছুই যায়-আসে না। কেউ কেউ আবার সাবেক মিসরীয় প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক ও সাবেক তিউনিসীয় প্রেসিডেন্ট বেন আলির পতনের পর গাদ্দাফির মৃত্যুকে আরব গণজাগরণের আরেকটি বিজয় বলে মন্তব্য করেন।
লিবিয়ার অন্যান্য শহরেও জয়োল্লাস দেখা গেছে। গৃহযুদ্ধের সময় বিদ্রোহীদের প্রধান ঘাঁটি বলে পরিচিত বেনগাজিতে গাদ্দাফির নিহত হওয়ার সংবাদ শুনে সাধারণ মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়ে। তারা রাস্তায় নেমে আসে। যানবাহনের একটানা হর্নের আওয়াজ কানে তালা লাগার উপক্রম হয়। শুধু লিবিয়ায় নয়, প্রতিবেশি দেশ মিসর ও তিউনিশিয়ায়ও লিবীয় স্বৈরশাসকের মৃত্যুতে জনগণ আনন্দ উল্লাসে মত্ত হয়ে ওঠে।

No comments

Powered by Blogger.