টেস্টের বিশু হবেন অন্য রকম!

ক্রিকেট মাঠে সবচেয়ে নান্দনিক দৃশ্য কী? শচীন টেন্ডুলকারের মতো কাভার ড্রাইভ নাকি ব্রায়ান লারার মতো পুল, ওয়াসিম আকরামের মতো আউটসুইং নাকি শেন ওয়ার্নের মতো লেগস্পিন? বিতর্কের অবকাশ আছে যথেষ্ট। তবে লেগস্পিন চাক্ষুষের অপার্থিব অনুভূতির সঙ্গে তুলনীয় খুব বেশি কিছু যে ক্রিকেট নামক খেলাটিতে ঘটে না_এ নিয়ে দ্বিমত নেই বললেই চলে। হয়তো ক্রিকেট-আনন্দের শ্রেষ্ঠ রূপ এটিই!আজ থেকে শুরু হওয়া চট্টগ্রাম টেস্ট আলোকিত করার অপেক্ষায় আছেন এক লেগস্পিন শিল্পী। দেবেন্দ্র বিশু। ২২ গজি আয়তক্ষেত্রকে যিনি বানাবেন ক্যানভাস। সেখানে ফ্লিপার-গুগলিতে এঁকে যাবেন ক্রিকেট শিল্পের ছবি।


বাংলাদেশের জন্য সেটি ভয়ংকর হওয়ারই কথা। কিন্তু সমঝদার দর্শকদের জন্য বিশুর বোলিং দেখার প্রাপ্তিও তো কম না।ওয়ানডে সিরিজে কিন্তু সেই বোলিং তেমনভাবে দেখা যায়নি। ঢাকার প্রথম দুই ওয়ানডেতে ৮ ওভারে ৪১ রান দিয়ে এক উইকেট এবং পাঁচ ওভারে ২১ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। সেটি মনে করিয়ে দিতেই ক্যারিবীয় অধিনায়ক ড্যারেন সামি ঢাল হলেন বিশুর। টেস্টে যে ভিন্ন কিছুর প্রত্যাশায় আছেন, সেটি মনে করিয়ে দিতেও ভুললেন না, 'সব ক্রীড়াবিদেরই খারাপ সময় যায়। ও লাল বল দিয়ে অনেক অনুশীলন করছে। আমি জানি যে এমন উইকেটে টেস্টে অনেক ওভার বোলিং করতে বিশু পছন্দ করবে। কারণ এখান থেকে ও বেশ সাহায্য পাবে। আসলে অভিষেকের পর থেকে বিশু যেভাবে টেস্ট খেলছে, সেটি দুর্দান্ত। আমি নিশ্চিত, এই টেস্টের উইকেটে বিশুর বোলিংয়ের বেশ বড় একটা ভূমিকা থাকবে।' এই টেস্টের আবহ হয়ে গেছে ক্যারিবিয়ানদের পেস বনাম বাংলাদেশের স্পিন। তবে এর ফাঁকে থাকা দেবেন্দ্র বিশু যে ফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন, সেটি মানছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও, 'সেটি হতে পারে। কারণ বিশু অনেক উঁচুমানের বোলার।'
যাঁকে নিয়ে এত কথকতা, সেই বিশুর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক কিন্তু এ বছরই। ডোয়াইন ব্রাভোর ইনজুরির সুযোগে বিশ্বকাপে গেলেন। সেখানেই লেগস্পিনের জাদুতে মোহাবিষ্ট করলেন বিশ্বকে। এরপর ভারত-পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও দুর্দান্ত। পাঁচ টেস্ট খেলে এরই মধ্যে নিয়েছেন ২১ উইকেট। শুরুর এই ধারা ধরে রাখার দিকেই এখন বিশুর মনোযোগ, 'আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শুরুটা আমার জন্য ছিল চ্যালেঞ্জিং। এখন পর্যন্ত পথচলাটি দারুণ। বিশ্বকাপে খেলা, দেশের মাটিতে পাকিস্তান-ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ_সবই বেশ ভালো কেটেছে। এখন সেই ধারা ধরে রাখতে চাই।' বাংলাদেশের বিপক্ষে ভালো কিছুর জন্য উদগ্রীব থাকার কথাও বলেছেন তিনি, 'দলকে জেতাতে যা যা করা প্রয়োজন, সবই করতে প্রস্তুত আমি।'
এই রে, তাহলেই তো সর্বনাশ! ফিদেল এডওয়ার্ডস, কেমার রোচ, রবি রামপলের এঙ্প্রেস ট্রেন সামলাতে পারলেও দেবেন্দ্র বিশুর লেগস্পিনের মায়াবী বিভ্রমের জালে না আটকে যায় বাংলাদেশ!

No comments

Powered by Blogger.