এশিয়ান ফুটবলের কালো দিন

৯ অক্টোবর, ২০১১, বুধবার। এশিয়ান ফুটবলের ইতিহাসে একটা কালো দিন হয়েই থাকবে তারিখটা। একদিকে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ম্যাচের সময় হাতাহাতি, ক্রোধে উন্মত্ত সমর্থকদের মধ্যে নৃশংসতা, অন্যদিকে পাতানো ম্যাচ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে দক্ষিণ কোরিয়ান এক ফুটবল কোচের আত্মহত্যা_কী হয়নি গত পরশু! একের পর এক ঘটে যাওয়া এসব বিশ্রী ঘটনা হয়তো স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে পারলেই স্বস্তি পেতেন নিখাদ ফুটবল সমর্থকরা।


সবচেয়ে বড় তাণ্ডবটা হয়েছে কাতারের আল সাদ আর দক্ষিণ কোরিয়ার সুওনের মধ্যে হওয়া এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের দ্বিতীয়ার্ধে। ৭০ মিনিটের সময় সেনেগালিজ ফরোয়ার্ড মামাদোও নিয়াংয়ের গোলে এগিয়ে যায় আল সাদ। সুওন স্টেডিয়ামের গ্যালারিজুড়ে থাকা স্বাগতিক সমর্থকরা সেই গোলটা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি। নিয়াংকে দুয়ো দিতে শুরু করেন তাঁরা। এর মিনিট দশেক পরে নিজের ও দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটিও করেন তিনি। তবে হঠাৎ করে একজন আঘাত পাওয়ায় সুওন ক্লাবের বেশির ভাগ ফুটবলার তখন ব্যস্ত ছিলেন সেই সতীর্থকে নিয়ে। ফাঁকা মাঠে বল নিয়ে দৌড়ে প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়েছেন নিয়াং। এমন একটা ঘটনার পর আর শান্ত থাকতে পারেনি স্বাগতিক সমর্থকরা। ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে মাঠে নেমে আসে তারা। দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যে হাতাহাতির পর শুরু হয় তাদের তাণ্ডব। এমনকি দুই ক্লাবের কর্মকর্তা ও কোচিং স্টাফদেরও দেখা যায় মারামারিতে জড়িয়ে পড়তে। এই অরাজকতা শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে এসেছে রেফারি আর পুলিশের হস্তক্ষেপে। ম্যাচটাও শেষ হয়েছে ১০ মিনিট ইনজুরি সময়ের পর! কিন্তু মাঝের এই ১০ মিনিটে আহত হয়েছে অনেক সমর্থক।
সুওন স্টেডিয়ামের এই হিংস্রতার আগে আরো একটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। নিজের বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ান ক্লাব সাংমু ফিনিঙ্রে সাবেক কোচ লি সু-চিওল। কে-লিগের একটি ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর গত সপ্তাহে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সব ধরনের ফুটবলসংশ্লিষ্টতা থেকেও। যদিও লাশের পাশে কোনো সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি তবে সু-চিওলের পরিবারের লোকজন স্বীকার করেছেন ম্যাচ পাতানোর কলঙ্ক মাথার ওপর থাকায় গত কিছুদিন ধরেই নাকি হতাশা আর বিষণ্নতা গ্রাস করেছিল কোরিয়ান এই কোচকে। তার ওপর কারাদণ্ডের মতো শাস্তিটা হয়তো মেনে নিতে পারেননি তিনি। সেটা থেকে বাঁচতেই বেছে নিয়েছেন না-ফেরার দেশের পথ! এএফপি

No comments

Powered by Blogger.