ছাত্রলীগে তোলপাড়, সন্দেহের তীর ছুটছে নানাদিকে- সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যের পর

ছাত্রলীগের ভেতর শিবির ঢুকে পড়েছে- এ অভিযোগ অনেক পুরনো। মঙ্গলবার স্বয়ং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হলের ছাত্রলীগের কমিটির গুরম্নত্বপূর্ণ পদে শিবির ঢুকে পড়েছে।
সৈয়দ আশরাফের এ বক্তব্যে তোলপাড় শুরম্ন হয়েছে ছাত্রলীগের ভেতর-বাইরে। সন্দেহের তীর ছুটেছে নানাজনের দিকে। প্রশ্ন উঠেছে- এর জন্য কারা দায়ী? ছাত্রলীগ কিভাবে চলছে? কারা চালাচ্ছে ছাত্রলীগ? অনুসন্ধানে জানা যায়, সব মিলিয়ে ছাত্রলীগের আজকের এ অবস্থায় আসার কারণ সংগঠনটিতে গঠনতন্ত্র চর্চার কোন বালাই নেই। নেই কোন চেন অব কমান্ড। সাবেক দুই নেতার ইশারায় চলছে দেশের প্রাচীনতম এ ছাত্র সংগঠনটি। ওই দুই নেতা ও তাদের সিন্ডিকেট সংগঠনের বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ওপর ভর করে কলকাঠি নাড়ছে আড়াল থেকে। তাদের মাথা থেকে বের হওয়া সিদ্ধানত্ম উচ্চারিত হয় সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের মুখ দিয়ে। সংগঠনের এ লেজেগোবরে অবস্থার সুযোগে সংগঠনটির কেন্দ্র থেকে শুরম্ন করে মাঠ পর্যায় পর্যনত্ম সবখানেই ঢুকে পড়েছে ছদ্মবেশী শিবির। এখন তারা সক্রিয় হয়ে উঠেছে তাদের মিশন বাসত্মবায়নে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল ওই সিন্ডিকেট। এ কারণেই ঘটেছিল এফ রহমান হলে পরিকল্পিত সংঘর্ষের ঘটনা। যে সংঘর্ষ চলাকালে আহত আবু বকরের মৃতু্য হয়।
সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যে তোলপাড় বুধবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হলের ছাত্রলীগের কমিটিতে গুরম্নত্বপূর্ণ পদে শিবির ঢুকে পড়েছে। তার এ বক্তব্যের পর পরই এ নিয়ে তোলপাড় শুরম্ন হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। সৈয়দ আশরাফ কোন্ চারটি হলের কথা বলেছেন- এ নিয়ে সকলের কথাবার্তা। সন্দেহের তীর ছুটেছে কয়েকটি হলের ১০ জন সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের দিকে। সৈয়দ আশরাফ কোন্ চার ছাত্রলীগ নেতার কথা বলেছেন তা সুনির্দিষ্ট করা যায়নি। তবে সংগঠনের একাধিক সূত্র জানায়, ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরম্ন করে মাঠ পর্যায় পর্যনত্ম সবখানেই শিবির ঢুকে পড়েছে। ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হওয়ার রাতেই রাতারাতি ছাত্রলীগ বনে গিয়ে মিছিল করেছে অনেক শিবির কর্মী। কিছু ছাত্রলীগ নেতা নিজেদের গ্রম্নপ ভারি করার জন্য কোন কিছু যাচাই বাছাই না করেই সবাইকে ছাত্রলীগ বনতে সহায়তা করেছেন।
সংগঠন সূত্র জানায়, ছাত্রলীগের হল কমিটি ও কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক নেতার বিরম্নদ্ধেই শিবির সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। হল কমিটিগুলোর মধ্যে এফ রহমান হল, জিয়া হল, জহুরম্নল হক হল, বঙ্গবন্ধু হল, এসএম হল, মহসীন হল ও একুশে হলের কমিটিতে শিবির জায়গা করে নিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আর এদের বেশিরভাগই এক কেন্দ্রীয় নেতার মাধ্যমে শীর্ষ এক কেন্দ্রীয় নেতার হাত ধরে কমিটিতে স্থান পেয়েছে। সাবেক মাদ্রাসা ছাত্র ওই কেন্দ্রীয় নেতার বিরম্নদ্ধেও শিবির করার অভিযোগ আছে। তিনি মাদ্রাসা জীবনে নিজ এলাকায় শিবিরের একটি শাখার সভাপতি ছিলেন বলেও অভিযোগ আছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির এক যুগ্ম সম্পাদক, এক সাংগঠনিক সম্পাদক, এক সহসম্পাদক এবং এক উপসম্পাদকের বিরম্নদ্ধে শিবির সম্পৃক্ততার অভিযোগ বহু দিনের।
ছাত্রলীগের চারটি হল কমিটিতে শিবির ঢুকে পড়েছে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এমন কড়া বক্তব্যের প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, আমরা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেৰণ করব। যার বিরম্নদ্ধেই এমন প্রমাণ পাওয়া যাবে তার বিরম্নদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.