নতুন সিদ্ধান্তে সারিকা! by কামরুজ্জামান মিলু

একজন মডেল বা অভিনয়শিল্পীর কাছে মিডিয়ার ভাবনা মানেই আলাদা অনুভূতি জন্ম নেওয়া এক জগত। অনেকটা টাইলসের মত সুন্দর করে গড়া, ঝকঝকে। তবে টাইলসের মতো পিচ্ছিল জায়গা দিয়ে অনেকেই না হেঁটে দৌড়ে যেতে চায়। আর দৌড়ে যেতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি। আমাদের মিডিয়াতে অনেকেরই দৌড় দিয়ে রাস্তাটা জয় করার প্রবণতা থাকলেও সারিকা তা চাননি।

মিডিয়ায় কাজের শুরু থেকেই তাকে ঘিরে বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয় নিয়ে হৈ চৈ উঠেছিল কিংবা এখনও হচ্ছে। হবেই না কেন, অল্প সময়ে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন সারিকা। একের পর এক বিজ্ঞাপনে অপরূপা এ মডেলকন্যার উপস্থিতি অনেক বেশি লক্ষণীয়।
২০০৮, ০৯, ১০, ১১ টানা বেশ কিছু বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করে ভালো নির্মাতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এরপর নাটকে অভিনয়ের পালা। আশুতোষ সুজনের পরিচালনায় ‘ক্যামেলিয়া’ নাটকটি ছিল সারিকার অভিনীত প্রথম টিভি নাটক। এরপর ২০১০ সালের ঈদে টিভি নাটকে সারিকার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। গত বছর ঈদে বিভিন্ন চ্যানেলে তার অভিনীত বেশ কিছু নাটক প্রচার হয়।

এবারের ঈদেও তার ব্যতিক্রম নয়। আগত কোরবানি ঈদ সামনে রেখে নির্মিত প্রায় ২০টির মতো নাটকে দেখা যাবে তাকে। এ বিষয়ে সারিকা বাংলানিউজকে বললেন, “এবার ঈদে আমার প্রায় ২০টি নাটক বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারের সম্ভাবনা রয়েছে। এ মুহূর্তে ২-৩টা ছাড়া বেশিরভাগরই নাম মনে নেই। তবে সাগর জাহান রচিত ও পরিচালিত ঈদের বিশেষ নাটক ‘আরমান ভাই’ সিক্যুয়ালের শেষ পর্ব ‘আরমান ভাই হানিমুনে’তে অভিনয় করেছি আমি। এখানে আমি স্বনামে এক মডেলের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। আর নিজের চরিত্রে অভিনয় করাটাও অনেক আনন্দের।”

এছাড়া সারিকা প্রান্ত সরকারের খণ্ড নাটক ‘গল্পের নাম জানা নেই’এবং সাখাওয়াৎ হোসেন মানিকের পরিচালনায় ‘জীবনের চতুর্থ অধ্যায়’ নামক একটি ব্যতিক্রমর্ধী গল্পের নাটকে অভিনয় করেছেন। এ নাটকে আবুল হায়াতের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যাবে তাকে। এ নাটকটি নিয়ে দারুণ আশাবাদী সারিকা।

নাটকটির গল্প নিয়ে সারিকা বলেন, “আবুল হায়াত তার শেষ জীবন একটু আয়েশে কাটানোর জন্য নিজের বড় ছেলেকে সংসারের দায়িত্ব তুলে দেন। কিন্তু তার এ অবসর জীবনে নেমে আসে তিক্ততা। তার ছেলেও ছেলেবউ তাকে তেমন সময় দেয় না। এমন সময় তার সাথে পরিচয় ঘটে আমার। এক সময় আমি তার প্রেমে পড়ে যাই। তারপর ঘটতে থাকে নানা ঘটনা।”

এ নাটকের কথা শেষ না হতেই সারিকা বললেন, “অরেকটি নাটকের কথা মনে পড়েছে। জাহিদ হাসানের পরিচালনায় তার বিপরীতে আরেকটি নাটকে অভিনয় করেছি। এ নাটকটির নাম ‘নীলিমা কাঁদছে কেন।’

সারিকার পুরো নাম সারিকা সাবরিনা। বাবা ব্যাংকার সাফিয়ার রহমান এবং  মা রোজী রহমান একটি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলের প্রিন্সিপাল। আর একমাত্র ভাই আশিক একজন চিকিৎসক। শুধু উৎসাহ আর সহযোগীতা নয়, সারিকার অনেক কাজের সমালোচকও তার পরিবার। অবসরে বন্ধু ও পরিবারকে সময় দিতে বেশি পছন্দ করেন তিনি।

বর্তমানে সরিকা নকিয়া, সিঙ্গার, ওয়ালটন এবং কেয়ার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর । বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনচিত্র ছাড়াও এ পর্যন্ত প্রায় ১২টি বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করেছেন। এখন শুধু বাকি চলচ্চিত্রে অভিনয়। সে পথটাও আর বেশি দূরে নয়।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সারিকা বাংলানিউজকে বলেন, “আমি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব অনেক আগেই পেয়েছি। কিন্তু মানসিকভাবে কখনই প্রস্তুত ছিলাম না। তবে বর্তমানে সিদ্ধান্ত নিয়েছি নাটকের কাজ কমিয়ে দিয়ে আগামী দু’মাসের মধ্যেই চলচ্চিত্রে কাজের ঘোষণা দেব। তবে কোন পরিচালকের কাজ করব, এটা এখনই জানাতে চাই না।”

মিডিয়ায় কাজ করতে এসে অনেকেই প্রথমে ভ্যাবাচ্যাকা খায় এবং নানা সমালোচনায় জড়িয়ে পড়ে। কোন কাজ করব, কোনটা করব না তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলে। শেষ পর্যন্ত হয়ে যায় হ-য-ব-র-ল।

সারিকা মিডিয়ায়িএরইমধ্যে সাফল্যের সাথে ৬-৭ বছর অতিবাহিত করেছেন। তাই তার জীবনের এ নতুন সিদ্ধান্ত শুভ হোক এই প্রত্যাশা রইল।

No comments

Powered by Blogger.