বাংলাদেশী শাহিরা প্লেবয় ম্যাগাজিনে

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আইরিশ যুবতী শাহিরা বেরি। ২১ বসন্তের নজরকাড়া সুন্দরী। বসবাস আয়ারল্যান্ডের গ্যালওয়েতে। এরই মধ্যে তার রূপ-লাবণ্য পেয়েছে জগৎজোড়া খ্যাতি। এই সুবাদে হয়েছেন বিশ্বের বড় বড় কোম্পানির মডেল। অন্তর্বাস থেকে শুরু করে মেয়েলি বিভিন্ন পণ্যে তাকে দেখা যায় খোলামেলা মডেল হিসেবে।

তার সেই রূপে চোখ আটকে গেছে বিশ্বখ্যাত প্লেবয় ম্যাগাজিনের হিউ হেফনারের। তিনি তাকে প্লেবয়ের মডেল হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্লেবয়ের মডেল হওয়া মানে ক্যামেরার সামনে কাপড় খুলে দাঁড়ানো। স্টিল ছবি ধারণ, ভিডিও ধারণ। তারপর সেই নগ্ন ছবি প্লেবয় ম্যাগাজিনে ছাপা হওয়া। তার সূত্র ধরে একের পর এক সাক্ষাৎকার দেয়া। আরো কত কি!
যেমনটা করেছেন ভারতের এ সময়ের বহুল আলোচিত গায়িকা-নায়িকা শেরলিন চোপরা। তিনি প্লেবয়ের ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন একেবারে বিবস্ত্র হয়ে। প্লেবয়ে তা ছাপা হওয়ার আগেই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু শাহিরা স্বল্প বসনে মডেলিং করলেও প্লেবয়ের জন্য ক্যামেরার সামনে একেবারে বিবস্ত্র হতে রাজি ছিলেন না। তার চেয়ে বড় কথা তার পরিবার তাতে সায় দেয়নি। তাই হিউ হেফনারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন শাহিরা। কিন্তু কোন কোন মিডিয়া খবর দিয়েছে তিনি রাজি হয়ে গেছেন প্লেবয়ের প্রস্তাবে।

সম্প্রতি তিনি সফর করেছেন প্লেবয় ম্যানসনে। পার্টি করেছেন। প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে কি হবে! তার মনে গেঁথে গেছে প্লেবয়ের ওই বুড়ো প্রেমিক হিউ হেফনারকে। তাই তো এ মাসের শুরুতে তিনি লস অ্যানজেলেস ঘুরতে যান। সেখানে গিয়েই প্লেবয় ম্যানসনে ঢুঁ মারতে ভুল করেন নি শাহিরা।

হিউ হেফনারকে দেখার পর তার মন্তব্য- আমি এত লাভলি মানুষ কখনো দেখিনি। প্লেবয়ের পার্টি মানেই যে কেউ বুঝে নেন অন্যকিছু- রগরগে পার্টি। মদে সয়লাব। স্বল্পবসনা নারীর এলোমেলো চলাফেরা। উন্মাতাল নাচ। সুইমিং পুলে ভালোবাসায় বিভোর থাকা। কিন্তু হিউ হেফনারের দেয়া নৈশভোজে তেমন রগরগে কোনো ঘটনা ছিল না। ওই রাতে গার্লফেন্ডদের সঙ্গে মজা করতে হাজির ছিলেন তিনি নিজে।

শাহিরা বেরি বলেন- আমার সঙ্গে পরিচয়ের পর তিনি আমাকে বার বার তার পার্টিতে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বলেছেন, তোমার জন্য সব সময়ই আমার দরজা খোলা। এসব খবরে পশ্চিমা মিডিয়া এখন সয়লাব। তবে শাহিরা বেরি’কে পরিচয় দেয়া হচ্ছে হাফ-বাংলাদেশী মডেল হিসেবে। হাফ বাংলাদেশী মডেল মানে হলো তার পিতা বাংলাদেশী, না হয় তার মা বাংলাদেশী।

কিন্তু কোনো রিপোর্টেই তাদের কারো নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হয় না। বলা হয়নি শাহিরার পিতা নাকি মা বাংলাদেশী। এ বছরের ১৪ই মে আয়ারল্যান্ডের অনলাইন পত্রিকা দ্য কোন্যাচট্ সেন্টেনিয়াল তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, শাহিরার বসবাস আয়ারল্যান্ডের গ্যালওয়েতে। তাকে প্লেবয়ের জন্য পোজ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে ছবির পোজ দিতে রাজি নন।

বলেছেন, এমন পোজ দেয়াতে তার আগ্রহ নেই। হিউ হেফনারের প্লেবয় ম্যাগাজিনের জন্য মডেল যারা নির্বাচন করেন তাদের প্রধান স্যাম রিমা প্রস্তাব পাঠান শাহিরাকে। এর পরপরই আয়ারল্যান্ডের একটি ম্যাগাজিনে খবর প্রকাশিত হয় যে, তিনি প্লেবয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন। তবে তা প্রত্যাখ্যান করে তখন শাহিরা জানিয়ে দেন- আমার মায়ের চেয়ে বয়সে বুড়ো অথবা আমার নানা-নানীর চেয়ে বয়সে বড় এমন কোনো লোকের প্রতি আমার কোনো আগ্রহ নেই।

প্লেবয় থেকে তাকে মে মাসে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আমন্ত্রণ জানায়। এর কিছুদিন পরই তার এ বছরের জন্য লস অ্যানজেলেসে সফরে যাওয়ার কথা। তাছাড়া, অন্যান্য মডেলিংয়ের কাজ নিয়ে তিনি ব্যস্ত। তিনি সম্ভব হলে তখন এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করবেন।

শাহিরা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত টগবগে যুবতী। তাকে তার কাজের জন্য সমর্থন দেয় তার পরিবার। তার ক্যারিয়ারের সফলতার জন্য তার মা প্লেবয়কে প্রথম পছন্দ হিসেবে দেখেন না। তাই তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন শাহিরাকে। ফলে শাহিরাকে মিস করতে হয় প্লেবয়ের মতো বড় ইভেন্ট।

শাহিরা বলেন, আমাকে পরিবার থেকে এ কথা জানিয়ে বলা হয়- তোমার সফলতা পাওয়ার জন্য রয়েছে আরো অনেক পথ। ওদিকে এ খবর পেয়ে যায় আমেরিকার একটি ওয়েবসাইট।

তাতে শাহিরাকে তুলনা করা হয় এ সময়ের সেক্সসিম্বল, পুরুষখেকো কিম কারদাশিয়ানের সঙ্গে। এমন তুলনা করায় বেশ উৎসাহিত শাহিরা। এভাবে তাকে নিয়ে ইন্টারনেটে প্রচার দেখে শাহিরা প্লেবয়ের মডেল হোন বা না হোন স্বীকার করেছেন- এরই মধ্যে তিনি হিউ হেফনারের প্লেমেট অথবা মনের কাছের মেয়ে-বন্ধু হতে পেরেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি ছুটে গেছেন প্লেবয় ম্যানসনে।

তবে না, সেখানে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে তাকে একের পর এক কাপড় খুলতে হয়নি। তিনি এ মাসের শুরুতে সেখানে গিয়েছিলেন এক সারপ্রাইজ ভিজিটে। সেখানে পল পার্টিতে তার দেখা হয় হিউ হেফনারের সঙ্গে। এক দেখাতেই ৮৬ বছর বয়সী হেফনারের যেন প্রেমে পড়ে গিয়েছেন শাহিরা।

তার চাহনি, তার অভিব্যক্তি, তার ব্যক্তিত্ব- সবই তাকে বিমোহিত করেছে। তাই এক বাক্যে হিউ হেফনার সম্পর্কে তার মন্তব্য- হি ইজ এ রিয়েল জেন্টেলম্যান। এ যাত্রায় শাহিরার সঙ্গে ছিলেন তার দীর্ঘদিনের বান্ধবী টিনা জানোন-হায়িস।

তার সম্পর্কে শাহিরা বলেন, টিনাকে সঙ্গে নিয়ে আমি খুব উৎফুল্ল ছিলাম। তাকে ওই পার্টিতে নিয়ে যাওয়ার আগে তার একটি ছবি আয়োজকদের দিয়েছিলাম। তাতে বলে দেই- টিনা সত্যিকার অর্থেই এক হট মেয়ে। প্লেবয় ম্যানসনের স্টাফরা তার সেই ছবি অনুমোদন করে। এর পরই তাকে নিয়ে যাই ওই পার্টিতে। প্লেবয় ম্যানসনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে শাহিরা বলেন, সেখানে পুলে আমরা আনন্দ করেছি। অনুষ্ঠানে ছিল নাচ।

নৈশভোজ করেছি হিউ হেফনারের সঙ্গে। তারপর ‘দ্য রাশ’ ছবির প্রিমিয়ার দেখেছি। তবে এ ছবিটি এখনো মুক্তি পায়নি। তবে সবকিছুর মধ্যে পুল পার্টি ছিল সবচেয়ে মজাদার। তাতে মাত্র ১৫ থেকে ২০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

তবে বিভিন্ন ম্যাগাজিন বলছে, হিউ হেফনারের চোখে একবার যে সুন্দরী ধরা পড়ে তাকে এক গভীর মায়াজালে তিনি আটকে ফেলেন। তার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন খুব কম নারীই। তাহলে কি একদিন না একদিন হিউ হেফনারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাবেন শাহিরা! তাকে দেখা যাবে প্লেবয়ের প্রচ্ছদে!

আয়ারল্যান্ডের অনলাইন হেরাল্ড এক প্রতিবেদনে লিখেছে-শাহিরা তার হৃদয় খুলে দিয়েছেন। মনকে প্রশস্ত করেছেন। তিনি স্বীকার করেন একদিন তিনি বিখ্যাত প্লেবয় ম্যাগাজিনের জন্য ছবির পোজ দেবেন। তিনি পূর্ণ জীবন চান। তিনি সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চান।

তিনি বলেন- জীবন স্বল্প সময়ের জন্য। এর মধ্যে যা পারো লুফে নাও। এর মধ্য দিয়েই কি হিউ হেফনার তাকে দীর্ঘ জীবন দিয়ে যাবেন! কারণ, প্লেবয়ের প্রচ্ছদে একবার উঠে এলে তা দীর্ঘজীবন টিকে থাকে, থাকবে।

নিজের সব কর্মকাণ্ড বিশ্ববাসীকে জানাতে শাহিরা বেরি খুলেছেন একটি ওয়েবসাইট। তাতে রাখা হয়েছে বেশ কয়েকটি অপশন।

এর মধ্যে রয়েছে- হোম, এবাউট মি, গ্যালারি, নিউজ, ব্লগ, ভিডিওস, বুকিং ও কণ্টাক্ট। এতে নিজের সম্পর্কে তিনি লিখেছেন- আমার ওয়েবসাইটে সবাইকে স্বাগত। নিজের একটি ওয়েবসাইট করতে পেরে আমি আনন্দিত।

এতে আমি সবকিছু শেয়ার করতে পারবো। আমি আমার জীবন সম্পর্কে সবকিছু তোমাদের জানাতে পারছি। এটি মেয়েলি একটি সাইট। এতে রয়েছে ফটোশুট থেকে ফ্যাশন। আমি ব্লগ লেখারও পরিকল্পনা করছি। নিয়মিত ডায়েরি ফলো করে তা লিখছি। রাখছি ভিডিও ব্লগস, ফটো ও পোস্ট। যে কেউ আমাকে ফলো করতে পারো।

এতে তার দৈহিক বিবরণ রয়েছে। তার বর্ণনা মতে, তার চুলের রঙ কালো। চোখের রঙ নীল/সবুজ। উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। জুতার সাইজ ৫ (আমেরিকার মাপ)। এরপর গ্যালারিতে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন পণ্যের জন্য তিনি যেসব ফটোশুট করেছেন তারই স্লাইডশো, ভিডিও। এর বেশির ভাগেই নারীদের অন্তর্বাস পরা অবস্থায় দেখা যায় তাকে।

ডিজি ড্রিমগার্লের মডেল হিসেবে তাকে দেখা গেছে। দেখা গেছে, এফএম-১০৪ এর মডেল হিসেবে। ওপেন হাউজ গ্যালওয়ের মডেল হিসেবে। তিনি হয়েছেন ভিনটেজ ড্রিমসের মডেল।

তবে তিনি নিজের সাইটে এখনো কোনো নিউজ পোস্ট করেননি। ভিডিও সেকশনে পোস্ট করা হয়েছে ৬টি ভিডিও। এতে তার দক্ষ মডেলিং ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ক্যামেরার সামনে। কোনোটিতে দেখা গেছে, শরীরের বেশির ভাগ কাপড় খুলে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে। তাকে দেখা গেছে, বিভিন্ন ফ্যাশন শোতে।

কন্টাক্টে দিয়েছেন নিজের ই-মেইল ঠিকানা। তাতেই সরাসরি যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। তার রয়েছে টুইটার একাউন্ট। তাতেই তিনি গত ১২ সেপ্টেম্বর জানিয়েছেন, লস অ্যানজেলেস ছেড়ে আসতে হচ্ছে তাকে। এতে তার মন খুব খারাপ। রয়েছে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। তাতে যোগ করেছেন অনেক ছবি।

No comments

Powered by Blogger.