রিপাবলিকানরা কি জয়ের স্বপ্ন দেখছে? by এনামুল হক

রিপাবলিকানরা কি আগামী নির্বাচনে বিজয়ের স্বপ্ন দেখছে? তারা কি এই ইলিউশন বা বিভ্রমে ভুগছে যে প্রাইমারীতে ওবামা নির্বাচিত হওয়ায় তাদের বিজয়ের পথ-যা আগে ছিল কন্টকাকীর্ণ, তা এখন কুসুমাস্তীর্ণ হয়ে পড়েছে?
সাম্প্রতিক অতীত সম্পর্কে মিট রমনির বক্তব্য থেকে বুঝা যায় যে ওবামা ডেমোক্রেট প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায়

রিপাবলিকানরা গোপনে আনন্দোল্লাস করেছে। তাঁরা এই উপসংহারে পৌঁছেছে যে ওবামার নীতি দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। একটা প্রবচন সর্বদেশে সর্বকালেই সত্য। তা হলো যারা অতীতকে মনে রাখতে পারে না তারা বার বার একই ভুল করে বসে। কারও ভুলে যাওয়ার কথা নয় যে মাত্র চার বছর আগে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বুশের আমলে মার্কিন অর্থনীতি বিশেষ করে ব্যাংক, বীমা ও অর্থলগ্নি ব্যবস্থা অতল গহ্বরে নিক্ষিপ্ত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছিল। সেই প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থা থেকে নানা ধরনের প্রণোদনা ও প্রাণ সঞ্চারমূলক ব্যবস্থার দ্বারা অর্থনীতিকে টেনে তুলে দাঁড় করিয়েছেন বারাক ওবামা।
কিন্তু তারপরও এ থেকে নিশ্চিতভাবে বলার উপায় নেই যে, ওবামার জয় অবধারিত। সাম্প্রতিক জনমত জরিপগুলো থেকে আভাস পাওয়া যায় যে নবেম্বরে ওবামা-বমনির লড়াইটা বেশ হাড্ডাহাড্ডি হবে। হয়ত সেটা শতাব্দীর সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। দু’জনের জনপ্রিয়তা প্রায় সমানে সমানে পাল্লা দিয়ে চলেছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটার এখনও পর্যন্ত ঠিক করতে পারেননি তারা কার দিকে ঝুঁকবেন। কিছু কিছু সমীক্ষা থেকে মনে হয় সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় থাকা ভোটারদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ক্ষমতাসীন প্রার্থীর পক্ষে যাবে না। তারা তাঁর চ্যালেঞ্জারকেই ভোট দেবে। আবার কিছু কিছু নির্দেশক থেকে বলা যায় এবারের ব্যাপারটা একেবারেই ভিন্নরকম হবে এবং প্রকৃতপক্ষে তা ওবামার অনুকূলে যাবে। একটা জরিপে দেখা গেছে ওবামা রমনির তুলনায় বেশি পছন্দ করার মতো। এই নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যটিতে ওবামার পক্ষে ৬০ শতাংশ ও রমনির পক্ষে ৩১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
মহিলা ভোটারদের মধ্যে ওবামার জনপ্রিয়তা রমনির চেয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেশি। যেমন একটি জরিপে দেখা যায় প্রতি ১০ জন মহিলার ৬ জন ওবামাকে বেশি পছন্দ করে। সংখ্যালঘু ভোটাররা বহুলাংশে ওবামার পক্ষে। ২০০৮ সালে ওবামা হিসপানিকদের ৬৭ শতাংশ ভোট টেনিছিলেন। পিউ রিসার্চের সমীক্ষায় দেখা যায় আফ্রো-অমেরিকানদের ৯২ শতাংশ ওবামার দিকে আর মাত্র ৫ শতাংশ রমনির দিকে। কিন্তু এরপরও বেশ কিছু বিষয় আছে যা রমনির অনুকূলে যায়। তার ব্যবসায়িক দক্ষতাকে লোকে দারুণ পছন্দ করে। এক সমীক্ষা অনুযায়ী ৪৬শতাংশ ভোটার মনে করে যে রমনি বেশ কার্যকর ও সার্থকভাবে সরকার পরিচালনা করতে পারবেন। আরেক জরিপে দেখা গেছে ৬১শতাংশ ভোটার মনে করেন অর্থনীতি পরিচালনায় রমনি বেশ দক্ষতার পরিচয় দেবেন। ওবামার পক্ষে এমন ভোট পড়েছে ৫২ শতাংশের। রমনির অনুকূলে আরেকটি বিষয়ও অত্যন্ত প্রবল। তা হলো ৬৩ শতাংশ ভোটার বিশ্বাস করে দেশ ভুল পথে চলেছে। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের জন্য ব্যাপারটা বড়ই অশুভ।
দোদুল্যমান ভোটারের রাজ্যগুলোতে পরিচালিত জরিপ নবেম্বরের নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য হলো ওহাইও, ফ্লোরিডা ও পেনসিলভানিয়া। এ মুহূর্তে ওহাইওতে ওবামা-বমনির জনপ্রিয়তা সমান। ফ্লোরিডায় ওবামার পক্ষে ৪৭ শতাংশ ও রমনির ৪১ শতাংশ। আর পেনসিলভানিয়ায় ওবামা রমনির তুলনায় ৮ পয়েন্ট এগিয়ে। ১৯৬০ সাল থেকে এ পর্যন্ত কোন প্রার্থী এই তিনটি রাজ্যের অন্তত ২টিতে জয়লাভ না করে হোয়াইট হাউসে যেতে পারেননি। ভার্জিনিয়ায় এবার তুমুল লড়াই হবে। ইতোমধ্যে একটি সমীক্ষায় ওবামার পক্ষে ৫১ শতাংশ ভোট পড়েছে। আবার অন্য এক সমীক্ষায় রমনির পক্ষে ১ শতাংশ ভোট বেশি পড়েছে। নির্বাচনী প্রচার যত এগোবে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যবধান ততই সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে। তবে এই মুহূর্তে বুঝা যাচ্ছে ২০১২ সালের নির্বাচনে বিপুল বিজয় কারোরই হবে না। ম

No comments

Powered by Blogger.