পদ্মা সেতু ॥ দুই প্রকল্পে এ পর্যন্ত ব্যয় দেড় হাজার কোটি টাকা- সংসদে প্রশ্নোত্তরে যোগাযোগমন্ত্রী

বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রস্তুতি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত দুটি প্রকল্পের বিপরীতে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এর বাইরে চলতি অর্থ বছরে আরও আট শতাধিক কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এ ছাড়া কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম টানেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ


যোগানসাপেক্ষে যথাসময়ে এ টানেলের নির্মাণ কাজ শুরু করে পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে ডেপুটি স্পীকার কর্নেল (অব) শওকত আলীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হলে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদকে এসব কথা জানান।
সরকারী দলের কামাল আহমদ মজুমদারের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে রাজধানীতে প্রায় ৮৬ হাজার ফিটনেসবিহীন গাড়ি অবৈধভাবে চলাচল করছে। ২০ বছরের অধিক পুরানো বাস এবং ২৫ বছরের অধিক পুরানো পণ্যবাহী যানবাহন ঢাকা মহানগরীতে চলাচল না করার জন্য সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এগুলোর রুট পারমিট নবায়নও বন্ধ রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়ে ৯১৮টি যানবাহন ডাম্পিং স্টেশনে প্রেরণ করা হয়েছে, ১৬টি গাড়ির পারমিটও জব্দ করা হয়েছে।
চয়ন ইসলামের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণ পর্বের প্রস্তুতি অর্থাৎ ভূমি অধিগ্রহণ ও ডিজাইন প্রণয়ন পর্যায় থেকে গত জুন পর্যন্ত সেতু সংশ্লিষ্ট দুটি প্রকল্পের বিপরীতে এক হাজার ৪২৩ কোটি ২৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তা ছাড়া চলমান কাজের জন্য চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ রয়েছে ৮১১ কোটি টাকা।
সাধনা হালদারের লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুর প্লিয়ার প্রোটেকশনের জন্য নির্মিত ফ্যান্ডার পোস্ট নদীতে চলাচলকারী বিভিন্ন নৌযানের ধাক্কায় বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে তা মেরামতের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সেতুর মূল প্লিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এ অবস্থায় সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই।
বেনজীর আহমদের প্রশ্নের জবাবে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংসদকে জানান, দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত ১৯২ দশমিক ৩০ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। গত মাস পর্যন্ত প্রায় দু’বছরে কাজের বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় দুই হাজার ৩৮১ কোটি ১৭ লাখ চার হাজার টাকা। এ পর্যন্ত ৬৪৭ কোটি ৪০ লাখ তিন হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
একই বিষয়ে নুরুল ইসলাম বিএসসির প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চার লেনে উন্নীত করার কাজ আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যে যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে বর্তমান সরকারের সময়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করতে পারবেন বলে আশা করা যায়।
তিনি আরও জানান, দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ককে চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। গত বছরের ১ জানুয়ারি ও ২ ফেব্রুয়ারি মাওনা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কাজের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে শতকরা ১৩ ভাগ। একই বিষয়ে ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। ডিপিপি অনুসারে সড়ক নির্মাণ কাজ আগামী বছরের ৩০ জুন শেষ করার সময় নির্ধারিত আছে।

No comments

Powered by Blogger.