সিরিয়ায় সংঘাত বন্ধে ইরানে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

সিরিয়া সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিয়েছে ইরান। এ লক্ষ্যে রাজধানী তেহরানে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। গতকাল বৃহস্পতিবার এই সম্মেলন হওয়ার কথা। তবে এতে কোন কোন দেশ যোগ দিচ্ছে, তা সম্মেলন শুরুর আগে স্পষ্ট করা হয়নি।
সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে গত দুই দিনের লড়াইয়ে বেসামরিক নাগরিকসহ অন্তত ১৮৯ জন নিহত হয়েছে। দেশটির দ্বিতীয় শহর আলেপ্পোর বিভিন্ন এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। বিদ্রোহীরা গতকাল বৃহস্পতিবার সালাহেদ্দিন এলাকার কিছু অংশ পুনরায় দখলে নেওয়ার দাবি করেছে। গত বুধবার ওই এলাকা দখল করে নেয় সেনাবাহিনী।
পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, সিরিয়ায় সহিংসতা বন্ধে ইরান মধ্যস্থতা করতে পারে। কারণ, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে ইরান সরকারের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী আকবর সালেহি ওই সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে বলেন, তাঁর দেশ সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর, মানবিক সহায়তা পাঠানো ও দেশটির বিভিন্ন গোষ্ঠীকে নিয়ে জাতীয় সংলাপের আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, তেহরান মূলত কফি আনানের শান্তি পরিকল্পনার কিছু অংশ নিয়েই এগিয়ে যেতে চাইছে। গত বুধবার সালেহি জানান, তেহরানে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার ১২ থেকে ১৩টি দেশ অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, যারা সিরিয়ার ‘আসল পরিস্থিতি’ বুঝতে পারছে, শুধু তাদেরই ‘পরামর্শমূলক’ আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সামরিক অভিযান কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না। ইরান এমন উদ্যোগ নিতে চায় যাতে সব পক্ষের স্বার্থ ঠিক থাকে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস দাবি করেছে, গতকাল দুই পক্ষের লড়াইয়ে ২২ জন নিহত হয়েছে। গত বুধবার নিহত হয় ১৬৭ জন। গত বুধবার নিহতদের মধ্যে ৯৫ জনই বেসামরিক নাগরিক। এ ছাড়া রয়েছে ৫৪ জন সেনা ও ১৮ জন বিদ্রোহী।
বিদ্রোহীদের সামরিক শাখা ফ্রি সিরিয়ান আর্মির (এফএসএ) কমান্ডার ওয়াসেল আইয়ুব গতকাল দাবি করেন, তাঁরা সালাহেদ্দিনের কিছু অংশ পুনর্দখল করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেড় ঘণ্টার লড়াইয়ে সালাহেদ্দিনের পাঁচটি প্রধান সড়কের মধ্যে তিনটিই আমাদের দখলে এসেছে। আমরা ৭০০ যোদ্ধা নিয়ে অভিযান চালিয়ে এই সফলতা পেয়েছি।’ এ ব্যাপারে সরকারি বাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিদ্রোহীদের অন্যতম ঘাঁটি বলে পরিচিত সালাহেদ্দিন গত বুধবার দখল করে নেয় সেনাবাহিনী।
আলেপ্পোর হানানো, সাইফ আল দৌলা, শাহর আল শাকুরসহ বিভিন্ন এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, এসব এলাকায় রাতভর গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। স্থানীয় সমন্বয়ক কমিটিও (এলসিসি) বিভিন্ন স্থানে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক লড়াইয়ের কথা জানায়। এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.