মন্ত্রণালয়কে উপেক্ষা, মিল্ক ভিটায় চাকরির তোড়জোড়! by আবুল হাসনাত

সরকারি ছুটির দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেডে (মিল্ক ভিটা) লোক নিয়োগের কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মিল্ক ভিটার ব্যবস্থাপনা কমিটির সহসভাপতি শফিকুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন সদস্যকে অফিসে দেখা গেছে। ছিল চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের একটি অংশও।


পেছনের তারিখে প্রতিষ্ঠানটিতে লোক নিয়োগ দিচ্ছে ব্যবস্থাপনা কমিটি—এমন অভিযোগ পেয়ে মিল্ক ভিটার নতুন মহাব্যবস্থাপক ও সমবায় অধিদপ্তরের যুগ্ম নিবন্ধক নজরুল ইসলাম খোঁজখবর নিতে মাঠে নামেন। তবে ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান হাসিব খান লোক নিয়োগের চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মিল্ক ভিটার স্বার্থে কোনো ধরনের শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োগ না করতে গত ৪ জুলাই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ২ আগস্ট চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বহালের জন্য একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে মিল্ক ভিটা কর্তৃপক্ষ। কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপনে দাবি করা হয়, পুনর্বহালের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের আবেদন এবং সমবায় অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক গত ১৮ ও ১৯ জুলাই মিল্ক ভিটার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ কমিটি গঠন করা হয়।
তবে ব্যবস্থাপনা কমিটির ওই সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কিন্তু কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়নি।
সমবায় অধিদপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হলে এ ধরনের পর্যালোচনা কমিটি করা যেতে পারে। কিন্তু সভায় যেহেতু সিদ্ধান্ত হয়নি, তাই এই কমিটির কোনো কার্যকারিতা নেই। তিনি বলেন, সভার সিদ্ধান্ত ছাড়া এ কমিটি করায় তা বাতিল করাও হতে পারে।
জানতে চাইলে মিল্ক ভিটার ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান হাসিব খান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা নতুন করে চাকরি দেওয়ার জন্য তো কমিটি করছি না। তাঁরা চাকরিতে কী অবস্থায় ছিলেন, কেন চাকরি গেল—এসব বিষয় যাচাই-বাছাই করে কমিটি সুপারিশ করবে।’
এদিকে নথিপত্রে দেখা যায়, চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে কয়েকজন শ্রমিক-কর্মচারীর করা আবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিএনপি জোট সরকারের সময়ে তাঁদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের চাকরিচ্যুত করা হয় গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়।
একাধিক সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে এই চাকরি দেওয়া নিয়ে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া একটি বিশেষ এলাকার লোকজনকে নিয়োগ দেওয়া এবং জেলা কোটা না মানার অভিযোগ আগে থেকেই ছিল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।

No comments

Powered by Blogger.