ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন-৫৫ টাকার হলুদ গুঁড়া করলে ৩৫০ টাকা হয় কিভাবে?

নিত্যপ্রয়োজনীয় কয়েকটি পণ্যে ব্যবসায়ীরা ৫০ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত লাভ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমান। এত বেশি মুনাফা করার প্রবণতাকে বাংলাদেশের মানুষের রক্ত চোষার সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, 'এটা অগ্রহণযোগ্য। এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।'


গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) মিলনায়তনে দ্রব্যমূূল্য নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ী ও ঢাকা চেম্বারের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীরা সরকারি চিনির দাম ৬০ টাকা নির্ধারণের ব্যাপক সমালোচনা করেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেয় উল্লেখ করে তাঁরা তাদের দমন করার আহ্বান জানান।
ড. মজিবুর রহমান বলেন, প্রতি কেজি আদা আমদানির খরচ ৩৭ টাকা। বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা দরে। খেজুর আমদানি করা হয়েছে ৫৮ টাকা কেজি দরে। বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম পড়ে ১৪ থেকে ১৫ টাকা কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়।
মৌলভীবাজারের এক ব্যবসায়ী ডালের দাম সামান্য বেড়েছে উল্লেখ করলে তিনি বলেন, এক কেজি মসুর ডালে ৪৩ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। তবে তেল ও চিনিতে এত মুনাফা হয় না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মজিবুর রহমান বলেন, 'আপনারা মুনাফা করবেন। কিন্তু দয়া করে বেশি মুনাফা করবেন না। এটা হারাম, হারাম, হারাম।'
অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর কৃষিপণ্য আমদানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার বাবুল বলেন, হলুদের দাম কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা। অথচ সেই হলুদ গুঁড়া করে ৩০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি করছে কয়েকটি কম্পানি। সরকার সেদিকে নজর দিচ্ছে না।
খন্দকার বাবুল দেশে রসুন উৎপাদন পর্যাপ্ত হয়েছে উল্লেখ করে কোরবানী ঈদ পর্যন্ত চীন থেকে রসুন আমদানি বন্ধের দাবি জানান। তবে ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নিয়ে রসুনের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে উল্লেখ করে ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, 'রসুনের আমদানি এই মুহূর্তে বন্ধ করা যাচ্ছে না। কারণ এখন যদি আমদানি বন্ধ করে দেই তাহলে ব্যবসায়ীরা এই মাসটাকে বেছে নিয়ে ইচ্ছামতো মজুদ করবে। সারা বছরের লাভ এক মাসেই করে ফেলার চেষ্টায় রত হবে।'
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি এ কে আজাদ, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আসিফ ইব্রাহিমসহ অনেকে বক্তব্য দেন। এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান।
আবদুল মোনেম লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন মোনেম বলেন, 'কোনো পণ্যের আমদানি ব্যয় যদি ৭০ টাকা হয়, আর সেটা যদি ৮০ টাকায় বিক্রি হয় তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু ওই পণ্য যদি ১৫০ টাকায় বিক্রি হয় তাহলে সেখানে অবশ্যই বিচ্যুতি আছে।'

No comments

Powered by Blogger.