দশ ট্রাক অস্ত্র আটক মামলা-ডিআইজি ফররুখ হাজির হননি

দশ ট্রাক অস্ত্র আটক মামলার সাক্ষী পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাবেক উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ফররুখ আহমেদ চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার আদালতে হাজির হননি। তাঁর এই অনুপস্থিতিকে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ‘অস্বাভাবিক’ বলে অভিহিত করেছেন।


গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক এস এম মজিবুর রহমানের আদালতে সাক্ষী ফররুখ আহমেদ চৌধুরীকে আসামি লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবীদের জেরা করার কথা ছিল। কিন্তু ফররুখ আহমেদ না আসায় আদালত ২৯ জুলাই এই মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন। মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) কামাল উদ্দিন আহাম্মদ আদালতে বলেন, ‘ডিআইজি ফররুখ আহমেদের বাসা ঢাকার ভাষানটেক থানা এলাকায়। স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাঁর বাসায় গিয়ে তাঁকে পাননি। সিআইডির মাধ্যমেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। আমি মুঠোফোনে চেষ্টা করেছি। সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে। আইনগত সব প্রক্রিয়ায় চেষ্টা করেও ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাঁর এই অনুপস্থিতি অস্বাভাবিক ঘটনা।’
বেলা একটায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় সরকারি কৌঁসুলি সাক্ষী ফররুখ আহমেদের অনুপস্থিতির বিষয়টি লিখিতভাবে আদালতকে জানান। এতে বলা হয়, ‘৩ জুলাই নির্ধারিত দিনে আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষী তাঁর জবানবন্দি দেন। এরপর আসামিপক্ষ ৪ জুলাই সারা দিন অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সাক্ষীকে জেরা করে। একইভাবে ৫ জুলাই আসামি লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী মাহবুব আহমেদ ও আরেক আইনজীবী আহমেদ সোবহান তরফদার দীর্ঘক্ষণ সাক্ষীকে জেরা করেন এবং তা অব্যাহত থাকে।’ আসামি বাবরের পক্ষে জেরা ‘অহেতুক দীর্ঘায়িত’ করা হয় উল্লেখ করে ওই লিখিত আবেদনে বলা হয়, ‘প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সাক্ষীর সঙ্গে যোগাযোগের অব্যাহত চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। এতে প্রতীয়মান হয়, সাক্ষী কোনো অস্বাভাবিক কারণে আদালতে উপস্থিত থাকতে ব্যর্থ হয়েছেন।’ ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে সিইউএফএলের জেটিঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনায় পাঁচ সদস্যের সরকারি তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলেন ফররুখ আহমেদ। ৩ জুলাই তিনি আদালতে সাক্ষ্য দেন।
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে ফররুখ আহমেদ বলেছিলেন, ‘স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে স্বরাষ্ট্রসচিবের অনুমোদন নিয়ে এনএসআইকে বাদ দিয়ে মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।’
গতকাল মঙ্গলবার আদালতে পিপি কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ‘সাক্ষ্যে উনি (ফররুখ আহমেদ) কিছু কথা বলেছেন। উনি বলেছেন, ১৯৯৬ সালে কক্সবাজারে অস্ত্র আটকের ঘটনায় তৎকালীন জিওসির বাধার কারণে মামলা হয়নি। ২০০৪ সালে অস্ত্র আটকের বিষয়ে তিনি চট্টগ্রামের জিওসি মইন উ আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এই মামলার আসামিরাও হাই প্রোফাইল। সব মিলিয়ে সাক্ষীর অনুপস্থিতি অত্যন্ত অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে।’

No comments

Powered by Blogger.