বুয়েট বন্ধ ঘোষণা

শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতির হুমকির মুখে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বুয়েটের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১১ জুলাই থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত গ্রীষ্মকালীন অবকাশ, রমজান, শবেকদর এবং ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সব শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীর কার্যক্রম বন্ধ


ঘোষণা করা হলো। প্রায় দেড় মাস বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করায় আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, পদ রক্ষা করতে কর্তৃপক্ষ এই কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।
এর আগে দুপুরে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল বুয়েট শিক্ষক সমিতি।
বুয়েট বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত শোনার পর আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, বুয়েটে কোনো গ্রীষ্মকালীন ছুটি ছিল না, এখনো নেই। বুয়েটের একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রমজান ও ঈদুল ফিতরের ছুটি ১১ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত হওয়ার কথা। এরপর ২৫ আগস্ট থেকে দুই সপ্তাহ পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক ছুটি থাকার কথা রয়েছে। একাডেমিক ক্যালেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে টানা প্রায় দেড় মাস বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, এটা কর্তৃপক্ষের কূটকৌশল। নিজেদের পদ রক্ষার জন্য কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি জানান, বুধবার সাধারণ সভায় শিক্ষক সমিতি পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে।
ড. আশরাফুল আরো বলেন, 'একাডেমিক ক্যালেন্ডারে বদল আনতে গেলে একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করতে হয়। ভিসি এককভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বৈরাচারী আচরণের চরম প্রকাশ ঘটিয়েছেন।'
অন্যদিকে উপাচার্য এস এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'শিক্ষকদের কর্মসূচিতে আজ (গতকাল) একদল শিক্ষার্থী অংশ নেয়। আরেক দল শিক্ষার্থী এর বিরোধিতা করে। শিক্ষকদের কর্মসূচিতে ছাত্রদের অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।'
উল্লেখ্য, বুয়েটের বর্তমান উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘন করে ভূতাপেক্ষ নিয়োগ দেওয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ বুয়েট শাখার সভাপতি ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার কামাল উদ্দীনকে রেজিস্ট্রার করার উদ্যোগ, শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশাসনের বিভিন্ন পদে দলীয়করণসহ ১৬টি অভিযোগ এনে গত ৭ এপ্রিল থেকে টানা ২৮ দিন কর্মবিরতি পালন করে শিক্ষক সমিতি। সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মবিরতি কর্মসূচি স্থগিত করেন তাঁরা। এরপর দুই মাস পার হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.