আজ স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলন

আজ বুধবার আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানো এবং নতুন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব তুলে দিতে শুরু হচ্ছে সিরিজ সম্মেলন। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দীর্ঘ প্রায় নয় বছর পর মেয়াদোত্তীর্ণ সব সহযোগী ও


ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে শাসক দলটি। স্বেচ্ছাসেবক লীগের পর এ মাসেই যুবলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে বাকি সহযোগী সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলন শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। সংগঠনের সভাপতি এ্যাডভোকেট মোল্লা আবু কাওছারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথের পরিচালনায় উ™ে^াধনী পর্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও বক্তব্য রাখবেন।
সূত্র জানায়, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আজকের সম্মেলনে গঠনতন্ত্রে কিছুটা সংশোধনী আনা হবে এবং নতুন কমিটির আকার বাড়ানো হবে। প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাংগঠনিক কাঠামোয় ব্যাপক পরিবর্তন আনতে প্রথমবারের মতো গঠনতন্ত্রে সংশোধনী এনে কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় কমিটির কলেবর বাড়িয়ে ১০১ সদস্যের স্থলে ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারে নতুন কমিটিতে যুক্ত হচ্ছে বিজ্ঞান, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদকের পদ। এছাড়া যোগাযোগ ও শিশু সম্পাদকের পাশাপাশি বেশকিছু সহ-সভাপতি ও সহ-সম্পাদকের পদও বাড়ছে। কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয কার্যালয় এখন নেতাকর্মীদের পদভারে মুখরিত। দলীয় পদ পেতে আগ্রহী নেতাদের দৌড়ঝাঁপ বেড়ে গেছে। মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের গুরুত্ব বেড়ে গেছে।
সূত্র জানায়, কাউন্সিলে শেখ হাসিনার ওপর নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। তিনিই স্বেচ্ছাসেবক লীগের পরবর্তী নেতা নির্বাচন করবেন। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী সম্ভাব্য নেতাদের সম্পর্কে নানা মাধ্যমে খোঁজ নিয়েছেন। আজই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। শীর্ষ দুই পদের একটি সংগঠনের ভেতর থেকে দেয়া হলে অপরটি বাইরে থেকে দেয়া হতে পারে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি ও জাতীয় পরিষদসহ সারাদেশের ৭৩টি সাংগঠনিক জেলা ও ৫৭৮টি সাংগঠনিক উপজেলা থেকে মোট ২ হাজার ৪৬৫ কাউন্সিলরকে কাউন্সিলে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কাউন্সিল শেষে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। এটি স্বেচ্ছাসেবক লীগের দ্বিতীয় সম্মেলন।
১৯৯৪ সালের ২৭ জুলাই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠা ঘটানোর পর টানা ৯ বছর আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে এটি পরিচালিত হয়েছে। ২০০৩ সালের ২৭ জুলাই সংগঠনের প্রথম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফম বাহাউদ্দিন নাছিম কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হলে সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট মোল্লা আবু কাওছার ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি তিন বছর পর জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও এবার প্রায় নয় বছর পর এ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। এ কারণে সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে বিশালাকৃতির মঞ্চ ও প্যান্ডেল নির্মাণের পাশাপাশি গোটা সম্মেলনস্থল ও এর আশপাশের এলাকা রংবেরঙের বেলুন, ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
এদিকে সংগঠনের বর্তমান নেতাদের পাশাপাশি ছাত্রলীগের বেশকিছু সাবেক নেতাও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ দুই পদ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে আসতে নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্মেলনে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ এবার সভাপতি পদে শক্ত প্রার্থী। মোল্লা আবু কাওছার একই পদে থাকতে আগ্রহী। আর সাধারণ সম্পাদক পদে যাঁদের নাম আলোচনায় রয়েছে তাঁরা হচ্ছেন সংগঠনের বর্তমান সহ-সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, মফিজুর রহমান, সাঈদুল করিম মিন্টু, মতিউর রহমান মতি, গিয়াসউদ্দিন পলাশ, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবালুর রহিম এমপি, নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম কোতোয়ালি ও সাবেক দফতর সম্পাদক কামরুল হাসান খোকন।

No comments

Powered by Blogger.