সিলেট এমসি কলেজ অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা, গ্রেফতার ১২-ছাত্র সংঘর্ষের জের

সিলেট অফিস ॥ সিলেট এমসি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে একাডেমিক কাউন্সিল ও শিক্ষক পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ছাত্রলীগ-শিবিরের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেয়ার পর কর্তৃপক্ষ কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে।


এ ঘটনায় কলেজের উপাধ্যক্ষ হেলাল আহমদ ভূইয়াকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ধীরেশ চন্দ্র সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তিনি আরও জানান, ছাত্রাবাসের মোট ৫টি ব্লকের প্রায় সব কক্ষ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তদন্তের পর দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ছাত্রলীগ ও শিবির সংঘর্ষের ঘটনায় সিলেট এমসি কলেজের শিবির সভাপতি এসএম মনোয়ারসহ ৮০ জনের বিরুদ্ধে সোমবার সকালে সিলেট শাহ পরান থানায় মামলা করেছে ছাত্রলীগ। শাহ পরান থানার ওসি এনামুল মনোয়ার জানান, মামলায় শিবির সভাপতি এসএম মনোয়ারসহ ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও বাকিরা অজ্ঞাত। এ ঘটনায় ১২ জনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে তবে গ্রেফতারকৃতদের নাম তাৎক্ষণিক প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে, রবিবার রাত ৮টায় কলেজের আবাসিক ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ-শিবির ভয়াবহ সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ছাত্রাবাস। কলেজ মাঠে ফুটবল খেলায় কথা কাটাকাটির জের ধরে হলের ভেতরে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে আহত করে শিবির। খবর পেয়ে ছাত্রলীগ ওই কর্মীকে উদ্ধার করতে গেলে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে। একপর্যায়ে শিবিরের নেতাকর্মীরা পালিয়ে গেলে আবাসিক ছাত্রাবাসের ৩টি ব্লকেই আগুন লাগিয়ে দেয় ছাত্রলীগ। সংঘর্ষকালে কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যায় বলে এলাকাবাসী জানান। আহতদের মধ্যে মহানগর ছাত্রলীগ নেতাসহ কয়েকজনকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের পর নগরজুড়ে উভয় ছাত্র সংগঠনের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
রবিবার সন্ধ্যার ঠিক আগে কলেজ মাঠে ফুটবল খেলা নিয়ে উভয় সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে শিবিরকর্মীরা উজ্জ্বল নামের ছাত্রলীগের এক কর্মীকে ধরে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে কুপিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ হয়।
সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির নগরীতে মিছিল-সমাবেশ করে। তারা ঘটনার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।

No comments

Powered by Blogger.