মিসরে সরকার-আদালত মুখোমুখি

মিসরের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি সম্প্রতি বিলুপ্ত ঘোষিত পার্লামেন্ট পুনরায় সচল করার নির্দেশ দিয়েছেন। একে ক্ষমতাসীন সামরিক প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই মনে করা হচ্ছে। দেশটির সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত প্রেসিডেন্টের এ নির্দেশ নিয়ে শিগগিরই আলোচনায় বসবেন।


এ আদালতই মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক সংগঠন ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ক্ষমতাসীন সর্বোচ্চ সামরিক পরিষদও ইতিমধ্যেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।
এদিকে মুরসি পার্লামেন্ট সচল করার নির্দেশ দেওয়ার পরের দিনই পার্লামেন্ট অধিবেশন আহ্বান করেছেন স্পিকার।
গত রবিবার প্রেসিডেন্টের ঘোষণার পর পরই পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে বৈঠকে বসেন সামরিক এবং বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার তাদের ফের বৈঠকে বসার কথা ছিল। পরে গতকাল এক বিবৃতিতে সাংবিধানিক আদালত জানান, সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালতের সব রায় ও সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কোনো নির্দেশ বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। সরকারের সব প্রতিষ্ঠানই এ আদালতের নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য।
সামরিক পরিষদ সাংবিধানিক আদালতের একটি রায়ের সূত্র ধরে গত মাসে সাংবিধানিক আদালত ভেঙে দেয়। এক ফরমানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাও কমিয়ে দেয় তারা। গত বছর গণঅভ্যুত্থানের মুখে হুসনি মুবারকের পদত্যাগের পর মিসরের ক্ষমতা গ্রহণ করেন ফিল্ড মার্শাল তানতাউয়ির নেতৃত্বাধীন সামরিক পরিষদ। শুরুর দিকে সাধারণ মানুষ তাদের স্বাগত জানালেও পরে ক্রমেই ক্ষমতা দখলের প্রবণতার কারণে জনপ্রিয়তা কমতে থাকে তাদের।
মুরসি রবিবার বলেন, নতুন নির্বাচনের আগ পর্যন্ত পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ পিপলস অ্যাসেমব্লির অধিবেশন চলবে। যদিও সামরিক পুলিশ পুরো ভবনটি সিল করে রেখেছে। বিবিসি জানায়, এমপিদের প্রথমে পুলিশ ও সেনারক্ষীদের প্রাচীর অতিক্রম করে পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে ঢুকতে হবে। অথবা অন্য কোথাও অধিবেশনের আয়োজন করতে হবে তাদের। গত রবিবারের ফরমানে মুরসি বলেন, সংবিধান অনুমোদনের পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে।
তবে এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এ ধরনের ফরমান জারির কোনো এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের আছে কি না। এদিকে সরকারি বার্তা সংস্থা মেনার খবরে বলা হয়, স্পিকার সাদ আল-কাতাতনি 'মঙ্গলবার দুপুর ২টায় পার্লামেন্টের অধিবেশন আহ্বান করেছেন।'
মুরসির সঙ্গে বৈঠক করবেন ওবামা
মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রার্থী মুরসির বিষয়ে শুরু থেকেই ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তারই ধারাবাহিকতায় মুরসির সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আগামী সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ সম্মেলনের ফাঁকে এ বৈঠক হবে। নির্বাচিত হওয়ার পর পরই টেলিফোনে মুরসিকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন ওবামা। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.