জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-সেশনজট নিরসনের দাবিতে অবরোধ-সমাবেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট নিরসনসহ সাত দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা গতকাল সোমবার অবরোধ, অবস্থান ধর্মঘট ও সমাবেশ করেন। এ সময় তাঁরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন। সেশনজট নিরসন ছাত্র পরিষদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সকালে ওই কর্মসূচি পালিত হয়।


পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গতকাল দুপুরে টায়ার ও ব্যানার পুড়িয়ে অবরোধ সৃষ্টি করা হলে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিলে বেলা দেড়টায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। শিক্ষার্থীদের ভাঙচুর চলাকালে আহত হন ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র রিয়াজ আকন্দ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সেশনজটের কারণে চার বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) কোর্স সম্পন্ন করতে শিক্ষার্থীদের সাত বছর সময় লাগছে। এই সমস্যার সমাধানের দাবিতে সেশনজট নিরসন ছাত্র পরিষদের ব্যানারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের সমন্বয়ে গত ২১ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন এবং গত ৫ জুন শিক্ষামন্ত্রী বরাবর সঞ্চারকলিপি দেওয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসের ভিত্তিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে বেঁধে দেওয়া এক মাস সময়ের মধ্যে সেশনজট নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই গতকাল ওই সব কর্মসূচি পালন করা হয়।
সেশনজট নিরসন ছাত্র পরিষদের সভাপতি খন্দকার রায়হান বলেন, স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য অনুপস্থিত ছিলেন। উপাচার্যের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সঞ্চারকলিপি গ্রহণ করে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকের আশ্বাস দেন। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো: সেশনজটের স্থায়ী সমাধান, একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ ও সঠিক বাস্তবায়ন, প্রতিটি শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই সম্পূর্ণ সিলেবাস প্রদান, লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ ও তিন মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ, বিশ্ববিদ্যালয় বিকেন্দ্রীকরণের সঠিক বাস্তবায়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশ্নপত্র নিজস্ব শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রণয়ন এবং কমপক্ষে ‘বি’ গ্রেড পর্যন্ত মান-উন্নয়ন পরীক্ষার সুযোগ চালুকরণ।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ হোসেন বলেন, সেশনজট নিরসন ছাত্র পরিষদের সাত দফা দাবিসংবলিত সঞ্চারকলিপি গৃহীত হয়েছে। এ ব্যাপারে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জয়দেবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, উপাচার্যের সঙ্গে মঙ্গলবার আলোচনার সুযোগ করে দেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে।

No comments

Powered by Blogger.