গ্রামীণফোনে আপাতত আর ছাঁটাই হবে না

গ্রামীণফোন আপাতত আর ছাঁটাই করবে না। তবে ভবিষ্যতে কর্তৃপক্ষ চাইলে ছাঁটাই হবে। গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ গতকাল সোমবার আন্দোলনকারীদের ই-মেইলে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান তাহমিদ আজিজুল হক এবং এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এস এম সাইদুজ্জামান।


ই-মেইলে অন্যান্য দাবি প্রসঙ্গে জানানো হয়, চাকরিচ্যুত কর্মীদের অবসর পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। এটি এক বছরেই দেওয়া হবে। ছাঁটাইয়ের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির বিষয়ে বলা হয়, এটা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। এখানে কোনো ব্যক্তি জড়িত নন। যৌক্তিক হারে ইনক্রিমেন্টের দাবির বিষয়ে বলা হয়, কয়েক বছর ধরে মূল্যস্ফীতির তুলনায় ইনক্রিমেন্ট বেশি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া লভ্যাংশের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। এটি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া যাবে না। কর্মী অসন্তোষের কারণে রোববার গ্রামীণফোনের প্রধান কার্যালয় বন্ধ থাকলেও গতকাল পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। কার্যালয়ের বাইরে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।
এদিকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা কাজী মনিরুল কবির গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ছাঁটাই হওয়া ৪৮ কর্মীর সঙ্গে আলোচনা চলছে। এটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে তাঁদের এন্ট্রি পাস (কার্যালয়ে প্রবেশের অনুমতি) সক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গ্রামীণফোনের নিয়ম অনুযায়ী কর্মী ছাঁটাই করা হয়। একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শেষ করা হয়। যাঁরা পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হতে পারেন না, নিয়ম অনুযায়ী তাঁরা চাকরিচ্যুত হন।
সম্প্রতি সংস্কার পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ডিস্ট্রিবিউশন অ্যান্ড রিটেইল সেলস বিভাগের ৪৮ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়। গত রোববার সকালে ওই ৪৮ কর্মচারী কার্যালয়ে প্রবেশ করতে না পেরে মূল ফটকে অবস্থান নেন এবং অন্য কর্মীদের কার্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেন। একই সঙ্গে গ্রামীণফোনের এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের নেতা-কর্মীরা ছয় দফা দাবিতে গ্রামীণফোন ভবন অবরোধ করে রাখেন।
গ্রামীণফোন থেকে আরও কর্মী ছাঁটাই করা হবে কি না, জানতে চাইলে মনিরুল সাংবাদিকদের বলেন, গ্রামীণফোন কোনো টার্গেট নিয়ে ছাঁটাই করে না। গত বছরের জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ৭১ জন চলে গেছেন। আরও ১৬৬ জন এখন বিদায়ের প্রক্রিয়ার (এক্সিট প্রসেস) মধ্যে রয়েছেন।
মাতৃত্বকালীন ছুটির মধ্যে নারী কর্মীদের ছাঁটাই প্রসঙ্গে মনিরুল কবির বলেন, এ ধরনের তিনটি ঘটনা রয়েছে। ওই তিন সন্তানসম্ভবা নারীর মধ্যে দুজন পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হন, একজন উত্তীর্ণ হন। তবে ওই তিনজনকে যথাযথ নিয়ম মেনে পরীক্ষার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় নারীদের কেন পরীক্ষা দিতে আসতে বলা হবে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি তিনি।
গ্রামীণফোনের রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের প্রধান মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সঙ্গে গতকাল অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে প্রতিটি বিষয় নিয়ে খোলাখুলি কথা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।’

No comments

Powered by Blogger.