প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি যাওয়া হলো না by শাহ আহমদ রেজা

ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের সম্পর্কে কোনো এদিক-সেদিক হয়েছে কি-না তা নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। এই কৌতূহলের কারণ, অনেক ঢাকঢোল পেটানো হলেও প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর হঠাত্ স্থগিত হয়ে গেছে। ১৯ ডিসেম্বর তার দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু আকস্মিকভাবে ‘অপারগতা’ প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। বিব্রত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৭ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অনুরোধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং কোপেনহেগেন সম্মেলনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। সেখান থেকে ১৮ ডিসেম্বর ফিরে আসার পর ‘বয়স্ক’ মনমোহন সিংয়ের পক্ষে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসা ‘কষ্টসাধ্য’ বলেই নাকি ভারত সফর স্থগিত করেছে!
অন্যদিকে কূটনৈতিক সূত্রে কিন্তু জানা গেছে, মনমোহন সিংয়ের কোপেনহেগেন যাওয়াটাই এই সফর স্থগিত করার একমাত্র কারণ নয়। একে আসলে অজুহাত বা বাহানা বানানো হয়েছে। বাস্তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পরফরমেন্সে ভারতের অসন্তুষ্টিসহ অন্তরালে অন্য কিছু বিশেষ কারণ রয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে ভারতের দাবি পূরণে দীর্ঘসূত্রতা দেখানোয় সরকারের ওপর বিরক্ত ও অসন্তুষ্ট হয়েছে ‘সাউথ ব্লক’। সেপ্টেম্বরে দিল্লি সফরকালে দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জরুরি হিসেবে স্বীকার করে এসেছিলেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের চেষ্টা লক্ষ্য করা যায়নি। এ ব্যাপারে তাগিদ দেয়ার জন্যই ১৪ নভেম্বর পররাষ্ট্র সচিব নিরূপমা রাওকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। এরপর সরকার কিছুটা তত্পরতা দেখালেও তাকে যথেষ্ট মনে করেনি দিল্লি। তাছাড়া ভারত চেয়েছিল, ত্রিপুরা রাজ্যের পালাটানায় বিদ্যুত্ প্রকল্প স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারি যন্ত্রপাতি পরিবহনের ব্যাপারে সম্মতি জানিয়ে ঢাকা সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণর সঙ্গে বৈঠকে দীপু মনি এ ব্যাপারে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু সে ঘোষণাও দেয়নি সরকার। পাশাপাশি রয়েছে করিডোরের প্রশ্নে সিদ্ধান্ত ঘোষণায় বিলম্ব। বিষয়গুলোকে দিল্লি সুনজরে দেখতে পারছে না। ‘সাউথ ব্লক’ মনে করছে, আওয়ামী লীগ সরকার দিল্লিকে মিষ্টি কথায় ভুলিয়ে রাখার কৌশল নিয়েছে। এজন্যই সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর সফর স্থগিত করা হয়েছে। তা না হলে এবং সদিচ্ছা থাকলে একদিনের ব্যবধানেই নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা যেত। এতে ‘বয়স্ক’ মনমোহন সিংয়ের যেমন ‘কষ্ট’ বাড়ত না, তেমনি বাতিল করতে হতো না অন্য সব কর্মসূচিও।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফর স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর ভারতকে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের কৌশল ও পদক্ষেপ নিয়ে নতুন করে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, এবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আওয়ামী লীগ সরকার সর্বতোভাবে ভারতকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশকে বিপন্ন করতেও দ্বিধা করছে না সরকার। সর্বশেষ একটি উদাহরণ হিসেবে উলফার শীর্ষ নেতা অরবিন্দ রাজখোয়ার কথিত আত্মসমর্পণের ঘটনা উল্লেখ করা যায়। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের সব খবরেও বলা হয়েছে, অরবিন্দ রাজখোয়া বাংলাদেশের কক্সবাজারে ধরা পড়েছেন। ১ ডিসেম্বর গ্রেফতার করার পর ২ ডিসেম্বর সরকার তাকে বিএসএফের হাতে তুলে দিয়েছে। কিন্তু দু’দিন না যেতেই নাটকীয়ভাবে সম্পূর্ণ ভিন্নকথা শুনিয়েছে ভারত সরকার। সেদেশের পররাষ্ট্র সচিব জিকে পিল্লাই বলে বসেছেন, রাজখোয়াকে বাংলাদেশে গ্রেফতার করা হয়নি। বরং তিনি সীমান্তে বিএসএফের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। কীভাবে কী ঘটেছে সে সম্পর্কেও আবার সবকিছু খোলাসা করেননি পররাষ্ট্র সচিব। তার পরিবর্তে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসকে মিশ্র জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে লোকসভায় জানাবেন তিনি। দৃশ্যপটে সবশেষে এসেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিদাম্বরম—যার আসলে প্রথমে আসার কথা। উল্লসিত অবস্থায় সাংবাদিকদের তিনি ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ‘সুখবর’ জানানো হবে! এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনও দারুণ শুনিয়েছেন। তিনি একেবারে ঝেড়ে বলেছেন, রাজখোয়াকে নাকি বাংলাদেশে গ্রেফতার করা হয়নি! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাফ কথা, ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর ঠিক নয়!
এখানেই রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই রহস্যের জাল ভেদ করতে হলে কয়েকটি কারণ লক্ষ্য করা দরকার। প্রথমত, অরবিন্দ রাজখোয়ার কথিত অত্মসমর্পণের খবর ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথমে জানিয়েছেন সেদেশের পররাষ্ট্র সচিব। অথচ বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন এবং এ সম্পর্কে প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরই জানানো উচিত ছিল। তার পরিবর্তে পররাষ্ট্র সচিব জানানোয় পরিষ্কার হয়েছে, এর সঙ্গে পররাষ্ট্র বিষয়ক তথা বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ও যোগসাজশের বিষয় জড়িত রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসকে মিশ্র’র ঘোষণায়ও সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে। এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন গ্রেফতার ও হস্তান্তরের কথা অস্বীকার করলেও এ নিয়ে যে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে তা ভেদ করা যায়নি! এখানে পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজারের একটি রিপোর্টের উল্লেখ করা দরকার। ৪ ডিসেম্বর দৈনিকটি লিখেছে, রাজখোয়া নাকি বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র মধ্যস্থতায় গ্রেফতার বরণ করেছেন। এনএসআই’র সঙ্গে বোঝাপড়া করেই তিনি কক্সবাজারে গিয়েছিলেন। সেখানে নাকি সাক্ষী হিসেবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একজন প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। বিবিসি’র পূর্ব ভারত ব্যুরো প্রধান সুবীর ভৌমিকের বর্ণনাও যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ। দৈনিক যুগসঙ্খে ৬ ডিসেম্বর তিনি লিখেছেন, রাজখোয়াকে বাংলাদেশেই গ্রেফতার করা হয়েছে বলে র্যাবের এক কর্নেল তার কাছে স্বীকার করেছেন। রাজখোয়াকে দিল্লিতে নেয়া হবে, না সীমান্তে আসাম পুলিশের কাছে তুলে দেয়া হবে সে ব্যাপারে ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করেছে বাংলাদেশ। গুলশানের একটি বাড়িতে তিন দিন ধরে ভারতের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা রাজখোয়ার সঙ্গে সমঝোতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু উলফা নেতা অনমনীয় থাকায় ৩ ডিসেম্বর রাতে তাকে মেঘালয়ের ডাউকি সীমান্তে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
অরবিন্দ রাজখোয়ার গ্রেফতারের খবরের পাশাপাশি অন্য কিছু খবরও প্রকাশ্যে এসে গেছে। এরকম একটি প্রধান খবর হলো, ভারত সরকারের নির্দেশনায় আওয়ামী লীগ সরকার উলফাসহ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ওপর রীতিমত ‘ক্র্যাকডাউন’ করেছে। উলফা ছাড়াও স্বাধীনতাকামী আরেক সংগঠন ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ত্রিপুরার (এনএলএফটি) নেতা বিশ্ব মোহন দেব বর্মাকেও আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে। একযোগে চলছে উলফার কমান্ডার ইন চিফ পরেশ বড়ুয়াকে গ্রেফতার করার চেষ্টা। জানা গেছে, গত জুলাই-আগস্টের দিকে পরেশ বড়ুয়া নাকি বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে চীনে গেছেন। উল্লেখ্য, রাজখোয়ার গ্রেফতারই প্রথম ঘটনা নয়। গত নভেম্বরে উলফার অন্য দু’জন নেতার গ্রেফতারকে ঘিরেও একই ধরনের ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছিল। তখনও ভারত সরকার দাবি জানিয়েছিল, উলফার পররাষ্ট্র বিষয়ক সম্পাদক শশধর চৌধুরী এবং অর্থ সম্পাদক চিত্রাবন হাজারিকা নাকি গত ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ত্রিপুরার বিএসএফ আউটপোস্টে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন! অন্যদিকে উলফার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, রাজধানীর উত্তরা এলাকার একটি বাসা থেকে ১ নভেম্বর তাদের গ্রেফতার করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেবারও বলেছিলেন, তারা নাকি এ ব্যাপারে ‘কিছুই’ জানেন না!
সেবারের মতো এবারও সঙ্গত কারণে প্রশ্ন উঠেছে, সরকার কিছুই না জানলে বাংলাদেশ থেকে তাদের কে বা কারা গ্রেফতার করেছে? প্রশ্ন ওঠার কারণ, উলফা জানিয়েছে এবং অন্য কিছু সূত্রেও জানা গেছে, উভয় ক্ষেত্রেই উলফা নেতাদের ধরে নিয়ে গেছে সাদা পোশাকধারী কয়েকজন। এই সাদা পোশাকধারীরা যদি বাংলাদেশের কোনো বাহিনীর বা গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য না হয়ে থাকে তাহলে তারা কারা? সরকার যেহেতু কিছুই জানে না সেহেতু বুঝতে হবে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর লোকজনই তাদের গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। এটা সত্য হলে বাংলাদেশের জন্য বাড়তি বিপদ এসে দেখা দিতে পারে। বলা দরকার, এবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে ‘র’-এর তত্পরতা অনেক জোরদার হয়েছে। আর সেজন্যই কি উলফা নেতাদের ক্ষেত্রে আত্মসমর্পণের এই নাটক?
মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই কায়দায় উলফার শীর্ষ নেতা রাজখোয়াকে ভারতের হাতে তুলে দেয়ার ঘটনায় সচেতন মানুষমাত্র উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। কারণ, রাজখোয়ারের গ্রেফতার ঘটনায় উলফার গেরিলা যোদ্ধারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে পারে। এ ব্যাপারে উলফার পক্ষ থেকে ঘোষণাও দেয়া হয়েছে। ৫ ডিসেম্বর গৌহাটি আদালত প্রাঙ্গণে অরবিন্দ রাজখোয়া সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তাকে ভারতের হাতে তুলে দিয়ে বাংলাদেশ উলফার সঙ্গে একশ’ ভাগ প্রবঞ্চনা করেছে। উলফার সামরিক শাখার ডেপুটি কমান্ডার রাজু বড়ুয়াও একই কথা বলেছেন। উলফার আরেক নেতা প্রদীপ গগৈ কামরূপের আদালতে বলেছেন, ভুটানের পর বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল। এর বিরুদ্ধে চরম প্রতিশোধ নেবে উলফা। এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমেও ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। উলফা সত্যিই কোনো ব্যবস্থা নিলে বাংলাদেশকে অযথাই ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় জড়িয়ে পড়তে হবে। তাছাড়া উলফার আক্রমণ প্রতিহত করার অজুহাত দেখিয়ে ভারতের সেনাবাহিনী বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা থাকবে। তখন চরম মূল্য গুনতে হবে বাংলাদেশের জনগণকে।
ভারতের সন্তুষ্টি অর্জনের প্রধান লক্ষ্য থেকে অমন এক ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকেই দেশকে ঠেলে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশটিকে খুশি করা যে সম্ভব হয়নি, প্রধানমন্ত্রীর সফর স্থগিত হওয়ার ঘটনাই তার প্রমাণ। বোঝা যাচ্ছে, ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের দহরম-মহরমে কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে। সম্পর্কে আগের মতো উষ্ণতা সম্ভবত আর নেই। এ ব্যাপারেও যথারীতি নির্ধারকের ভূমিকায় রয়েছে ভারত। কারণ, ভারতকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টায় কোনো ত্রুটি করেনি আওয়ামী লীগ সরকার। উলফার শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করে ভারতের হাতে তুলে দেয়ার পাশাপাশি এশিয়ান হাইওয়ে ও করিডোরের মতো জাতীয় স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তও নিয়েছে। কিন্তু এতকিছুর পরও ভারতকে সন্তুষ্ট করা সম্ভব হয়নি। আর এই না হওয়ার কারণ, ভারতের দাবি ও ইচ্ছার আসলে শেষ নেই। রাজখোয়াদের তুলে দেয়াই যথেষ্ট নয়, ভারত ১৯৯৭ সাল থেকে বাংলাদেশের কারাগারে আটক উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়াকে ফেরত চায়। ভারত চাচ্ছে চীনে অবস্থানরত পরেশ বড়ুয়াকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও বাংলাদেশ সহযোগিতা করুক। ভারত একই সঙ্গে অনেক বেশি গুরুত্বের সঙ্গে করিডোরের প্রশ্নে এবং ত্রিপুরা রাজ্যের পালাটানায় বিদ্যুত্ প্রকল্প স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারি যন্ত্রপাতি পরিবহনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সরকারের সম্মতি ও সুনির্দিষ্ট ঘোষণা শুনতে চায়। কিন্তু এসবের কোনো একটিও সহজ নয়। কারণ, ভারত ত্রিপুরায় যন্ত্রপাতি পাঠানোর জন্য যে সুবিধা চাচ্ছে তাকে ওভারডাইমেনশন কনসাইনমেন্ট বা ওডিসি বলা হয়। নামে পরিবহন সুবিধা হলেও বাস্তবে এটা হয়ে উঠবে করিডোরের প্রথম পর্যায়। ওডিসির জন্য আশুগঞ্জ পর্যন্ত নৌ ও রেলপথ তৈরি করতে হলে বিপুল অর্থ ব্যয়ের ধাক্কা সামলাতে হবে বাংলাদেশকে। আশুগঞ্জ থেকে আগরতলা পর্যন্ত সড়ক তৈরি করতে হবে। এরপর উঠবে ত্রিপুরা ও আসামসহ উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সব রাজ্যের জন্য ওডিসির সুবিধা দেয়ার দাবি। আওয়ামী লীগ সরকারের অবশ্য আপত্তি নেই। এশিয়ান হাইওয়ের আড়ালে ভারতকে করিডোর দেয়ার সিদ্ধান্তও নিয়ে রেখেছে সরকার। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএনপি ও জামায়াতসহ দেশপ্রেমিক দলগুলোর বিরোধিতা। ভারত বিষয়টি বুঝতে চাচ্ছে না।
লেখক : সাংবাদিক
ই-মেইল : shahmadreza@yahoo.com

No comments

Powered by Blogger.