ঢাকা উত্তরের নগর ভবন হচ্ছে কাওরানবাজারে

 কাজী সোহাগ: নতুন নগর ভবন নির্মাণের জন্য চিঠি পাঠিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সদ্য নিযুক্ত প্রশাসক খোরশেদ আলম চৌধুরী। চিঠিতে তিনি নতুন নগর ভবন রাজধানীর কাওরানবাজারে স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তার ওই প্রস্তাবকে গ্রহণযোগ্য   পৃষ্ঠা ১৭ কলাম ১
 বলে জানানো হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টির সুরাহা করা হবে। এর আগে করপোরেশনের জন্য কাওরানবাজারের জনতা টাওয়ারের দুটি ফ্লোর বরাদ্দ দেবে সরকার। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক ডেকে ফ্লোর বরাদ্দের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। পরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জন্য কাওরানবাজারে সাড়ে তিন কাঠা জমির ওপর নির্মিত হবে নগর ভবন। এ বিষয়ে করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, আমরা স্থায়ী নগর ভবনের জন্য সুপারিশ করেছি। আশা করি কয়েক বছরের মধ্যে নগর ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হবে। উত্তর সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এক মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত করপোরেশনের অফিস গোছানোর কাজ শেষ হয়নি। তাই পুরোদমে নাগরিক সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
প্রশাসকের চিঠিতে যা বলা হয়েছে: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু আলম মো. শহিদ খানকে দেয়া চিঠিতে প্রশাসক লিখেছেন, আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, মেয়র ভবন ৮১, গুলশান এভিনিউতে নবগঠিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে মেয়র ভবনে যে কয়টি কক্ষ রয়েছে প্রয়োজনের তুলনায় তা নিতান্তই অপ্রতুল। এ করপোরেশনের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুরূপে সম্পাদনের জন্য প্রায় ১৮টি বিভাগ দায়িত্ব পালন করে। এসব বিভাগে প্রায় এক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত থাকবে। বর্তমানে মেয়র ভবন, মেয়র ভবনের পাশের একটি ছোট্ট অস্থায়ী শেড ও বনানী কমিউনিটি সেন্টারে অবস্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের ৮টি কক্ষের অপ্রতুল স্থানে করপোরেশনের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কার্যক্রম পরিচালনা দুরূহ হয়ে পড়েছে। চিঠিতে যুক্তি তুলে ধরে দুটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বহুতলবিশিষ্ট জনতা টাওয়ার ভবন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সদর দপ্তরের জন্য উপযুক্ত স্থান হতে পারে। এ ভবনটি বর্তমানে অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। এ বিষয়ে আমি পূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, ভবনটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উক্ত ভবন থেকে আংশিক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে বরাদ্দ দেয়া যায় কিনা তা একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। এ ভবনটি বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুত সমস্যার সমাধান হতে পারে। চিঠির দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কাওরানবাজার এলাকায় অবস্থিত বিদ্যমান কাঁচাবাজারটি মহাখালী, আমিনবাজার ও যাত্রাবাড়িতে নবনির্মিত ৩টি পাইকারি কাঁচাবাজারে স্থানান্তরিত হচ্ছে। ফলে করপোরেশনের মালিকানাধীন সাত দশমিক ৮৬৬১ একর জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকবে। সার্বিক বিবেচনায় সদর দপ্তরের জন্য স্থানটি অত্যন্ত উপযোগী। এ স্থানে ভবন নির্মাণে উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। তবে এ প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ। সরকার ঢাকা সিটি করপোরেশনকে উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগ করে গত ২৯ নভেম্বর সংসদে আইন পাস করে। এর গেজেট প্রকাশিত হয় গত ১ ডিসেম্বর। এরপর নগর ভবনে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যালয় রেখে উত্তরের অস্থায়ী কার্যালয় করা হয় ৮১ গুলশান এভিনিউর মেয়র ভবনে। ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশনের প্রতিটিতে ১৮টি করে শাখা রয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনুমোদিত পদ প্রায় এক হাজার। উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ভবনটি একটি দোতলা আবাসিক ভবন। কক্ষও সীমিত। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মেয়র ভবনে সিটি করপোরেশনের কার্যালয় চালানো কোনভাবেই সম্ভব নয়। বনানী কমিউনিটি সেন্টারও এ কাজের উপযুক্ত নয়।

No comments

Powered by Blogger.