খুলনা-রাজশাহীর জয়ের দিনে ঢাকা মেট্রোর রান-পাহাড়

ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক এ বছরই। প্রথম তিন ম্যাচের পারফরম্যান্স উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। তবে চতুর্থ ম্যাচে এসে এমন কাণ্ড করলেন যে আল-আমিন হোসেনের দিকে দৃষ্টি ঘুরে যেতে বাধ্য। খুলনার এই পেসার ম্যাচে ৮৯ রানে নিয়েছেন ১২ উইকেট! এর মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রানে চট্টগ্রামের ৭ উইকেট তুলে নিয়ে দলকে সহজসাধ্য টার্গেট পাইয়ে দিয়েছেন। সুবাদে চার দিনের ম্যাচ তিন দিনেই ৮ উইকেটে জিতে নিয়েছে খুলনা।


আরো ছোট টার্গেট ধাওয়া করে ঢাকার বিপক্ষে রাজশাহীর জয় ৯ উইকেটের। আর তৃতীয় দিনশেষে অধিনায়ক এনামুল হক জুনিয়রের ঘূর্ণিতে জেতার সম্ভাবনা তৈরি করে রেখেছে সিলেটও। ১৩০ রানে এগিয়ে থাকা বরিশালের দ্বিতীয় ইনিংসের উইকেট যে অক্ষত আছে মাত্র তিনটি। জাতীয় লিগে বোলারদের আধিপত্যের ষষ্ঠ রাউন্ডে ব্যতিক্রম হয়ে আছে ঢাকা মেট্রোর প্রথম ইনিংস। অলআউট হওয়ার আগে ৫১৮ রানের পাহাড়ই গড়েছে তারা।
ব্যাটিং সাফল্যে তারা ১ নম্বরে থাকলেও ব্যর্থতায় সবার ওপরে থাকবে ঢাকা বিভাগীয় দল। ৭ উইকেটে ১১২ রান নিয়ে দিন শুরু করে তারা যোগ করতে পারে মাত্র ১৯ রান! অবশ্য প্রথম ইনিংসের মতো এবারও ১৩১ রানে অলআউট হয়নি, শেষ ব্যাটসম্যান মাহবুবুল আলম আঙুলে চোট পাওয়ায় নবম উইকেট পড়তেই ইনিংস ঘোষণা করে দেন অধিনায়ক মোহাম্মদ শরীফ। ওপেনার মিজানুর রহমানের উইকেটটি শুধু হারিয়ে নবম ওভারেই মাত্র ৪৯ রানের লক্ষ্যে পেঁৗছে যায় রাজশাহী। আল-আমিনের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ৬ উইকেটে ১০০ রান নিয়ে দিন শুরু করা চট্টগ্রামের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ১৪৪-এ গিয়ে। ১১২ রানের টার্গেট পাওয়া খুলনা ২৩ রানে ২ উইকেট হারালেও ওপেনার নাজমুস সাদাত (৫৫*) ও মোসাদ্দেক ইফতেখারের (৪০*) অবিচ্ছিন্ন ৯০ রানের পার্টনারশিপ অনায়াস জয়ের পথই দেখায় তাদের। রাজিন সালেহর ৮০ রানের ইনিংসে প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়া সিলেট তৃতীয় দিনের শেষেও আছে সুবিধাজনক অবস্থায়। বাঁ হাতি স্পিনে এনামুল জুনিয়র ৪৯ রানে ৫ উইকেট নেওয়ায় দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৭ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বরিশাল। এখন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ইফতেখার নাঈমের (৪৩*) দিকেই তাকিয়ে আছে তারা। যদি লড়াই করার মতো একটি টার্গেট দেওয়া যায়!
আগের দিন আসিফ আহমেদ ও মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যাওয়া ঢাকা মেট্রোর হয়ে বাকি কাজটা সেরেছেন শামসুর রহমান (৮৬) ও তাসামুল হক (৮৪)। পঞ্চম উইকেটে তাঁদের ১২৫ রানের পার্টনারশিপের পর অবদান রেখেছেন আরাফাত সানির (৪৮) মতো টেলএন্ডারও। প্রতিপক্ষের বিশাল সংগ্রহের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ৯৩ রান তুলে দিন শেষ করার সময়ও মেট্রোর প্রথম ইনিংসের চেয়ে ৭১ রানে পিছিয়ে রংপুর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
রাজশাহী-ঢাকা : ঢাকা প্রথম ইনিংস ১৩১/১০ ও দ্বিতীয় ইনিংস ৪১.৩ ওভারে ১৩১/৯ ডিক্লেয়ার্ড (হান্নান ৭২, তায়েবুর ২০; দেলোয়ার ৪/২২, সাঞ্জামুল ২/২৬)। রাজশাহী প্রথম ইনিংস ২১৪/১০ ও দ্বিতীয় ইনিংস ৮.৪ ওভারে ৪৯/১ (মিজানুর ২০, রবিউল ১৬*, সাবি্বর ১১*; শরীফ ১/১১)।
ফল : রাজশাহী ৯ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : সাঞ্জামুল ইসলাম (রাজশাহী)।
চট্টগ্রাম-খুলনা : চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংস ২০০ ও দ্বিতীয় ইনিংস ৪০.৪ ওভারে ১৪৪/১০ (নাফিস ২৩, নাজিমউদ্দিন ২৯, ইয়াসিন ২৪*; জিয়াউর ২/৫৫, আল-আমিন ৭/৩৬)। খুলনা প্রথম ইনিংস ২৩৩/৯ ডিক্লেয়ার্ড ও দ্বিতীয় ইনিংস ২৭.৪ ওভারে ১১৩/২ (নাজমুস সাদাত ৫৫*, মোসাদ্দেক ৪০*; মেরাজুল ১/১৪, আবদুল্লাহ ১/২৫)। ফল : খুলনা ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : আল-আমিন হোসেন (খুলনা)।
বরিশাল-সিলেট : বরিশাল প্রথম ইনিংস ২৬৪/১০ ও দ্বিতীয় ইনিংস ৫১ ওভারে ১৪৭/৭ (জুপিটার ৩০, ইফতেখার ব্যাটিং ৪৩, মনির ব্যাটিং ১৯; এনামুল জুনিয়র ৫/৪৯, আবু জাহেদ ২/২৩)। সিলেট প্রথম ইনিংস ১১২.২ ওভারে ২৮১/১০ (রাজিন ৮০, গোলাম রহমান ৭৭; রাসেল ৪/২৭, ইশরাক ২/৪৪, মনির ২/৪১, ইফতেখার ২/১৮)।
ঢাকা মেট্রো-রংপুর : রংপুর প্রথম ইনিংস ৩৫৪/১০ ও দ্বিতীয় ইনিংস ৩১ ওভারে ৯৩/৩ (রবিউল ৩১, ধীমান ব্যাটিং ৩৭; আরাফাত সানি ২/১৫, সালাউদ্দিন ১/১৮)। ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংস ১৩২ ওভারে ৫১৮/১০ (আশরাফুল ৭১, আসিফ ১৫২, শামসুর ৮৬, তাসামুল ৮৪, সালাউদ্দিন ৩৪, আরাফাত সানি ৪৮; শুভাশিষ ২/১০১, রনি ৪/১২১, মাহমুদুল ৩/১১০)।

No comments

Powered by Blogger.