ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনারে বক্তারা-সরকারের অবাস্তব বাজেটই উন্নয়নের প্রধান বাধা

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান বাধা হচ্ছে সরকারের অবাস্তব বাজেট। অসংগতিতে ভরা এই বাজেট প্রণয়ন হয়েছে অনেক তথ্য গোপন করে। বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সরকারের আন্তরিকতারও ঘাটতি রয়েছে। এ দুটি বিষয় অর্থনৈতিককর্মকাণ্ডকেনানাভাবেব্যাহতকরছে।গতকালবুধবাররাজধানীরব্র্যাকবিশ্ববিদ্যালয়েঅনুষ্ঠিতসামষ্টিকঅর্থনৈতিকবিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ক্লাব এই সেমিনারের আয়োজন


করে।সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। উচ্চ মূল্যস্ফীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, গত অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৭.৩ শতাংশ থাকলেও বর্তমানে তা ১২ শতাংশে গিয়ে পেঁৗছেছে। সম্প্রতি সরকারের ঋণগ্রহণের প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। নভেম্বর ১৩ তারিখ পর্যন্ত সরকার ব্যাংক থেকে ১৮ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যা তাদের চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। এই বিপুল অর্থ ঋণ নিয়ে সরকার ভর্তুকিতে ব্যয় করছে। এই ভর্তুকি কমানোর জন্য তিনি পুঁজিবাজার থেকে টাকা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মির্জ্জা আজিজ বলেন, শেয়ারবাজার ক্ষতিগ্রস্তদের ভর্তুকি দেওয়া কোনোভাবেই ঠিক নয়। ফলে ভবিষ্যতে যদি আবারও এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয় তখন আবারও জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর হবে । তখন আবারও ক্ষতিপূরণের বিষয়টি চলে আসবে। তবে তিনি বলেন, নতুন কম্পানিকে পুঁজিবাজারে আনতে হবে। মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম তাঁর প্রবন্ধে মুদ্রার বিনিময় হার, সুদের হার নিয়েও আলোচনা করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে তত্ত্বাধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, বর্তমান সরকার একটি অবাস্তব বাজেট প্রণয়ন করেছে। অর এই অবাস্তব বাজেটের ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, এই বাজেট কেবল অবাস্তব নয়; এটা অসংগতিতেও ভরা। অনেক তথ্য গোপন করে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।
নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আকবর আলি খান বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি, সুদের হারও বেশি। এমন অবস্থায় নতুন ব্যাংক দিলে তারা সুদের হার আরো বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নামবে।
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সমস্যা সমাধানে আন্তরিকতার ঘাটতি হচ্ছে সরকারের অন্যতম প্রধান সমস্যা। আর এই সমস্যার কারণে কোনো কাজই তারা ঠিকভাবে করতে পারছে না। সব আল্লাহ করে দেবেন, সেই আশায় তারা হাত গুটিয়ে বসে আছে।
অনেকে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির তুলনা করেন, সে বিষয়ে ড. আকবর আলি খান বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের মূল্যস্ফীতির তুলনা হতে পারে না। তাদের মূল্যস্ফীতি উচ্চ হলেও তাদের দেশে মাথা পিছু আয় আমাদের দেশের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে তাদের ক্রয়ক্ষমতাও অনেক বেশি। সেই বিষয়টাও দেখতে হবে।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব বিজনেসের পরিচালক ও ব্যাংকার মামুন রশিদ। তিনি বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতি নাজুক অবস্থায় রয়েছে।'
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তা শামসুল আলম খান বলেন, কেবল আমাদের দেশে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.