সৌদি আরবে দেশি কর্মী কম রাখা কম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা

সৌদি আরবে যেসব কম্পানিতে মোট জনবলের কমপক্ষে ৭-৮ শতাংশ সৌদি নাগরিক নেই সেগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে দেশটির সরকার। নতুন জাতীয়করণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ নিয়ম কার্যকর হচ্ছে।সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোনো কম্পানিতে সৌদি নাগরিক কমপক্ষে ৭-৮ শতাংশ না থাকলে তাদের নতুন কাজের অনুমতি, নতুন শাখার অনুমতি বা বিদেশি তহবিল ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে না।


এর আগে ৫ শতাংশ সৌদি কর্মী রাখার বাধ্যবাধকতা ছিল।বেসরকারি খাতে সৌদি নাগরিকদের কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয় 'নিতাকাত' পদ্ধতি চালু করেছে। এর আওতায় বেসরকারি কম্পানিগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ সৌদি কর্মী আছে এমন কম্পানিগুলোকে সবুজ দলভুক্ত করা হয়েছে। মাঝামাঝি সংখ্যার সৌদি কর্মী রাখা কম্পানিগুলো হলুদ দলে আছে। তারাও নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে আছে। তবে লাল দলভুক্ত কম্পানিগুলো, যেখানে সৌদি কর্মীর সংখ্যা অনেক কম, প্রথমত সেগুলোর ওপরই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।
নিতাকাত পদ্ধতিটি শ্রম মন্ত্রণালয়েরই আরেকটি কর্মসূচি 'হাফিজের' সঙ্গে পাশাপাশিভাবে কাজ করছে। হাফিজের আওতায় কর্মক্ষম বেকার নাগরিকদের প্রত্যেককে মাসিক দুই হাজার রিয়াল ভাতা দেওয়া হয়। নিতাকাত পদ্ধতির সঙ্গে হাফিজ কর্মসূচি বিরোধপূর্ণ একটি অবস্থান তৈরি করছে বলে মনে করে বেসরকারি কম্পানিগুলো। যেসব সৌদি নাগরিক কাজহীন বসে থেকেই মাসিক ভাতা পাচ্ছেন, তাঁরা ভাতার অঙ্কের চেয়ে বেশি বেতনের চাকরি আশা করছেন। এসাম আল জামিল নামের এক বিনিয়োগকারী বলেন, কম্পানিগুলো বিদেশি শ্রমিকদের গড়ে ৭০০ রিয়ালের মতো বেতন দেয়। কিন্তু সৌদি শ্রমিকদের গড় বেতন তিন হাজার ২০০ রিয়াল। এ ছাড়া কারিগরি কাজের ক্ষেত্রে শ্রমিকদের বেশি সময় দিতে হয় এবং সৌদিরা এ ব্যাপারে আগ্রহী হয় না।
উন্নত দেশগুলোতে শ্রমশক্তির প্রায় ৭০ শতাংশই বেসরকারি খাতে কাজের ব্যাপারে আগ্রহী হয়। কিন্তু সৌদি আরবে এর মাত্রা প্রায় ৩০ শতাংশ। শ্রমশক্তির একটি বড় অংশ হওয়া সত্ত্বেও সৌদি নারীদের বেশির ভাগই কাজের বাইরে থাকে। এটাও বেসরকারি খাতে সৌদি কর্মী কম থাকার একটি কারণ বলে মনে করেন জামিল।
তবে সৌদি অর্থনৈতিক অবস্থাকে 'অযৌক্তিক' উল্লেখ করে শ্রম মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হাত্তাব আল আনাজি জানান, সৌদি আরবে এখন প্রায় ২০ লাখ বেকার আছে। প্রতিবছরই নতুন প্রায় চার লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক শেষ করে চাকরির বাজারে ঢুকছেন। আর বেসরকারি খাতে কেবল পাঁচ লাখ কাজের সুযোগ আছে। বিনিয়োগ বাড়ানো ও বিনিয়োগের নতুন খাত তৈরি করার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে উল্লেখ করেন তিনি। নিতাকাত পদ্ধতির আওতায় লাল দলভুক্ত কম্পানিগুলো আর কোনো সুযোগ পাবে না বলেও জানান তিনি। সূত্র : জিনিউজ, আরব নিউজ।

No comments

Powered by Blogger.