সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এসইসির দীর্ঘসূত্রতা দায়ী by রাশেদুল তুষার,

সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি'র দীর্ঘসূত্রতার কারণে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে শেয়ারবাজারে অর্থের প্রবাহ বাড়াতে প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়া পরামর্শ বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপন করছে এসইসি। যে কারণে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি উন্নয়ণে বাংলাদেশ ব্যাংক, এসইসি, সিডিবিএল, বিএপিএলসি ও এফবিসিসিআই এর সমন্বিত উদ্যোগও কোন কাজে আসছে না। আর বিনিয়োগকারীদের আস্থাও নেমে এসেছে শূন্যের কোঠায়।


আস্থাহীনতার এই চিত্র দেখা গেছে গতকালের লেনদেনে। সপ্তাহের প্রথম লেনদেনে চট্টগ্রাম স্টক এঙ্চেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক ৫২৪ কমে গতকাল রবিবার ১৫ হাজার ৬৩০ পয়েন্টে দাড়িয়েছে। যা গত পাঁচমাসের মধ্যে সর্বনিম্ন সূচকের পতন। এদিন সিএসইতে ৪৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। এ সময় যে ১৮৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের লেনদেন হয়েছে, তার মধ্যে দাম বেড়েছে কেবল ৭টির। আর দরপতন হয়েছে ১৭৬টি কম্পানির শেয়ার। এদিন বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। বড় ধরনের এই দরপতনের কারণ সম্পর্কে সিএসই সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, 'এই মুহুর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতির যে অবস্থা তাতে পুঁজিবাজার পরিস্থিতির অবনতির কোন কারণ নেই। তবে এই বাজার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা বাদ দিতে হবে। এছাড়া শেয়ারবাজারকে মূলধারার অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।' তিনি শেয়ারবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য সরকারকে পরামর্শ দেন। এছাড়া উদ্যোক্তাদের শুধু ব্যাংক অভিমূখী না করে পুঁজিবাজারমূখী করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
সম্প্রতি বাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে এসইসি'র কাছে দেয়া সিএসই'র ১১ প্রস্তাবনা সম্পর্কে সিএসই সভাপতি বলেন, 'আমরা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে সিএসই সদস্যদের সাথে বৈঠক করে এসইসি'র কাছে বেশকিছু প্রস্তাবনা দিয়েছি। যার মধ্যে 'জেড' ক্যাটাগরীর শেয়ার আর্থিক সমঝোতায় (ফিনান্সিয়াল সেটেলম্যান্ট) অতিরিক্ত সময় কমিয়ে আনা এবং ক্যাশ নেটিং আবার চালু করার প্রস্তাবনাও রয়েছে। শুধু জেড ক্যাটাগরীর আর্থিক সমঝোতায় দীর্ঘ সময়ের জন্য সপ্তাহে অন্ততঃ ৫০০ কোটি টাকা ব্যাংকে আটকে থাকে। ব্যাংকগুলো এতে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। যেহেতু এই দুটি প্রস্তাবনা আগেও চালু ছিল, তাই এগুলো বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। এতে পুঁজিবাজারে অর্থ সঞ্চালন বাড়বে।' তবে এ ব্যাপারে এসইসি থেকে এখনও কোন নির্দেশনা আসেনি বলে তিনি জানান। ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, 'আস্থার সাথে টাকার সম্পর্ক। সিদ্ধান্ত নিতে দেরী করলে দুটো একসাথে প্রয়োগ করেও কাজ হবে না। অসুখের সময় কোরামিন দিতে হবে।'
চিটাগং ইনভেস্টর'স ফোরামের আহবায়ক আছলাম মোরশেদ বলেন, 'বিনিয়োগকারীদের ক্রয় ক্ষমতা এখন নেই বললেই চলে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগে আছে বলে মনে হয় না।' সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এসইসির সময়ক্ষেপনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'আমাদের দেশে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো যেভাবে চলে তা স্বচ্ছ নয়। তাদের সম্পদ কিভাবে ব্যবহার হয় তা কখনও জানানো হয় না। তদন্ত করলে দেখা যাবে তারা তাদের অর্থ এফডিআর করে ব্যাংকে ফেলে রেখেছে।'

No comments

Powered by Blogger.