অভিবাসী কমাতে কঠোর হচ্ছে ব্রিটেন

ভিবাসীর সংখ্যা কমাতে আরো কঠোর হচ্ছে ব্রিটিশ সরকার। বেকারভাতার সুবিধাভোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় অন্যান্য উদ্যোগের পাশাপাশি সরকার অভিবাসী কমানোর চিন্তা করছে। বিভিন্ন কম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের ব্যাপারে তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। অভিবাসন-সংক্রান্ত নতুন একটি আইনের অধীনে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আজ সোমবার জাতির উদ্দেশে অভিবাসন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। ভাষণেই তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শ্রমিকদের পরিচয় প্রকাশ ছাড়াও আরো কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে সরকার। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে_ভুয়া বিয়ের মাধ্যমে ব্রিটেনে যাওয়া ঠেকানো এবং ব্রিটেনে যাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে কোনো লোকের বার্ষিক নূ্যনতম আয় ২০ হাজার পাউন্ডের বেশি নিশ্চিত করা। বর্তমানে এ আয়সীমা ২০ হাজারে রয়েছে।
ক্যামেরন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেরেসা মে এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। অভিবাসীদের সংখ্যা কমাতে তাঁরা বদ্ধপরিকর। ক্যামেরনের নির্বাচনী ওয়াদায় অভিবাসী কমানোর প্রস্তাব ছিল। নতুন আইন কার্যকর হলে বিদেশি শ্রমিকের পরিচয় প্রকাশ করতে বাধ্য হবে সংশ্লিষ্ট কম্পানি ও প্রতিষ্ঠান। দেশটিতে বর্তমানে ২৫ লাখ লোককে বেকারভাতা দিচ্ছে সরকার।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, বেসরকারি কম্পানিগুলোর কর্তাব্যক্তিদের সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, এর ফলে কম্পানিগুলোকে অতিরিক্ত ফাইল রাখতে হবে।
সরকার মনে করছে, এ আইনের ফলে কম্পানিগুলোতে অনেক বেশি স্বচ্ছতা আসবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কারা কাজ করছেন এবং তাঁরা কোথা থেকে এসেছেন সে ব্যাপারে স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে। সরকারের মূল লক্ষ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরের দেশগুলো থেকে ব্রিটেনে যাওয়া লোকজনের সংখ্যা বছরে এক লাখের নিচে নামিয়ে আনা। ২০১৫ সালের মধ্যে তারা এ লক্ষ্যে পেঁৗছাতে চায়। জাতীয় পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যমতে, ব্রিটেনে অভিবাসীদের সংখ্যা বছরে ২১ ভাগ বেড়েছে। গত বছর দুই লাখ ৩৯ হাজার বিদেশি দেশটিতে অভিবাসী হয়েছে।
ইইউভুক্ত দেশের বাইরে থেকে কোনো ব্যক্তিকে ব্রিটেনে যাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে বার্ষিক আয় নূ্যনতম ২০ হাজার পাউন্ড থাকতে হয়ে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেরেসা শিগগির এ অঙ্ক বাড়ানোর ব্যাপারে অভিবাসী উপদেষ্টা কমিটিকে নির্দেশ দিতে পারেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া সরকার ছলনার বিয়ের ব্যাপারেও ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অভিবাসীর পর্যবেক্ষণকাল (প্রোবেশনারি পিরিয়ড) বাড়ানোর প্রস্তাব করা হবে। বর্তমানে ব্রিটেনে দুই বছর অবস্থানের পর অভিবাসী স্বামী বা স্ত্রী তাঁর সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে সে দেশে নেওয়ার অনুমতি চাইতে পারেন। এ সময়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হতে পারে। 'ওয়ার্ক ভিসার' ক্ষেত্রে দক্ষ ক্যাটাগরিতে বছরে ২১ হাজার ৭০০ লোককে ভিসা দেওয়া হয়। এই বিধান পুনর্মূল্যায়নের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এ ব্যাপারে একটি প্রস্তাব তৈরি করা হবে। সূত্র : টেলিগ্রাফ, মিরর।

No comments

Powered by Blogger.