ওয়াশিংটনেও করপোরেটের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, গ্রেপ্তার ১

'য়াল স্ট্রিট দখল' আন্দোলনের ঢেউ নিউ ইয়র্কসহ আরো কয়েকটি শহর ছাড়িয়ে এখন রাজধানী ওয়াশিংটনেও আছড়ে পড়েছে। গত শনিবার একদল বিক্ষোভকারীর সঙ্গে ওয়াশিংটনের একটি জাদুঘরের নিরাপত্তাকর্মীদের সংর্ঘষ বাধে। নিরাপত্তাকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর মরিচের গুঁড়া ছড়িয়ে দেন। এ সময় অন্তত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। করপোরেট সংস্কৃতিবিরোধী আন্দোলনের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে এখন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামছে মার্কিনিরা_সর্বশেষ ঘটনা তারই প্রমাণ। ওই দিন বিভিন্ন দেশে মার্কিন ড্রোন (চালকবিহীন বিমান) হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়। আফগান যুদ্ধের দশম বার্ষিকী উপলক্ষে তারা বিক্ষোভ করে।
ওয়াল স্ট্রিট দখল আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হয়ে ওয়াশিংটনে বেশ কিছু তরুণ মিলে করপোরেটবিরোধী আন্দোলনে নেমেছে। তারা তাদের আন্দোলনের নাম দেয় 'ডিসি দখল' আন্দোলন। গত শনিবার দুপুরের পরে ওয়াশিংটনের স্মিথসোনিয়ানস ন্যাশনাল এয়ার অ্যান্ড স্পেস জাদুঘরের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যায় এ গ্রুপটির কয়েক শ বিক্ষোভকারী। তারা হোয়াইট হাউসের কাছাকাছি ফ্রিডম প্লাজার দিক থেকে আসে। এ সময় তারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ড্রোন হামলার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। তাদের হাতে ব্যানারে ড্রোনবিরোধী স্লোগান লেখা ছিল। তাদের সঙ্গে যুদ্ধবিরোধী, মানবাধিকার গ্রুপসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী যোগ দেয়।
জাদুঘরের মুখপাত্র লিন্ডা সেইন্ট টমাস বলেন, 'বিক্ষোভকারীরা জাদুঘরের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। বিক্ষোভকারীদের ব্যানার নিয়ে ভেতরে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা ব্যানার নিয়েই ঢোকে। এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাদের ওপর মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেন। এ সময় কয়েক শ বিক্ষোভকারী ওই এলাকায় ছিল। পরে পুলিশ ডাকা হয়। আমার জানামতে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।' তিনি জানান, সংঘর্ষের কারণে জাদুঘরটি নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় ২০০ বিক্ষোভকারী জাদুঘরে ঢোকার চেষ্টা চালায়। এ সময় মাত্র ছয়জন নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন।
'ডিসি দখল' আন্দোলনকারীরা বর্তমানে ওয়াশিংটনের কে স্ট্রিটে ম্যাকফারসন স্কয়ারে তাদের প্রচার চালাচ্ছে। দেশটির বেশির ভাগ রাজনৈতিক তদবিরকারী গ্রুপগুলোর কার্যালয় রয়েছে ওই এলাকায়। গত শুক্রবার তারা ওয়াল স্ট্রিট দখল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে করপোরেটের অতি মুনাফার নিন্দা জানিয়ে বাস-ট্রেনের যাত্রীদের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরে। এদিকে ওয়াল স্ট্রিটবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-নিপীড়নের সমালোচনা করেছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজ। চলমান আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে শাভেজ বলেন, সরকার বিক্ষোভকারীদের ওপর বীভৎস নির্যাতন চালাচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি রিপাবলিকান দলের হয়ে আগামী নির্বাচনে লড়ার সম্ভাব্য প্রার্থী মিট রমনিরও সমালোচনা করেছেন। কিউবা ও ভেনিজুয়েলার সমালোচনা করায় রমনিকে শাভেজ 'উন্মত্ত' বলে অভিহিত করেছেন। গত মাসের মাঝামাঝি নিউ ইয়র্কে ওয়াল স্ট্রিটবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। শান্তিপূর্ণ এ আন্দোলন পরবর্তী সময়ে ফ্লোরিডা ও সিয়াটলসহ অন্য শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলন দমন করতে সরকার কয়েক শ লোককে গ্রেপ্তার করে। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে রাজনৈতিক এক সভায় শাভেজ বলেন, 'জনপ্রিয় এ আন্দোলন ১০টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে এবং তাদের ওপর যে নির্যাতন নেমে এসেছে, তা বীভৎস। জানি না, কারাগারে কতজনকে আটকে রাখা হয়েছে।' শাভেজের এ বক্তব্য রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। সূত্র : এএফপি, আল-জাজিরা, গার্ডিয়ান।

No comments

Powered by Blogger.