পুঁজিবাজারে আরেকটি মন্দা সপ্তাহ

দেশের পুঁজিবাজার আরও একটি মন্দা সপ্তাহ পার করল। সপ্তাহ শেষে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সব সূচকই ছিল নিম্নমুখী।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেন ছিল বন্ধ। তাই গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে চার দিন। এর মধ্যে তিন দিনই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক কমেছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) চার দিনই দরপতন ঘটেছে।
গত সপ্তাহে ‘বাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিল’ (এমএসএফ) গঠন নিয়ে পুঁজিবাজার ও মুদ্রাবাজারের দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা যথাক্রমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি এ কে আজাদ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের সভাপতি সালমান এফ রহমান এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবীর হোসেন। এই তিনজনই আবার ডিএসইর মনোনীত পরিচালক। বৈঠকে তাঁরা তহবিলটির জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদানের আবেদন জানান।
গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারের লেনদেনের ওপর সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএল আরোপিত মাশুল ৩০ শতাংশ বা সাড়ে সাত টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে এক লাখ টাকার লেনদেন করলে ২৫ টাকা সিডিবিএল মাশুলের বদলে এখন দিতে হবে সাড়ে ১৭ টাকা।
ডিএসইতে দরপতন দিয়েই সপ্তাহটি শুরু হয়। তবে শেষ দিনে মূল্যসূচকে মাত্র এক পয়েন্ট যোগ করে সপ্তাহের লেনদেন শেষ হয়।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৭৫ শতাংশ শেয়ারের দাম কমেছে, যদিও আগের সপ্তাহে ৯২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছিল। একইভাবে সিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রায় ৮২ শতাংশের দাম কমেছে। আগের সপ্তাহে সেখানে ৭৪ শতাংশ শেয়ারের দাম বেড়েছিল।
সপ্তাহ শেষে ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক প্রায় তিন শতাংশ এবং সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে গেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, শেয়ার ও মূল্যসূচকের দরপতনের চেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় লেনদেন কমে যাওয়া। লেনদেনের পরিমাণ না বাড়লে বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতাও কমবে না। এ অবস্থায় এসইসির উচিত লেনদেন কমে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা। গত বছর প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি শ্রেণীর শীর্ষ ৫০ জন করে বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বৈঠকে বসে লেনদেন কমে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য এসইসিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে প্রথম আলোর মাধ্যমে এমনই পরামর্শ তুলে ধরেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদ ওসমান ইমাম।

No comments

Powered by Blogger.