হাক্কানি নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী

হাক্কানি নেটওয়ার্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে প্রস্তুত পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। তবে উপজাতি-অধ্যুষিত উত্তর ওয়াজিরিস্তানে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। গণমাধ্যমের খবরে গতকাল শনিবার এ কথা বলা হয়েছে।
খবরে বলা হয়, গত শুক্রবার রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানির সভাপতিত্বে পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে হাক্কানি নেটওয়ার্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুরু হওয়া উত্তেজনা কমিয়ে আনার ব্যাপারে সেনা কর্মকর্তারা তাঁদের আগ্রহের কথা জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সেনা কর্মকর্তা বলেন, হাক্কানি ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গঠনমূলক চুক্তিতে উপনীত হতে চায় পাকিস্তান। তবে তিনি হাক্কানি নেটওয়ার্কের সদর দপ্তর উত্তর ওয়াজিরিস্তানে সেনা অভিযানের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, বল প্রয়োগ করে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। তাঁর এই বক্তব্য সেনাপ্রধান কায়ানির বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি।
পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মাংলা এলাকায় পাকিস্তান ও সৌদি আরবের এক যৌথ সামরিক মহড়া চলাকালে সেনাদের উদ্দেশে বক্তৃতার সময় গত বৃহস্পতিবার জেনারেল কায়ানি বলেন, প্রতিটি ইস্যুতেই সামরিক ব্যবস্থার শরণাপন্ন হওয়াটা আদর্শ উপায় নয়। তাঁর ওই মন্তব্যকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচণ্ড চাপ সত্ত্বেও উত্তর ওয়াজিরিস্তানে অভিযান না চালানোর ব্যাপারে পাকিস্তানের অনড় অবস্থানের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে অভিযান চালানোর পরিবর্তে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রকে বিকল্প কিছু করার প্রস্তাব দিচ্ছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য একজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ এক ব্রিফিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, পাকিস্তানের নীতি জাতীয় স্বার্থে পরিচালিত হয়। সেখানে নীতির ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট গণ্ডি রয়েছে, স্পষ্টভাবেই ওই গণ্ডির ব্যাপারে কোনো ধরনের সমঝোতা করা হয় না।
রাওয়ালপিন্ডিতে গত শুক্রবারের ওই বৈঠকে ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে চলতি সপ্তাহে স্বাক্ষরিত কৌশলগত অংশীদারি চুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়।
বৈঠকে সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট বুরহানুদ্দিন রাব্বানি হত্যাকাণ্ডে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আফগানিস্তানের অভিযোগের প্রতিবাদ করেন সেনা কর্মকর্তারা।
বৈঠক শেষে আইএসআইয়ের জনসংযোগ বিভাগের এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়, ওই বৈঠকটি ছিল নিয়মিত মাসিক বৈঠক। বৈঠকে সামরিক বাহিনীর দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে গতানুগতিক পেশাগত বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
অন্যদিকে পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ক্যামেরন মুন্টার গত শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারের সঙ্গে বৈঠক করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং আঞ্চলিক ইস্যুগুলোতে সমন্বয় করার ব্যাপারে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.