তুরাগে বাসডুবির এক বছরেও প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নেই by তায়েফুর রহমান,

সাভারের আমিনবাজারে তুরাগ নদে যাত্রীবাহী বাস পড়ে ১৪ জনের প্রাণহানির মর্মান্তিক দুর্ঘটনার এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। গত বছরের এই দিনে সালেহপুর সেতুতে ওঠার আগে বৈশাখী পরিবহনের একটি বাস তুরাগ নদে পড়ে গিয়ে প্রায় ৪০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। এর আগে ২০০২ সালের ৭ জানুয়ারি এখানে একটি বাস পড়ে গিয়ে প্রাণ হারায় ৩৩ জন। এভাবে একের পর এক দুর্ঘটনার স্পট হিসেবে চিহ্নিত সালেহপুর সেতুতে দুর্ঘটনা রোধে সে সময় কর্তৃপক্ষ অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তদন্তকারী একাধিক দল দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের পাশাপাশি বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ এক বছরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

গত বছরের ১০ অক্টোবর। ঢাকার বাড্ডা থেকে সাভারের উদ্দেশে ছেড়ে আসে বৈশাখী পরিবহনের ৫২ আসনের একটি বাস। তখন সকাল সোয়া ১১টা। আমিনবাজার পার হয়ে সালেহপুর সেতুর কাছে পেঁৗছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সেতুর ওপর থেকে তুরাগ নদে পড়ে তলিয়ে যায়। এ দুর্ঘটনার পর বাসের আরোহীদের মধ্যে আট থেকে ১০ জন সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়।
দুর্ঘটনার প্রায় ২৫ ঘণ্টা পর সেতুর প্রায় ২০০ গজ দূরে ৪০ ফুট পানির নিচে একটি গর্তে বাসটির সন্ধান মেলে এবং এটি উদ্ধার করা সম্ভব হয় ৫৬ ঘণ্টা পর। দুর্ঘটনার পর নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, টায়ার ফেটে যাওয়ায় বাসটি ভারসাম্য হারিয়ে তুরাগ নদে পড়ে যায়। কিন্তু বাসটি উদ্ধারের পর দেখা যায়, বাসের সব চাকাই অক্ষত রয়েছে।
বাসটির চালকের বিরুদ্ধে দুর্ঘটনার দুই দিন পর সাভার মডেল থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে বাসটি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু বাসের চালক আবদুল খালেক আজও গ্রেপ্তার হননি।
এদিকে দিনটি উপলক্ষে পরিবেশবাদী সংগঠন 'সাভার বাঁচাও আন্দোলন' আজ সালেহপুর সেতুর কাছে নিরাপদ সড়ক দাবিতে মানববন্ধন করবে। প্রতিষ্ঠানটির আহ্বায়ক সৈয়দ সাগিরুজ্জামান শাকিক কালের কণ্ঠকে বলেন, আমিনবাজারের সালেহপুর সেতুর কাছে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। অথচ আজও সেতুটির দুই ধারে কার্যকর কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রাস্তার দুই পাশে নিরাপত্তা পিলার বরাবরই মাটির সঙ্গে মিশে থাকে। কয়েক দিন আগে পিলারগুলো সোজা করা হলেও সংখ্যায় এগুলো আরো বাড়ানো দরকার। এ ছাড়া সেতুর দুই পাশে বেশ কিছু দূর পর্যন্ত লোহার রেলিং দিলে দুর্ঘটনা কমে যেত।
সচেতন নাগরিক কমিটি, সাভারের যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার হামিদ রন্জু বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের প্রশস্ততার চেয়ে সেতুটির প্রশস্ততা কম। এটিও দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ।

No comments

Powered by Blogger.