‘কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি ভয়াবহ ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে’

‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি একটি নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এটি একটি ভয়াবহ ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে।’ আজ মঙ্গলবার ডেইলি স্টার ভবনে ফেয়ার ওয়ার ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের ওপর প্রবন্ধ এবং খসড়া আইন ২০১৮’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। এসময় জেন্ডার প্লাটফর্মের পক্ষ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনের একটি প্রস্তাবিত খসড়া তুলে ধরা হয়। এ আইন- ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানী প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন ২০১৮’ নামে অভিহিত হবে। প্রস্তাবিত এই আইনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে সরকারি, বেসরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, ব্যক্তি মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীনসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রযোজ্য হবে। ওয়ার্কার্স গ্রুপ অব আইএলও’র সভাপতি ক্যাটলিনা প্যাসচিয়ার সেমিনারে সকলের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনাদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানী প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনটি দরকার কি না? তিনি বলেন, যেহেতু আপনারা এই আইনটি চান তাহলে এটা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব আমাদের সবার। ফেয়ার ওয়ার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আলেকজেন্ডার কনস্টাম বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশের সকল কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির ঘটনাগুলো বন্ধ হোক। আমরা ইতিমধ্যে কিছুটা সফলতা পেয়েছি। কিন্তু আমরা আরো বড় সফলতা চাই। কারণ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা যৌন হয়রানির ঘটনা গুলো শুনতে পাই। তিনি বলেন, এই যৌন হয়রানি বন্ধ করতে একটি আইনের প্রয়োজন। আমরা এই আইন সম্পর্কে শ্রমিক, মালিকপক্ষ, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ সকলের মতামত অত্যন্ত জরুরি। ভালো ব্যবসার জন্য কর্মক্ষেত্রে কর্মপরিবেশের উন্নয়ন খুব জরুরি। আর কর্মপরিবেশের জন্য এই আইনটি অত্যন্ত কার্যকরী। আইন হলে আমাদের সবার জন্য এটি খুব কার্যকরী হবে। তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন গার্মেন্টস শিল্প বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার একটি ভালো মাধ্যম। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য কর্মক্ষেত্রের একটি ভালো পরিবেশের প্রয়োজন। এসময় বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। আমরা যে আন্দোলন করে যাচ্ছি তার কিছুটা হলেও আমরা সফল হয়েছি। আমরা হাইকোর্টের রায়ের আলোকে একটি আইনের খসড়া তৈরি করেছি। যদিও আইন দিয়ে সব কিছু সমাধান হবে না। তবে একটি খুব প্রয়োজন। কারণ বিশ্বের সব দেশেই যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন রয়েছে। বক্তারা আরো বলেন, যৌন হয়রানির বিষয় আমাদের সচেতন হতে হবে। কারণ বর্তমানে হয়রানির ধরণ বদলে গেছে। এই আইনটা যাতে পাস হয় সেজন্য সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ফেয়ার ওয়ার ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ম্যানেজার কুন উস্টেরম, ফেয়ার ওয়ার ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্ট্রিটিভ বাবলু রহমান প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.