পশ্চিমবঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে বিজেপি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়াকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় শাসকদল তৃনমূল ও বিরোধী বিজেপি’র মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
আজ (বুধবার) রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবিতে তারা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাবেন। তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন। 
পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম, বাঁকুড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলাসহ রাজ্যের বিভিন্নস্থানে মনোনয়নকে ঘিরে তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধীদের তীব্র সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে তৃনমূল  বাধা দিচ্ছে এবং তাদেরকে মারধর করছে। পুলিশ এ ব্যাপারে যথাযথ ভূমিকা পালন করছে না বলে অভিযোগ।
তৃনমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যের উন্নয়ন ব্যাহত করতে বিরোধীরা একজোট হয়েছে। রাজ্যবাসী ভোটে তার মোক্ষম জবাব দেবে।শান্তিপূর্ণভাবেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ চলছে। সংঘর্ষ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করে এসব নির্বাচন কমিশনের দেখার বিষয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গতকাল (মঙ্গলবার) বিজেপি প্রতিনিধিদল পশ্চিমবঙ্গের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে তাদের অভিযোগের কথা জানিয়েছেন। গভর্নর কেশরিনাথ ত্রিপাঠি আজ (বুধবার) রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়ে ওই ইস্যুতে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এদিকে, গভর্নর নির্বাচন কমিশনারকে ডেকে পাঠাচ্ছেন এমন খবর আগেভাগে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের মুখ থেকে ব্যক্ত হওয়ায় গভর্নরের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এরফলে গভর্নরকে এ রাজ্যের মানুষ আর নিরপেক্ষ মনে করে না বলে মন্তব্য করেছেন পার্থ বাবু। তার প্রশ্ন গভর্নর কাকে ডাকবেন, সেটা দিলীপবাবুরা আগেভাগে জেনে যাচ্ছেন কী করে? ওই ঘটনাকে ‘অনৈতিক কাজ’ বলে অভিহিত করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
রাজ্যের উত্তর বঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ আজ বলেন, মানুষ উন্নয়ন চায়। আমরা বিগত ৭ বছরের মধ্যে মানুষের উন্নয়নের জন্য একশ’ শতাংশ কাজ করেছি। কোথাও কোনো সন্ত্রাস নেই। বিরোধীদের কোনো জনবল না থাকায় তারা অনেক জায়গাতেই প্রার্থী দিতে পারছেন না।
এদিকে, গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে সন্দেশখালির মেটিয়াখালিতে বিভিন্ন বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও বোমাবাজি করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। এ সময় সিপিএম ও বিজেপি’র দফতরেও ভাঙচুর করা হয়।ওই ঘটনার প্রতিবাদে আজ (বুধবার) সকালে এলাকার আদিবাসী নারীরা ঝাঁটা হাতে নিয়ে সন্দেশখালিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দেয়া আটকাতেই তৃনমূল আশ্রিত দুর্বৃত্তরা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। কিন্তু শাসক দল তৃণমূলের পক্ষ থেকে ওই অভিযোগকে নাকচ করে দেয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে আগামী মাসের ১, ৩ ও ৫ মে ভোট গ্রহণ হবে। ফল ঘোষণা হবে ৮ মে। ২ এপ্রিল নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। ৯ এপ্রিল পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে।

No comments

Powered by Blogger.