ঝিনাইদহে ৪ জনকে পাওয়া যাচ্ছে না

ঝিনাইদহে পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে পাঁচজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরা হলেন- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের ইব্রাহিম গাজীর ছেলে নুরু গাজী ও মৃত চানারুদ্দিনের ছেলে রেজাউল ইসলাম, কোটচাঁদপুর উপজেলার জালালপুর গ্রামের মর্তেজ বিশ্বাসের ছেলে ইমরুল হোসেন ও বলাবাড়িয়া গ্রামের মোবারক বিশ্বাসের ছেলে আলম খান এবং কোটচাঁদপুর পৌর কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ন কবির। শনিবার গভীর রাতে কোটচাঁদপুর পৌর কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ন কবিরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অন্য চারজনের সন্ধান আজও মেলেনি। জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ সোমবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে যুগান্তরকে বলেন, এ ধরনের খবর তারাও শুনেছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে কাউকে তুলে আনার কথাটি ঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি। পুলিশের পক্ষ থেকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজ করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। অপর দিকে, নিখোঁজ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে রিপন হোসেন সোমবার দুপুরে মুঠোফোনে জানান, ২২ মার্চ আনুমানিক রাত দেড়টার দিকে ৮-৯ জনের একটি দল পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে তার বাবাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছে। এ সময় আগন্তুকরা বলেন, এক আসামির বাড়ি চেনার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর তাকে বাসায় দিয়ে যাওয়া হবে। সেই থেকে কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ রেজাউল ইসলামের ছেলে আরও বলেছেন, কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে তার বাবাকে। ২৬ মার্চ বারোবাজার ফাঁড়িতে তারা তাকে দেখতে পেয়েছেন বলেও দাবি করেন। এখন আর বাবার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। নিখোঁজ ইমরুল হোসেনের স্ত্রী চম্পা খাতুন জানান, ২২ মার্চ রাত ১২টার পর পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে কয়েকজন ব্যক্তি বাড়ির দরজা খুলতে বলেন। দরজা খোলার পর ইমরুলকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর থেকে তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। কোটচাঁদপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে পুলিশ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন চম্পা খাতুন। এ ছাড়া কোটচাঁদপুরের বলাবাড়িয়া গ্রামের আলম খানকে নিজ বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
বলাবাড়িয়া গ্রামের ইউপি সদস্য মশিয়ার রহমান জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি এবং পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয়েছে। আলম খান এখনও নিখোঁজ বলে জানান তিনি। নিখোঁজের ছেলে জুবায়ের খান বলেন, তার বাবাকে মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ পরিচয় দেয়া ৮-১০ জন। এর পর থেকে তার বাবার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। কোটচাঁদপুর পৌর কলেজের শিক্ষক তাজুল ইসলাম তাজ জানান, ২৯ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি সাদা মাইক্রোবাস কলেজের পাশে দাঁড় করানো হয়। অধ্যক্ষ হুমায়ন কবিরকে ডাক দেন সাদা পোশাকধারী অস্ত্রধারী ব্যক্তিরা। মাইক্রোবাসের কাছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার দুপুরে ফোন করলে তার চাচাতো ভাই মোফাজ্জেল হোসেন জানান, ৩১ মার্চ তাকে কলেজ থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিন গভীর রাতে ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশ কার্যালয়ের কাছে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ছাড়া ২৪ মার্চ রাতে কোটচাঁদপুর উপজেলা চাঁদপাড়া গ্রামের আনারুল ইসলাম মুকুলকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার এক সপ্তাহ পর ৩০ মার্চ সকালে আটক দেখানো হয়। তার চাচা সিরাজুল ইসলাম জানান, তুলে নিয়ে যাওয়ার পর মাদক মামলায় তাকে আটক দেখানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.