এমপির বোনজামাই বলে কথা!

দু’দিন ধরে বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় এমপির বোনজামাই নুরনবী। ক্লাস ছেড়ে দল বেঁধে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে আসছেন শিক্ষকরা। অন্য শিক্ষক ও অভিভাবকদের অনেকেই এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। রোববার হাতীবান্ধা ২নং মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন শিক্ষক নুরনবী। উপজেলার ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তাকে বদলি করা হয়। তার বদলিকে কেন্দ্র করেই অনেক দূর-দূরান্তের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিশুশিক্ষার্থীদের ক্লাস না নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে উঠেপড়ে লাগেন। এ শুভেচ্ছা জানানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে অনেকেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, শিশুদের পড়ানোর পরিবর্তে যদি কোনো প্রধান শিক্ষককে শুভেচ্ছা জানানোর ঘটনাই মুখ্য হয়ে ওঠে, তাহলে তাদের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন উঠাই স্বাভাবিক। সংশ্লিষ্ট স্কুলের এক শিক্ষক একই সুরে বলেন, নিজের স্কুল ছেড়ে এসে কোনো শিক্ষককে শুভেচ্ছা জানানো কোনোভাবেই ঠিক না।
এটি অবশ্যই কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ। কিছু দিন আগে হাতীবান্ধা ২নং মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন মারা যান। এতে পদটি শূন্য হয়ে যায়। সেই থেকে মডেল ওই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানে অনেক শিক্ষকই নানা তদবির চালান। লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের ছোটবোনের জামাই নুরনবী খুব সহজে সেখানে যোগ দেন। রোববার বেলা ১১টার দিকে বিভিন্ন স্কুলের ডজনখানেক প্রধান শিক্ষককে নিয়ে তিনি যোগদান করেন। এ সময় প্রায় দুই ঘণ্টা তার কক্ষেই আড্ডা দেন শিক্ষকরা। এর মধ্যে রয়েছেন উপজেলার পূর্ব বেজগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুচ আলী, সারডুবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছফিয়ার রহমান ও গড্ডিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম। এ ধারাবাহিকতায় সোমবার দুপুরেও নুরনবীকে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন নওদাবাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরিশংকর রায়, রমণীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালেকুর রহমান ও প্রথম দিনে আসা প্রধান শিক্ষক ইউনুচ আলীও।

No comments

Powered by Blogger.