নারী নির্যাতন রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে তামিলনাড়ু-গঙ্গায় শেষ আশ্রয় ধর্ষিত তরুণীর

দিল্লিতে গণধর্ষণের শিকার তরুণীর দেহভস্ম গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শেষে তাঁর দেহাবশেষ গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। মেয়েটির পরিবারের সদস্য ছাড়াও প্রায় ৫০০ শুভাকাঙ্ক্ষী এই আনুষ্ঠানিকতায় যোগ দেয়।
এদিকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর সরকার নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৩ দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ধর্ষণসহ নারী নির্যাতনের ঘটনা প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি কঠোর আইন প্রণয়নেরও আহ্বান জানিয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার তরুণী গত শনিবার সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মারা যান। ১৩ দিন মুমূর্ষু অবস্থায় থাকার পর মৃত্যু হয় তাঁর। ধর্ষণের ঘটনায় ভারতজুড়ে বিক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। ধর্ষকদের কঠোর শাস্তিসহ নারী নির্যাতনরোধে শক্তিশালী আইন প্রণয়নের দাবি ওঠে। নিহত তরুণীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারত এবার নতুন বছরের বড় ধরনের অনুষ্ঠান এড়িয়ে গেছে।
নিহত তরুণীর শব গত রবিবার ভারতে পেঁৗছে। ওই দিনই দিল্লিতে শবদাহ করা হয়। দেহভস্ম নিয়ে তাঁর মা-বাবা ও দুই ভাই গত সোমবার বারানসির উদ্দেশে দিল্লি ছাড়েন। উত্তর প্রদেশের বাল্লিয়া জেলায় নিজের আদি ভিটায় ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পর দেহভস্ম গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হয়।
এদিকে গণধর্ষণের ঘটনায় ভারতে সমালোচনায় উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে নারীর নিরাপত্তা রক্ষায় ও হয়রানি রোধে নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে তামিলনাড়ু সরকার। গতকাল মঙ্গলবার নববর্ষের শুভেচ্ছাবাণী দেওয়ার সময় তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা ১৩ দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। জয়ললিতা বলেন, 'ধর্ষণকারীদের জন্য মৃত্যুদণ্ড বা রাসায়নিক প্রয়োগে খোজা করে দেওয়ার আইন প্রণয়ন করতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে জামিন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।' কংগ্রেসও ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে রাসায়নিক প্রয়োগে খোজাকরণ এবং ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের প্রস্তাব দেওয়ার কথা ভাবছে।
জয়ললিতা জানান, নারীদের ওপর যৌন নিপীড়ন বন্ধে তাঁর প্রাদেশিক সরকার 'গুণ্ডা আইন' প্রণয়ন এবং তামিলনাড়ুর সব জেলায় দ্রুত বিচার আদালত গঠনের কাজ করছে। গুণ্ডা আইনের আওতায় যৌন নির্যাতনকে গুরুতর অপরাধ বিবেচনা করা হবে এবং পুলিশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা এর তদন্ত করবেন। নারী নিপীড়নকারীদের শনাক্ত করতে সব সরকারি ভবনে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। নির্যাতিত নারীদের চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করারও পরিকল্পনা রয়েছে তামিলনাড়ু সরকারের। সূত্র : দ্য হিন্দু।

No comments

Powered by Blogger.