ফিসক্যাল ক্লিফ- শেষ মুহূর্তে সমঝোতা

যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক সংকট বলে পরিচিত ‘ফিসক্যাল ক্লিফ’ এড়াতে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে শেষ মুহূর্তে সমঝোতা হয়েছে। বিত্তশালীদের কর বাড়িয়ে ও মধ্যবিত্তদের কর স্থায়ীভাবে কম রেখে একটি বিল গত মঙ্গলবার রাতে সিনেটে পাস হয়েছে।
তবে সিনেটরদের সিদ্ধান্ত প্রতিনিধি পরিষদে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন আইন না হলে নতুন বছরে কর বৃদ্ধি এবং সরকারি ব্যয় হ্রাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হয়ে যাবে। এটিই ফিসক্যাল ক্লিফ বলে পরিচিত। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই সংকট এড়ানো সম্ভব না হলে দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হবে; যার প্রভাব পড়বে সারা বিশ্বে। নতুন বছরের প্রথম দিন সরকারি ছুটির দিন বলে ফিসক্যাল ক্লিফের প্রভাব সারা বিশ্বে কেমন হতে পারে—তার ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই মার্কিন কংগ্রেসও এই সংকট এড়াতে নতুন একটি আইন করতে কিছুটা সময় পেল। এই সময়ের মধ্যে আইন করে তা পেছনের তারিখে অনুমোদন দেখালেও আইনি কোনো জটিলতা সৃষ্টি হবে না। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেলে প্রতিনিধি পরিষদের অধিবেশন শুরু হবে।
ফিসক্যাল ক্লিফ এড়াতে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে নজিরবিহীন অধিবেশনে স্থানীয় সময় রাতে একটি বিল অনুমোদন দেয়। ক্ষমতাসীন দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নিয়ন্ত্রণে থাকা সিনেটে বিলের পক্ষে ৮৯ ও বিপক্ষে ৮ ভোট পড়ে। এখন এই বিল কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হতে হবে। কিন্তু প্রতিনিধি পরিষদ রিপাবলিকান পার্টির নিয়ন্ত্রণে থাকায় বিলটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। তবে আশাবাদীরা বলছেন, সিনেটে দুই দলের মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাস করতে তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।
সিনেটে ভোটের পর এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, ‘ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকান—কারও চাওয়া পূরণ হয়নি। এই সমঝোতা দেশের জন্য। এখন আর দেরি না করে প্রতিনিধি পরিষদের উচিত সিনেটে পাস হওয়া বিলটি পাস করা।’
ওবামার বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের অভিযোগ, ফিসক্যাল ক্লিফের কারণে কর বৃদ্ধি নিয়ে ওবামা যতটা উদ্বিগ্ন, সরকারের ব্যয় হ্রাসের বিষয়টি নিয়ে তিনি ততটাই উদাসীন।
মার্কিন কংগ্রেস নতুন আইন করতে ব্যর্থ হলে বিশ্ববাজার অস্থির হয়ে উঠবে। মন্দা বাড়বে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতেও। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০০৮-০৯ সালে যে আর্থিক মন্দা দেখা দেয়, তা কাটিয়ে উঠতেই দেশটি এখনো কাজ করে যাচ্ছে। এখন কংগ্রেস ফিসক্যাল ক্লিফ এড়াতে ব্যর্থ হলে আবার সেই পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হ্যারি রিড বলেন, ‘সিনেটে অনুমোদন হওয়া মানেই আমাদের আলোচনা বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়। বিষয়টি নিয়ে আরও কাজ করতে হবে। কিছু করতে না পারলে আমরা সত্যিকার অর্থেই চরম অর্থনৈতিক মন্দায় পড়ে যাব।’ এএফপি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.