আলোচিত হাতিরঝিল প্রকল্প আজ উদ্বোধন- কিছু কাজ এখনও বাকি

 বহুল আলোচিত হাতিরঝিল প্রকল্পের উদ্বোধন হচ্ছে আজ। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটির উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পরেও প্রকল্পের কিছু কাজ বাকি থাকবে, যা চলমান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হবে।
গত ১৫ ডিসেম্বর প্রকল্পটির উদ্বোধনের কথা ছিল। এই দিন প্রধানমন্ত্রী সময় দিতে না পারায় প্রকল্পটির উদ্বোধনের দিন কিছুটা পিছিয়ে যায়। বিভিন্ন রকমের ফুলের গাছ লাগিয়ে গোটা হাতিরঝিল এলাকাকে মনোরম সাজে সাজানো হয়েছে। রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নূরুল হুদা জানান, সাধারণের জন্য পার্ক, মুক্তমঞ্চসহ বিনোদনের সব কাজ এখনও শেষ হয়নি। উদ্বোধনের পর প্রকল্পভুক্ত এলাকা জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে।
২০০৪ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মাধ্যমে এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। ২০০৭ সালে শুরু হওয়া ‘হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি খাল সমন্বিত উন্নয়ন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এলজিইডি বিভাগ ও ঢাকা ওয়াসা। আর পরামর্শক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
প্রকল্প পরিচালক ও রাজউকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এএসএম রায়হানুল ফেরদৌস জানান, পান্থপথ থেকে রামপুরা ব্রিজ হয়ে বৃত্তাকার সংযোগ সড়ক তৈরি সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পভুক্ত চারটি ব্রিজ, চারটি ওভারপাস, ৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার সার্ভিস রোড, ৮ কিলোমিটার এক্সপ্রেস রোড, ২৬০ মিটার ভায়াডাক্ট এবং প্রায় ১২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে কয়েক মিনিটেই কারওয়ান বাজার থেকে রামপুরা পৌঁছানো যাবে। গুলশান, বাড্ডা যেতে লাগবে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট।
সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সাঈদ মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, মূল কাজ শেষ হয়েছে। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে মাত্র কয়েক মিনিটেই রামপুরা থেকে কারওয়ান বাজার বা কারওয়ান বাজার থেকে গুলশান হয়ে বাড্ডা পৌঁছানো যাবে। এতে তেজগাঁও, গুলশান, বাড্ডা, রামপুরা, মৌচাক ও মগবাজারের অসহনীয় যানজট অনেকাংশে কমে আসবে। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটি সম্পাদনের মূল দায়িত্বে ছিল রাজউক ও এলজিইডি বিভাগ। কিন্তু প্রকল্প সম্পন্ন করতে গিয়ে ৭৬টি মামলা মোকাবেলা করতে হয়েছে রাজউককে, যার ৭০টি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স ১৬ ইসিবিকে সম্পূর্ণভাবে প্রকল্প সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। বর্তমানে তাদের সহায়তা করছে রাজউক, এলজিইডি ও ওয়াসা। চালু হলেও প্রকল্পটি রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রাজউক, ঢাকা ওয়াসা ও এলজিইডি বিভাগ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন একটিকে অথবা হাতিরঝিল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নামে একটি স্বতন্ত্র সংস্থা গঠন করে হাতিরঝিল প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটির উদ্বোধন করবেন গুলশান-১ উন্মুক্ত নম্বরের শূটিং ক্লাবের পাশে স্থাপিত উদ্বোধনী ফলক উম্মোচনের মধ্য দিয়ে সবার জন্য হাতিরঝিল হবে। আর এখানেই তৈরি করা হয়েছে বিরাট উদ্বোধনী প্যান্ডেল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।

No comments

Powered by Blogger.