শিবির ফের রগ কাটার রাজনীতি শুরু করেছে- নিষিদ্ধের দাবি সংসদে

 জামায়াত সমর্থিত ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধের দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের তা-ব, ছাত্রলীগের এক কমর্ীকে হত্যা করে ম্যানহোলে ফেলে রাখা,
রগ কেটে অসংখ্য ছাত্রকে আহত করার ঘটনায় ােভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সিনিয়র পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও এ্যাডভোকেট ফজলে রাবি্ব মিয়া বুধবার পয়েন্ট অব অর্ডারে এই দাবি জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি জানান।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও ফজলে রাবি্ব ােভ প্রকাশ করে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরম্নর তৎপরতায় জামায়াত-শিবির দিশেহারা হয়ে ফের রগ কাটার রাজনীতি শুরম্ন করেছে। রাজনৈতিক সিদ্ধানত্ম নিয়েই এরা দেশের স্থিতিশীলতা বিঘি্নত এবং মতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে বিব্রত করতেই দেশের নানা স্থানে এসব নারকীয় তা-ব চালাচ্ছে। যারা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে লাশ ম্যানহোলে ঢুকিয়ে রাখে, রগ কাটে_ তাদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই।
জামায়াত-শিবিরের তা-ব একাত্তরে তাদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কথাই মনে করিয়ে দেয়।
পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অভিযোগ করেন, যুদ্ধাপরাধী নিজামী রাজশাহীতে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আসার পরই রাজশাহীতে এমন নারকীয় ঘটনা ঘটেছে। একই দিন ঢাকাতেও তিনটি নারকীয় হত্যাকা- ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রমাণ হয়, রাজশাহী ও ঢাকার ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা, একই গোষ্ঠী ঘটিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে। সময় এসেছে এটা স্পষ্ট করার গণতন্ত্রের নামে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক অধিকার থাকবে কিনা? গণতান্ত্রিক অধিকার চাইলে তাদের অবশ্যই হত্যা, অস্ত্র, রগ কাটার ঘৃণ্য রাজনীতি ছেড়ে আসতে হবে।
আছরের নামাজের বিরতির পর প্যানেল চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন স্পীকারের আসনে বসার পরই সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পয়েন্ট অব অর্ডারে ফোর নেন। তাঁর বক্তব্য শেষে একই বিষয়ে সরকারী দলের এ্যাডভোকেট ফজলে রাবি্ব মিয়াসহ বেশ ক'জন সংসদ সদস্য ফোর চাইলে প্যানেল চেয়ারম্যান আর কাউকে ফোর দেননি। পরে স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাবি্ব মিয়াকে ফোর দেন।
পরে স্পীকার এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অতি দ্রম্নত এ বিষয়ে সংসদে বিবৃতি দেবেন বলে আশা করি। ফোর নিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত রাজশাহীতে শিবিরের তা-বের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, শিবির ছাত্র নামের কলঙ্ক। এরা কারা? এরাই নিজামীদের উত্তরসূরি। এই ঘাতকরাই একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে জনগণের বিরম্নদ্ধে দাঁড়িয়ে গণহত্যা চালিয়েছে, নারী ধর্ষণ ও অগি্নসংযোগ করেছে। এরাই যুদ্ধাপরাধী। দেশের সকল মানুষের কাছে তারা ঘৃণার পাত্র।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভাই, অপর ভাইকে হত্যা করে ম্যানহোলে ঢুকিয়ে রাখতে পারে না। কোন ছাত্র আরেক ছাত্রের রগ কাটতে পারে না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সারারাত পুলিশের ওপর তারা গুলি চালাল। যুদ্ধেেত্র তৈরির মতো এত অস্ত্র তারা কোথায় পেল? তিনি বলেন, আজ সিদ্ধানত্ম নিতে হবে এই নরঘাতকদের ছাত্র বলা যাবে কী যাবে না। এদের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বিশ্বের কোথাও অস্ত্র হাতে গণতান্ত্রিক অধিকার দেয়া হয় না। তাই গণতান্ত্রিক রাজনীতি গণতান্ত্রিক ধারায় হতে হবে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী নিজামী রাজশাহীতে গিয়ে নানা উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। একই দিন ঢাকায় তিনটি নারকীয় হত্যাকা- ঘটেছে। রাজশাহী ও ঢাকার নৃশংসতা একই সূত্রে গাথা, একই চক্র জড়িত। দেশকে অস্থিতিশীল করতে এ শত্রম্নরা রাজনৈতিক সিদ্ধানত্ম নিয়েই এসব ঘটাচ্ছে।
তিনি অবিলম্বে ছাত্র শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, হত্যা করে, রগ কাটবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে তা-ব চালিয়ে বন্ধ করে দেবে- এটা মেনে নেয়া যায় না। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বহাল রাখতে হলে তাদের হত্যা, সন্ত্রাস, অস্ত্র ও রগ কাটার ঘৃণ্য রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
এ্যাডভোকেট ফজলে রাবি্ব মিয়া বলেন, একাত্তরে জামায়াত-শিবির শুধু স্বাধীনতার বিরোধিতাই করেনি, ৩০ লাখ মুক্তিযোদ্ধা ও দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জত হরণ করেছে। এরা আবার রগ কাটার রাজনীতি শুরম্ন করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে জাতি যখন ঐক্যবদ্ধ, তখন জামায়াত-শিবির দিশেহারা হয়ে হত্যার রাজনীতি শুরম্ন করেছে। এদের বিষদাঁত ভেঙ্গে দেয়া উচিত। এদের রাজনীতি বন্ধ করা দরকার।
কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন্নেসা তালুকদার বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া ও জামায়াতের আমির নিজামীকে 'খুনী, নরঘাতক' আখ্যায়িত করে বলেন, আর কত রক্ত তাদের প্রয়োজন? আর কত রক্তের হোলি খেলা খেলবে? আর কত মায়ের বুক খালি করতে চায় ওরা। আর মাফ নয়, এদের দৃষ্টানত্মমূলক শাসত্মি চাই।

No comments

Powered by Blogger.