আবারও বেড়েছে মূল্যস্ফীতি-বাড়ছে খাদ্য-বহির্ভূত পণ্যের দাম by আরিফুর রহমান

ক্টোবরে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও নভেম্বরে তা আবার বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, অক্টোবরে জাতীয় মূল্যস্ফীতির হার ১১.৪২ শতাংশ থাকলেও নভেম্বরে তা বেড়ে ১১.৫৮ শতাংশে পেঁৗছেছে। মূল্যস্ফীতির উত্তাপ শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি। খাবার জিনিসের দাম কিছুটা কমলেও খাদ্য-বহির্ভূত পণ্যের দাম বাড়ার কারণে শহর ও গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে জানান বিবিএসের কর্মকর্তারা।
গতকালই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে মাসিক মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিএস। এর আগে ওয়েবসাইটে মূল্যস্ফীতির তথ্য দেওয়া হতো। এখন থেকে প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে মূল্য পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবে সরকারি এ পরিসংখ্যান সংস্থা।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত তথ্যে দেখা গেছে, অক্টোবরে খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশ থাকলেও নভেম্বরে ১০.১৬ শতাংশে পেঁৗছেছে। এক মাসের ব্যবধানে খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার দুই অঙ্কের ঘরে ওঠার কারণ হিসেবে বিবিএস বলেছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রভাব পড়েছে পণ্যের দামে। এক মাসের ব্যবধানে খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ১.১৬ শতাংশ।
তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি অক্টোবরের চেয়ে নভেম্বরে কিছুটা কমেছে। অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২.৮২ শতাংশ। নভেম্বরে তা ১২.৪৭ শতাংশে নেমেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিবিএস মহাপরিচালক শাহজাহান আলী মোল্লা বলেছেন, মাছ, মাংস, ফল, দুধ, দুগ্ধজাত সামগ্রীসহ অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জাতীয় মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণ হিসাবে পরিধেয় বস্ত্রাদি, জ্বালানি তেল, বাড়িভাড়া, বাসভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি ও লন্ড্রিসামগ্রীর দাম বাড়াকে দায়ী করেছেন বিবিএসের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং উইংয়ের যুগ্ম পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
বিবিএসের তথ্যে আরো দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। অক্টোবরে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি ১১ শতাংশ থাকলেও নভেম্বরে তা বেড়ে ১১.৩৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রামাঞ্চলে খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হারও বেড়েছে। অক্টোবরে খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশ থাকলেও নভেম্বরে তা বেড়ে ১০.৪৬ শতাংশে পেঁৗছেছে। তবে গ্রামাঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১১.৯৪ শতাংশ থাকলেও নভেম্বরে তা ১১.৮০ শতাংশে নেমে এসেছে।
বিবিএসের হিসাবে অবশ্য শহরে মূল্যস্ফীতির মাত্রা কমেছে। অক্টোবরে শহরের মূল্যস্ফীতি ১২.৪৭ শতাংশ থাকলেও নভেম্বরে তা ১২.১১ শতাংশে নেমে এসেছে। এ ছাড়া শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতিও কমেছে। অক্টোবরে শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪.৮৭ শতাংশ থাকলেও নভেম্বরে তা ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে শহরে খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। অক্টোবরে খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৯.১৭ শতাংশ থাকলেও নভেম্বরে তা বেড়ে ৯.৪৭ শতাংশে পেঁৗছেছে।
এ বছরের সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি পেঁৗছেছিল ১১.৯৭ শতাংশে, যা ছিল সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। অক্টোবরে কিছুটা কমে ১১.৪২ শতাংশে নামলেও নভেম্বরে তা আবার বেড়েছে .১৬ শতাংশ। গত বছরের নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭.৫৪ শতাংশ।

No comments

Powered by Blogger.