সুইডেনে প্রত্যর্পণ-অ্যাসাঞ্জের আইনি লড়াই চলবে

সুইডেনে প্রত্যর্পণের ব্যাপারে ব্রিটিশ হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিলের আবেদন করার অনুমতি পেয়েছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। গতকাল সোমবার ব্রিটিশ হাইকোর্ট অ্যাসাঞ্জকে এ অনুমতি দেন। এর আগে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ বিচারের জন্য অ্যাসাঞ্জকে সুইডেনে প্রত্যর্পণের পক্ষে নিম্ন আদালতের দেওয়া রায় বহাল রেখেছিলেন হাইকোর্ট। ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে (৪০) বিচারের মুখোমুখি করতে চাচ্ছে সুইডেন। ২০১০ সালের আগস্টে সুইডেনে এক সফরের সময় অ্যাসাঞ্জ ইন্টারনেটভিত্তিক বিকল্পধারার সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের দুই স্বেচ্ছাসেবীকে যৌন নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ করে দেশটি। গত ডিসেম্বরে ব্রিটেন অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করে। লন্ডনের একটি কারাগারে ৯ দিন আটক রাখার পর তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। এর পর থেকে তিনি ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে এক সমর্থকের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আগ্রাসন-সংক্রান্ত প্রায় চার লাখ এবং আফগানিস্তান যুদ্ধবিষয়ক ৭৭ হাজার গোপন তথ্য ফাঁস করে উইকিলিকস। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে বিভিন্ন দেশ থেকে মার্কিন কূটনীতিকদের পাঠানো প্রায় আড়াই লাখ গোপন তারবার্তাও প্রকাশ করে দেয় ওয়েবসাইটটি।
গত ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটেনের একটি নিম্ন আদালত অ্যাসাঞ্জকে সুইডেনের কাছে হস্তান্তরের রায় দেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেছিলেন অ্যাসাঞ্জ। কিন্তু গত ২ নভেম্বর তা খারিজ করে অ্যাসাঞ্জকে সুইডেনে হস্তান্তরের রায়ই বহাল রাখেন হাইকোর্ট। তবে রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে চেয়ে অ্যাসাঞ্জ ও তাঁর আইনজীবীরা হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন। গতকাল ওই আবেদনেরই শুনানি হয়।
হাইকোর্ট অ্যাসাঞ্জকে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার অনুমতি দেননি। এর পরিবর্তে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করার অনুমতি দিয়েছেন। আবেদন করার জন্য অ্যাসাঞ্জকে ১৪ দিন সময় দিয়েছেন আদালত। 'গ্রেপ্তারের বিষয়টি বৈধ ছিল কি না' এবং 'তাঁকে আসলেই অভিযুক্ত বলা যায় কি না'_এ দুটি প্রশ্নের ভিত্তিতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে চান অ্যাসাঞ্জ। সুপ্রিম কোর্টে আবেদন ব্যর্থ হলে অ্যাসাঞ্জ মামলাটি ফ্রান্সের স্ত্রাসবুর্গে ইউরোপিয়ান মানবাধিকার বিষয়ক আদালতে তুলতে পারবেন। সেখানে রায় হওয়ার আগ পর্যন্ত ব্রিটেনেই থাকতে পারবেন তিনি। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা।

No comments

Powered by Blogger.