লোকসান এড়াতে আড়তেই মজুদ মিরসরাইয়ের চামড়া by মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন,

ন্তর্জাতিক মন্দার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাইর ট্যানারি শিল্পে। লোকসান এড়াতে ব্যবসায়ীরা ক্রয় করা চামড়া মজুদ করে রেখেছেন আড়তেই। ফলে এক সপ্তাহ আগে সম্পন্ন হওয়া কোরবানির পশুর বেশির ভাগ চামড়া এখনো লবণজাতকরণের মধ্যে পড়ে আছে। শহরের ট্যানারিগুলো সহনীয় মূল্য দিতে রাজি হলেই বিক্রি করা হবে চামড়াগুলো।


এদিকে এবার এ উপজেলায় কোরবানির পশুর চামড়া বিকিকিনি বাবদ লেনদেন হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এ বছর চামড়া সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার। এর মধ্যে গরুর চামড়া রয়েছে প্রায় ২০ হাজার, বাকিগুলো ছাগলের। উপজেলার বৃহৎ তিন আড়তদারের পাশাপাশি এবার মাঠপর্যায়ে চামড়া সংগ্রহে নিযুক্ত ছিলেন কমপক্ষে ১৫ জন প্রান্তিক ব্যবসায়ী। তবে আড়তদারদের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও লাভবান হয়েছেন। তুলনা অনুযায়ী লাভবান হতে পারেননি চামড়া বিক্রেতা এবং বড় আড়তদাররা। উপজেলার তিনটি আড়তেই এখনো অধিকাংশ চামড়া লবণজাতকরণ করে মজুদ করে রাখার দৃশ্য দেখা গেছে। মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারের আড়তদার মো. শাহ আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, তিনি এ বছর গরু ও ছাড়লের চামড়া কিনেছেন দুই হাজার। কিন্তু যে দামে তিনি কিনেছেন, সেই দামও দিতে চাইছে না শহরের ট্যানারিগুলো। ফলে বড় মাপের ক্ষতির আশঙ্কা থেকে রেহাই পেতে তিনি আড়তেই মজুদ করে রেখেছেন চামড়াগুলো।
সারা বছর চামড়া ব্যবসার একটি বৃহত্তর অংশ কোরবানির ঈদ। এ ঈদকে লক্ষ্য করে টিকে থাকে তাঁদের ব্যবসা। এ মৌসুমে ক্ষতির মুখে পড়লে পুরো ব্যবসায় ধস নামে উল্লেখ করে শাহ আলম আরো বলেন, আড়তে মজুদ করে রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে শতাধিক বস্তা লবণ। শাহ আলম ছাড়াও মিরসরাইয়ের মিঠাছড়া বাজারে কামাল উদ্দিন, জসীম উদ্দিন ও মো. মনির তাঁদের আড়তে সংগ্রহ করেছেন প্রায় চার হাজার চামড়া। বারইয়াহাট পৌরসভার তাহের আহাম্মদ তাঁর আড়তে সংগ্রহ করেছেন সহস্রাধিক পিস চামড়া। তাঁরা লবণজাতকরণের মাধ্যমে চামড়াগুলো মজুদ করে রেখেছেন।
আড়তদাররা জানান, প্রতিটি গরুর চামড়া এক-দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন কোরবানিদাতারা। তাঁদের কাছ থেকে আড়তদাররা আরো চড়া মূল্যে কিনেছেন। ফলে কেনা দামে ট্যানারিতে চামড়া সরবরাহ করা নিয়ে আড়তদাররা শঙ্কিত। সূত্র জানায়, সরকার ও বিভিন্ন ট্যানারি মালিক কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে কোরবানির পশুর চামড়া বিকিকিনি হয়নি এ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এ ক্ষেত্রে প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোরবানিদাতাদের কোনো ধরনের জটিলতা সৃষ্টি না হলেও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন আড়তদাররা। এর ফলে বাড়তি দামে কেনা চামড়া ট্যানারিতে সরবরাহ করলে উপযুক্ত দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, কাঁচা চামড়ার আড়তদাররা এলাকাভিত্তিক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেনার পর তা নির্ধারিত গুদামে নিয়ে যান। লবণ মাখিয়ে তা আগামী দুই সপ্তাহ কিংবা মাসখানেক পর্যন্ত গুদামে সংরক্ষণ করা হবে। এরপর দরকষাকষি করে ট্যানারির মালিকদের কাছে সরবরাহ করা হবে।
 

No comments

Powered by Blogger.