ফারজানাকে 'রেড স্যালুট'

যৌতুক এক ধরনের সামাজিক ব্যাধি। এই দুরারোগ্য ব্যাধির নিরীহ শিকার হচ্ছে আমাদের দেশের হাজার নয় লাখ লাখ নারী। কোনো ছবকেই কাজ হচ্ছে না। নিয়ম আছে, আইন আছে_ তাতে কী! কে মানছে, কে শুনছে? বিয়ের আগে যৌতুক না পেলে বিয়ে ভেঙে দেওয়া এবং বিয়ের পর যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে নির্মম অত্যাচার ও হত্যার ঘটনা আমাদের দেশে অহরহ ঘটছে।


ক্ষেত্রবিশেষে বিচার হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে এসব ঘাতক পাষণ্ড কাপুরুষ। কয়েক মাস আগে আমার বোন নাদিয়াকে হত্যা করে লাশ গাড়িতে নিয়ে ওর স্বামীর ঢাকা শহর ঘুরে বেড়ানোর লোমহর্ষক ঘটনা সমকালে ছবিসহ প্রকাশিত হয়েছিল। বিয়ের পর এই নিষ্ঠুর কাপুরুষ স্বামী নাদিয়াদের একমাত্র সম্বল বরিশালের বাড়িটি 'যৌতুক' হিসেবে লিখিয়ে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন অত্যাচার চালায়। বাড়িটি না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আমার বোনটির জীবন কেড়ে নিয়েছিল স্বামী নামের এই লোভী কাপুরুষটি। সমকালের এই রিপোর্ট এবং পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত ফলোআপের জন্য আমরা সমকাল পরিবারের কাছে কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশে যৌতুকের বিরুদ্ধে এক জ্বলন্ত প্রতিবাদের নাম ফারজানা নিপা। নিপার ভেতর আগুন আছে। আর আজ নিজের বিয়ে ভেঙে দিয়ে যৌতুকের প্রতিবাদে বিয়ের আসন থেকে উঠে যাওয়ার মতো সাহসের যে আগুন তিনি ছড়িয়ে দিলেন, আমাদের প্রত্যাশা, সে আগুনের জ্বলন্ত শিখায় সাহসী হয়ে উঠবে দেশের লাখ লাখ তরুণী প্রাণ। সংসদ উপনেতা আওয়ামী লীগ নেত্রী সাজেদা চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ আর অভিনন্দন জানিয়ে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিপাকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার। সৎভাবে বেঁচে থাকার একটা উপায় করে দিয়ে আমাদের অসুস্থ সমাজের অসুস্থ মানুষদের চোখে আঙুল দিয়ে এই সত্যটি প্রতিষ্ঠা করতে হবে যে, নিপা আজ আর একা নয়_ নিপার মতো সাহসী মেয়েদের পাশে আপনাদের মতো বিবেকবান মানুষ আছেন, সমাজ আছে, সরকার আছে, রাষ্ট্র আছে। আছে গোটা দেশ। নিপাকে দূর থেকে আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন। রেড স্যালুট
টু নিপা।
ইকবাল হাসান
কানাডা
এদের দায়িত্ব কি কেউ নেবে না?
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জুতা তৈরির কাঁচামাল আর নতুন জুতা বানানোর জন্য জেলাসহ সারাদেশেই ইতিমধ্যে বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে। বেশিরভাগ কারখানাতেই আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত সুবিধা নেই, কিংবা থাকলেও মালপত্রের ঠাসাঠাসিতে বেশিরভাগ জানালা বন্ধ থাকে। আশঙ্কার কথা হলো, এখানে কর্মরত অধিকাংশ শ্রমিকই ৮-৯ কিংবা ১০-১২ বছর বয়সের। এরই মধ্যে শিশুরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। সকাল ৭টা থেকে কাজ শুরু, চলে বিরামহীনভাবে রাত ৮টা পর্যন্ত, কখনও অনেক রাত পর্যন্ত। কাজ শেষে কারখানার মধ্যেই মালপত্রের সঙ্গে এবং বড় শ্রমিকদের সঙ্গে ঘুমানোর আয়োজন। কারখানার বাইরে ওদের বয়সী শিশুরা খেলাধুলা করে, দল বেঁধে স্কুলে যায়। জুতা কারখানার শিশুরা শুধুই চেয়ে থাকে আর নতুন জুতায় গাঁথুনি দিয়ে যায় অন্যকে সাজাবার জন্য। শুধু তাই নয়, বিপজ্জনক মেশিনারিজ দিয়ে কাজ করতে গিয়ে কেউ কেউ আঘাত পায়, হাত-পা কাটে। কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জুতার কারখানায় নিয়োজিত শিশুরাও কি তবে এক ধরনের পুতুল? ওদের কষ্ট যেন শিশু অধিকার বা শিশুশ্রমের আইনকে স্পর্শ করতে পারে না। স্পর্শ করুক এটা হয়তো অনেক শিশু শ্রমিকও চায় না। কারণ তারা জানে, তারা কাজ না করলে তাদের অভুক্ত থাকতে হবে। তাই বলে কি সঠিক পুনর্বাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে অবহেলিত এই শিশুদের আলোকিত মানুষ তৈরি করার দায়িত্ব কেউ নেবে না?
সুমিত বণিক
কিশোরগঞ্জ
রূপসী বাংলাদেশ
এমন অনেকে আছেন যারা বাংলাদেশ পুরোপুরি দেখেননি অথচ বিদেশে ঘুরতে যান। তাদের বলছি, আগে বাংলাদেশ দেখেন, তারপর ভালো না লাগলে বিদেশ যান। অনেকে আছেন দেশ সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করে। এটা ঠিক না। আমরাই যদি আমাদের দেশকে ভালো না বাসি তাহলে বিদেশিরা আমাদের দেশে আসবে কেমন করে? প্রতিটি মানুষের উচিত দেশকে সম্মান করা। অন্য দেশগুলোর উন্নতির প্রধান কারণ হচ্ছে সেসব দেশের মানুষের তাদের দেশের প্রতি ভালোবাসা। তাদের মধ্যে দেশপ্রেম আছে। আমরাও যদি আমাদের দেশকে ভালোবাসি এবং অন্য দেশের প্রতি নির্ভরশীলতা কমাই, তাহলে আমাদের দেশের উন্নতি নিশ্চিত। আসুন আমরা নিজের দেশকে ভালোবাসি, দেশকে সম্মান করি এবং আমাদের সন্তানদেরও দেশকে ভালোবাসার শিক্ষা দেই।
রফিকুল ইসলাম সাগর
বনানী, ঢাকা

No comments

Powered by Blogger.