সময়ের প্রতিধ্বনি-সার্ক এবং চীন নীতিতে ভারতের নাটকীয় মোড় by মোস্তফা কামাল

প্রতিষ্ঠার আড়াই দশক পরও দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) নিয়ে নানা রকম কথাবার্তা শোনা যায়। সার্ককে দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানদের ক্লাব বলে তিরস্কার করা হয়। শুধু তা-ই নয়, অনেকেই বলে থাকেন, সার্কের নেতারা বছরে একবার বনভোজন পার্টিতে যোগ দেন; তারপর আর কোনো কাজ হয় না। সার্ক সহযোগিতার কথা কেবল মুখে বলা হয়, ভালো ভালো সিদ্ধান্তও হয়, কিন্তু বাস্তবায়ন নিয়ে কেউ ভাবেন না।


এ জন্য বিশেষজ্ঞমহল দায়ী করে ভারত ও পাকিস্তানকে। এ দুই দেশের পারস্পরিক বিরোধের কারণে সার্ক বারবার হোঁচট খাচ্ছে।
দুই দেশের বিরোধের কারণে বিশেষজ্ঞমহল থেকেও বারবার বলা হয়েছিল, দ্বিপক্ষীয় ইস্যু সার্কের বাইরে রেখে অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশকে নিয়ে গঠিত আঞ্চলিক জোট আসিয়ান সফল জোটে পরিণত হয়েছে। অথচ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর চেয়ে আসিয়ান জোটের দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সমস্যা অনেক বেশি। তবে আসিয়ান জোটে রাজনৈতিক বিষয় নিয়েও আলোচনার সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সার্ক জোটেও রাজনৈতিক বিষয় আলোচনার সুযোগ কেন থাকবে না, তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলে আসছেন।
আমরা দেখে আসছি, ভারত ও পাকিস্তানের বিরোধ তথা পারমাণবিক শক্তি প্রদর্শনের খেসারত দিয়েছে সার্ক। এ কারণে বেশ কয়েকবার সার্ক সম্মেলন স্থগিতও হয়েছে। তার পরও সার্কের উদ্যোক্তা সদস্য বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপ ও ভুটানের বিশেষ আগ্রহের কারণে আঞ্চলিক জোটটি কিছুটা হলেও অগ্রসর হয়েছে। কয়েক বছর ধরে ভারত-পাকিস্তানও সার্কের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারছে। দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল চুক্তি (সাফটা) সইয়ের পর এর বাস্তবায়নপ্রক্রিয়াও অনেক দূর এগিয়েছে। তা ছাড়া উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোও বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছে। সেই আগ্রহের অংশ হিসেবেই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ সার্কের পর্যবেক্ষক হিসেবে সম্পৃক্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই আফগানিস্তান সার্কের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আরো কয়েকটি দেশ সার্কের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইছে।
একটি বিষয় লক্ষণীয়, সার্কের সদস্যসংখ্যা এখন ৮। অথচ পর্যবেক্ষকসংখ্যা ৯। পর্যবেক্ষক দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মিয়ানমার, মরিশাস, ইরান, অস্ট্রেলিয়া এবং বৃহত্তর আঞ্চলিক জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সার্কের ব্যাপারে এসব দেশ ও সংস্থার বিশেষ আগ্রহের কারণ হচ্ছে, এ অঞ্চলের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। এ অঞ্চলে রয়েছে বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ।
পানিসম্পদ কাজে লাগিয়েও অঞ্চলটি দ্রুত সমৃদ্ধিশালী হতে পারে। শুধু তা-ই নয়, আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়ে এ অঞ্চল বিশ্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। আমরা দেখে আসছি, সার্ক নেতারা বছরের পর বছর দারিদ্র্য বিমোচন ও সন্ত্রাস দমনের ব্যাপারে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করে আসছেন। কিন্তু সেই অঙ্গীকার লাল ফিতার দৌরা@ে@@@্য আটকে থাকছে; আলোর মুখ দেখছে না। এ কারণেই এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
সার্কের মূল সমস্যাই হচ্ছে, সিদ্ধান্ত ও অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়িত হয় না। সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কেউ অগ্রসর হয় না। আমরা দেখেছি, অনেক দেনদরবারের পর গুরুত্বপূর্ণ কিছু দেশকে পর্যবেক্ষক করা হলো। কিন্তু সার্কে পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা কী হবে, সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। সার্কের কোনো দেশ এ বিষয়ে কোনো প্রস্তাব পর্যন্ত দেয়নি। পর্যবেক্ষকদের কাছ থেকেও কোনো প্রস্তাব পাওয়া যায়নি। ফলে পর্যবেক্ষকরা সার্ক সম্মেলন চলাকালে প্রতিনিধি পাঠানো ছাড়া আর কিছুই করছে না। এত দিনে কেন পর্যবেক্ষকদের ব্যাপারে কোনো নীতিমালা করা হলো না, তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়।
অবশ্য সর্বশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েই অস্ট্রেলিয়া সার্ক জোটকে ২০ মিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এ অর্থ সার্কের বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয় করা হবে। এ ছাড়া সার্ক দেশগুলোর জন্য মাস্টার্স পর্যায়ে ২৯৭টি বৃত্তি দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে দেশটি। অন্য আট পর্যবেক্ষক দেশ ও জোট পর্যবেক্ষক মর্যাদা পেয়েছে অস্ট্রেলিয়ার অনেক আগে। কিন্তু এ ধরনের উদ্যোগ কোনো দেশ নেয়নি।
বলা হয়ে থাকে, কোনো কোনো দেশ রাজনৈতিক কারণে সার্কের পর্যবেক্ষক হয়েছে। সার্ক নেতারা সেটা যদি উপলব্ধি করতে পারেন, তাহলে পর্যবেক্ষক করার প্রয়োজন কী ছিল! চীন অনেক আগে থেকেই সার্কের সদস্য হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছিল। এর যৌক্তিক কারণও রয়েছে। বড় অর্থনৈতিক শক্তির দেশ চীন সার্ক অঞ্চলের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সার্ককে শক্তিশালী ও কার্যকর আঞ্চলিক সহযোগিতা নিশ্চিত করতে চীন বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করতে পারে। বিশেষ করে এ অঞ্চলের অবকাঠামো এবং সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম। সার্কের স্বার্থেই চীনকে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। তাহলে কেন চীন এ জোটের বাইরে থাকবে?
এবারের সার্ক সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার নিকট-প্রতিবেশী চীনকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির সরাসরি প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তান বলেছে, সার্ককে শক্তিশালী করতে চীনের অন্তর্ভুক্তি সময়ের দাবি। এ ব্যাপারে সব সময়ই ভারত বিরোধিতা করে আসছিল। এবার দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। পাকিস্তান যখন প্রস্তাব উত্থাপন করল, তখন ভারত ছিল পুরোপুরি নীরব। চীনের ব্যাপারে ভারতীয় মনোভাবের আকস্মিক এই পরিবর্তন দেখে অন্য সদস্যদেশগুলো কিছুটা নড়েচড়ে বসে। কোনো কোনো দেশ ধরেই নিয়েছিল, পাকিস্তানের এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করবে ভারত। কিন্তু কেন ভারতীয় মনোভাবের এই পরিবর্তন?
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সে দেশের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো উন্নয়ন। আর এ জন্য প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা বিশেষভাবে প্রয়োজন। তা দিতে সক্ষম চীন। অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত দিক থেকে এখন বিশ্বে এক নম্বর অবস্থানে রয়েছে চীন। শ্রীলঙ্কার সর্বদক্ষিণের জেলা হামবানতোতায় এশিয়ার বৃহত্তম রুহুনু মাগামপুরা বন্দর প্রতিষ্ঠা করছে চীন। ৩৬০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এ বন্দরের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয় গত বছর। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার। ২০১৪ সালে এর কাজ শেষ হবে। চীনের অর্থায়নে হামবানতোতায় মাত্তালা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ২০১২ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হবে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২০৯ মিলিয়ন ডলার। তা ছাড়া চীন নেপালের সীমান্ত পর্যন্ত সড়কপথ তৈরি করছে।
বাংলাদেশের সঙ্গেও সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে চীন। চট্টগ্রাম-কুনমিং সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবটি নিয়ে এখনো সরকারি পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এ ছাড়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রস্তাবও দিয়েছে চীন। ভারত দেখছে, দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাচ্ছে চীন। কাজেই কৌশলগত কারণেই চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে গুরুত্ব দিচ্ছে ভারত।
চীন এই মুহূর্তে বড় অর্থনৈতিক শক্তির দেশ। চীনের হাতে এক ট্রিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত অর্থ রয়েছে। এ কারণেই চীনকে কাছে পেতে চায় ভারত। ভারত ইতিমধ্যেই চীনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অনেক উন্নতি করেছে। সীমান্ত বিরোধ অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে সরাসরি কথা বলার জন্য 'হটলাইন' প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চীন ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে।
শুধু চীন নয়, পাকিস্তানের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার উদ্যোগ নিয়েছে ভারত। এ ক্ষেত্রে ভারত কাশ্মীর ইস্যুকে পাশে রেখে অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। কারণ ভারত দেখছে, ইসলামাবাদ থেকে ইস্তাম্বুল পর্যন্ত কনটেইনার ট্রেন সার্ভিস সফল হয়েছে। ২০১০ সালে চালু হওয়া এই ট্রেন সার্ভিস প্রতি সপ্তাহে এক দিন পণ্য পরিবহন করছে। এর মাধ্যমে পাকিস্তান দূরপ্রাচ্য, মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর বাজারে ঢুকে পড়ছে। এর ফলে অর্থনৈতিকভাবে দেশটি লাভবান হচ্ছে। এই সুবিধা ভারতও নিতে চায়। তা ছাড়া ইরান, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ত্রিদেশীয় গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পটিও বাস্তবায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে ভারত মনে করে। সংগত কারণেই ভারত পাকিস্তান নীতির ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনছে।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার ছোট দেশগুলোকে সহযোগিতার ক্ষেত্রেও ভারত তার মনোভাবে পরিবর্তন এনেছে। এবারের সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে তারই প্রমাণ মিলেছে। ভারত সার্ক জোটের স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে বাণিজ্য সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে একধাপ এগিয়ে এসেছে। অনেকটা আকস্মিকভাবেই ভারত ঘোষণা করেছে যে বাংলাদেশ, নেপাল, মালদ্বীপ, ভুটান ও আফগানিস্তানকে ২৫টি বাদে সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মহমোহন সিং ঘোষণা করেছেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলো মদ, পানীয় ও তামাকজাতীয় ২৫টি পণ্য ছাড়া সব ধরনের পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারতের বাজারে রপ্তানি করতে পারবে। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে ভারতীয় মনোভাবের একটি বড় পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।
এই প্রতিযোগিতার দৌড়ে পিছিয়ে নেই পাকিস্তানও। এমনিতেই চীন পাকিস্তানের পরীক্ষিত বন্ধু। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মারাত্মক অবনতির পর চীনকেই কাছে পেয়েছে পাকিস্তান। সংগত কারণেই চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে চীনা ভাষা পাঠ্যপুস্তকে সনি্নবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে চীনা ভাষা শিক্ষা দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে চীনের কাছে এই বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে পাকিস্তানও দেশটিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে।
বাংলাদেশও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রতিটি সরকারই চীন নীতিতে একই আদর্শে বিশ্বাসী। ভূ-রাজনৈতিক কারণেও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। চীনের সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে। এ দেশের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো উন্নয়ন এবং দুই দেশের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগটি কেন বাংলাদেশ হাতছাড়া করছে, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।
ভারত যদি পাকিস্তানের সঙ্গে বৈরিতা সত্ত্বেও সম্পর্কের উন্নয়ন করতে পারে; চীনের সঙ্গে নতুন করে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার কথা ভাবতে পারে; তাহলে বাংলাদেশ কেন নয়? চীনের সঙ্গে চলমান সুসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে নিজেদের সমৃদ্ধি অর্জনের কথা অবশ্যই ভাবতে হবে। চীন সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের আরো একধাপ এগিয়ে যেতে হবে।

লেখক : কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক
mostofakamalbd@yahoo.com

No comments

Powered by Blogger.