পানকৌড়ির আশ্রয়স্থল একটি শিমুলগাছ

সূর্য যখন পশ্চিম দিকে হেলতে শুরু করে, সোনালি আভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো শিমুলগাছটি তখন আরো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সেই আলো গাছের মগডাল ও সবুজ পাতার আড়ালে থাকা পানকৌড়িগুলোকে আরো স্পষ্ট করে তোলে। একটি গাছে একসাথে এত পাখি দেখে আকৃষ্ট হন পথচারীরা। এমনকি সবাই এ নিয়ে বেশ আলোচনায় মেতে ওঠেন। এভাবে ৯ বছর ধরে একটি শিমুলগাছ শত শত পানকৌড়ির নিরাপদ আবাস হয়ে উঠেছে। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল-কাঁঠালডাঙ্গী সড়কে কুলিক নদের পাশে কেউটান গ্রামের ওই শিমুলগাছটিতে এবারো বাসা বাধতে শুরু করেছে জলচর পাখি পানকেšড়িগুলো। ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাজেদ জাহাঙ্গীরের মতে, গাছটি নিরাপদ আবাসস্থল হাওয়ার কারণেই পানকৌড়িগুলো কেউটান গ্রামের শিমুলগাছে বছরের পর বছর ধরে বাসা বাঁধছে। শিমুলগাছটির মালিক যাদব রায় জানান, ৯ বছর আগে এমন সময় এক বিকেলে চার-পাঁচটি পাখি এসে শিমুলগাছের ডালে বসে। পরদিন আরো কয়েকটি পাখি আসে। এর কয়েক দিন পর পাখিতে ভরে যায় গাছটি। পাখিগুলোকে আগলে রাখতে শুরু করে গ্রামের মানুষ। প্রতি বছর বাড়তে থাকে পাখিগুলোর আনাগোনা।
রাতে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পর সকাল থেকেই পাখিগুলো খাদ্যের খোঁজে বেড়িয়ে পড়ে। নীড়ে ফিরে আসে সন্ধ্যায়। সারা বছর ওই শিমুলগাছে বিভিন্ন প্রজাতির কোনো না কোনো পাখি থাকে। তবে ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পাখি আসে। সে সময় পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। রানীশংকৈল-কাঁঠালডাঙ্গী সড়কে কুলিক নদের পাশে মাথা উঁচু করে থাকা শিমুলগাছটির ডালে ডালে শুধু পাখি আর পাখি। কেউটান গ্রামের বাসিন্দা অকুল বর্মণ বলেন, প্রতিদিন ২০০-৩০০ পানকৌড়ি পাখি আসে। দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন অনেক মানুষ পাখি দেখতে আসেন। রানীশংকৈলের হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুব আলম জানান, পাখি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.