ফারুককে খুন করে নোমানী হত্যার বদলা শিবিরের- লাশের বদলা by শহীদুল ইসলাম

রক্ত ছুঁয়ে করা শপথ অরে অরে পালন করল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবির নেতাকমর্ী-ক্যাডাররা। সোমবার গভীর রাতে ছাত্রলীগ কমর্ী ও গণিত বিভাগের শেষ বর্ষের শিাথর্ী মোঃ ফারম্নক হোসেনকে নৃশংসভাবে খুন করে তারা শিবির নেতা নোমানী হত্যার বদলা নিয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ রাবিতে ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষে নিহত হয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান নোমানী। ওই দিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় পাশর্্ববতর্ী বিনোদপুরে নোমানীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার আগে রাবির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও জামায়াত নেতা অধ্যাপক আবুল হাশেম নোমানীর রক্ত ছুঁয়ে ৭/৮ শ' শিবির ক্যাডারকে নোমানীর খুনের বদলা 'লাশের বদলে লাশের' মাধ্যমে নেয়ার শপথ করান। নোমানী হত্যার প্রতিশোধ না নিয়ে কোন শিবিরকমর্ী ঘরে ফিরে যাবে না বলেও ওইদিন শপথ করে। সেই থেকে সুযোগের অপোয় ছিল শিবির। সোমবার রাতে তারা পরিকল্পিতভাবে প্রথমে বঙ্গবন্ধু হলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটায়। এরপর পরিকল্পনা মোতাবেক গভীর রাতে বহিরাগত সশস্ত্র ক্যাডারদের নিয়ে বিভিন্ন হলে অবস্থান করা ছাত্রলীগ নেতাকমর্ীদের ওপর হামলা চালায়। শাহ মখদুম (এসএম) হলের টিভি রম্নমে ফারম্নকসহ ১২ ছাত্রলীগ নেতাকমর্ীকে আটক করে রামদা, চাপাতি ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে শিবির ক্যাডাররা। এদের ১১ জন কোন মতে পালিয়ে যেতে সম হলেও শিবির ক্যাডাররা ফারম্নককে টিভি রম্নমেই মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ত-বিত করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

পুলিশের সঙ্গে শিবিরের
৩ ঘণ্টা বন্দুকযুদ্ধ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের সশস্ত্র ক্যাডারের সঙ্গে পুলিশের তিন ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধের সময় চরম আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় রাত কাটিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অবস্থান করা দশ হাজার শিাথর্ী। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা না করা হলেও মঙ্গলবার সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশ শিাথর্ী হল ছেড়ে চলে গেছে।
প্রত্যদশর্ীদের মতে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যনত্ম শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডারদের সঙ্গে বিভিন্ন হলের সামনে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধ হয়। শিবির ক্যাডাররা পুলিশকে ল্য করে কয়েক শ' হাত বোমা, ককটেল ও পাইপগানের গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও ৫/৬ শ' রাউন্ড শটগানের গুলি, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিপে করে। পুলিশ ও শিবির ক্যাডারদের ছোড়া এসব মুহুমর্ুহু গুলি ও বোমার শব্দে ক্যাম্পাস প্রকম্পিত হয়ে উঠে। শিবির ক্যাডারদের পিছু হটানোর জন্য পুলিশ বিভিন্ন হল ল্য করে ৩/৪ শ' রাউন্ড টিয়ার শেল নিপে করে। এসব টিয়ার শেলের আঘাতে বিভিন্ন করে জানালার কাঁচ ভেঙ্গে যায়। হলের বাইরে পুলিশের সঙ্গে শিবিরের গুলি বিনিময় ও হলের ভেতরে টিয়ার শেলের চোখ জ্বালানো ধোঁয়ায় শিাথর্ীরা দিশেহারা হয়ে পড়ে। এর আগে শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা বিভিন্ন হলে অবস্থান করা ছাত্রলীগ নেতাকমর্ীসহ সাধারণ শিাথর্ীদের ওপর হামলা, লুটপাট ও ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত কগুলোতে অগি্ন সংযোগ করে হলে হলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। অন্যদিকে চারটি হলে চার ছাত্রলীগ কমর্ীর হাত ও পায়ের রগ কেটে ফেলে রাখা হয় হলের খোলা বারান্দায়। বাইরে গুলি-বোমার শব্দ আর ভেতরে রক্তাক্ত এসব নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে শিাথর্ীরা চরম আতঙ্কগ্রসত্ম হয়ে পড়ে। এ সময় মেয়েদের হলেও চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হলে অবস্থান করা সকল শিাথর্ীর নির্ঘুম রাত কাটে। হল গেট বন্ধ থাকায় শিাথর্ীরা রাতে হল থেকে বের হতে পারেনি। হল বন্ধ ঘোষণা না করা হলেও মঙ্গলবার সকালেই হলের বেশির ভাগ শিাথর্ী হল ছেড়ে চলে যায়।

No comments

Powered by Blogger.