সরকারের প্রতিশ্রুতিতে আস্থা নেই বিদ্রোহীদের-মিয়ানমারে কাচিন বিদ্রোহীদের ওপর সেনাবাহিনীর হামলা বন্ধ

মিয়ানমারে কাচিন বিদ্রোহীদের ওপর হামলা বন্ধ করেছে সামরিক বাহিনী। গত শুক্রবার পার্লামেন্টে লড়াই বন্ধ ও অস্ত্রবিরতি আলোচনার প্রস্তাব অনুমোদনের পর গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় ভোর ৬টা থেকে হামলা বন্ধ করা হয়।
তবে কাচিন বিদ্রোহীরা সরকারের এ প্রতিশ্রুতির ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। অস্ত্রবিরতি শুরু হওয়ার পরও হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে গত মাসের শেষ দিক থেকেই বিমান হামলা চালাতে শুরু করে সেনাবাহিনী। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। যদিও সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিদ্রোহীদের সংগঠন কাচিন ইনডিপেনডেন্স অর্গানাইজেশনের (কেআইও) সামরিক শাখা কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, বিদ্রোহীদের শক্তিশালী ঘাঁটি লাইজা এলাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছানোর পর অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিল সেনাবাহিনী। বিদ্রোহীরা 'অপেক্ষা' করে সেনাবাহিনীর তৎপরতার 'নজরদারি' করবে বলে জানান তিনি। সংগঠনের থাইল্যান্ডভিত্তিক মুখপাত্র জেমস লুম দাও বলেন, 'বার্মিজরা কখনোই কথা রাখে না।' গতকালও লাইজায় বেশ কয়েক মিনিট গোলাবর্ষণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
২০১১ সালের জুনে দুই পক্ষের মধ্যে ১৭ বছর ধরে চলা অস্ত্রবিরতি ভেঙে যায়। ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন সেনাবাহিনীকে হামলা বন্ধের নির্দেশ দেন। তবে তার পরও বিচ্ছিন্নভাবে সহিংসতা অব্যাহত থাকে। ফলে সেনাবাহিনীর ওপর থেইন সেইনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এবার কাচিন বিদ্রোহীদের ওপর সেনাবাহিনীর হামলা নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সংকটের মুখে পড়ে মিয়ানমারের বহুল আলোচিত সংস্কার প্রক্রিয়াও।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ২০১১ সালে অস্ত্রবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর বিদ্রোহীদের চোরাগোপ্তা হামলায় ৩৫ সেনা নিহত এবং ১৯০ জন আহত হয়েছে। ওই সময় সংঘর্ষের কারণে প্রায় ৭৫ হাজার স্থানীয় লোক বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে মূলত স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু করে কেআইএ। তবে পরে সেখান থেকে সরে এসে তারা স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবিতে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
'গরিবদের সহায়তায় সংস্কার' : থেইন সেইন রাজধানী নেপিদোতে দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর বৈঠকে দরিদ্রদের সহায়তায় সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়ার কথা বলা হয়। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রেসিডেন্ট বলেন, সরকারকে 'অবশ্যই জনগণকেন্দ্রিক হতে হবে এবং তাদের প্রয়োজন ও আকাঙ্ক্ষার' প্রতিফলন ঘটাতে হবে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.