সিরিয়ায় উভয় পক্ষের যুদ্ধাপরাধ তদন্তের আহবান জাতিসংঘের

সিরিয়ায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার নাভি পিল্লাই। তাঁর মতে, সিরিয়া সরকার ও বিদ্রোহী_উভয় পক্ষই এ জাতীয় অপরাধ করেছে।
এদিকে সিরিয়া সংঘাতে আরো দুই সংবাদিক নিহত হয়েছেন।
গত সপ্তাহে সিরিয়ার হোমস শহরের প্রান্তে হাসউইয়া গ্রামে গণহত্যা চালানোর যে খবর পাওয়া গিয়েছিল তার সত্যতা পেয়েছে বিবিসি। ওই ঘটনায় অন্তত ১০০ জন নিহত হন। তাঁদের বাড়িঘরও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
নিরাপত্তা পরিষদের গত শুক্রবারের বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল সিরিয়া। বৈঠকে পিল্লাই সিরিয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, 'আমার দৃঢ় বিশ্বাস সেখানে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। তিনি এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) তদন্তের আহ্বান জানান। তিনি জানান, ৫৮টি সদস্য রাষ্ট্রের এ ব্যাপারে মত রয়েছে। জাতিসংঘের হিসাবে সিরিয়ায় গত ২২ মাস ধরে চলা সহিংসতায় ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
পিল্লাই বলেন, 'সিরীয়রা মনে করতে শুরু করেছে, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না জাতিসংঘ।' প্রসঙ্গত সিরিয়া আইসিসির সদস্য নয়। এখন নিরাপত্তা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিলেই সিরিয়ার বিষয়ে তদন্ত শুরু করতে পারে আইসিসি। তবে সিরিয়া প্রসঙ্গে শুরু থেকেই দ্বিধাবিভক্ত জাতিসংঘ। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের মিত্র বলে পরিচিত চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতায় সিরিয়ার বিরুদ্ধে আনা তিনটি প্রস্তাবের একটিও পাস করা যায়নি।
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনও সিরিয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গত শুক্রবার দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশটিতে (সিরিয়ায়) নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
এদিকে হোমস শহরের হাসউইয়া গ্রামে গত সপ্তাহে গণহত্যা চালানো হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছিল, তার সত্যতা পাওয়ার দাবি করেছে বিবিসি। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে ওই গ্রাম পরিদর্শনকালে বিবিসি সাংবাদিকরা একটি পুড়ে যাওয়া বাড়ির ভেতর কয়েকটি অগি্নদগ্ধ মৃতদেহও দেখেছেন। সরকারি বাহিনীর দাবি, বিদ্রোহীরা ওই গ্রামে হামলা চালায়। তবে হামলার সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করেছেন কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি।
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেরা প্রদেশে কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেল আল-জাজিরার এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম মোহাম্মদ হরানি (৩৩)। আল-জাজিরা কর্তৃপক্ষ জানায়, গত শুক্রবার সরকারি বাহিনীর গুলিতে হরানি মারা যান। এর এক দিন আগেই সহিংসতায় প্রাণ হারান ফরাসি সাংবাদিক ইয়েভেস দেবে। উত্তরাঞ্চলীয় শহর আলেপ্পোতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। বার্তা সংস্থা এএফপি ও প্যারিসভিত্তিক মানবাধিকার গ্রুপ রিপোর্টার্স উইদআউট বর্ডার্সের হিসাবে, সিরিয়ায় এ পর্যন্ত ২০ জন পেশাদার বিদেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সিরীয় সাংবাদিক মারা গেছেন ৪০ জন।
সাংবাদিক হত্যা

No comments

Powered by Blogger.