ময়নাতদন্ত বলছে ফয়সাল আত্মহত্যা করেছেন

পাকিস্তানের জাতীয় জবাবদিহিতা ব্যুরোর (এনএবি) সহকারী পরিচালক কামরান ফয়সাল আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল শনিবার প্রাথমিক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন আসতে আরো ১০ দিন সময় লাগবে।
ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছিলেন ফয়সাল। গত শুক্রবার একটি সরকারি হোস্টেলের কক্ষ থেকে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
লাশের প্রাথমিক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ইসলামাবাদে পুলিশ সদর দপ্তরে গতকাল জমা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পলি ক্লিনিকের তিনজন চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড ফয়সালের মৃতদেহ পরীক্ষা করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ফয়সালের শরীরের নির্যাতনের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শুধু ঘাড়ে একটি দাগ রয়েছে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বিভিন্ন নমুনা লাহোরের ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে ফরেনসিক প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। এরপর চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। তখন ফয়সালের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এর আগে পুলিশ এজাহারে বলা হয়েছিল, ফয়সালের মৃত্যু একটি দুর্ঘটনা। তবে তাঁর চাচার অভিযোগ, ফয়সালের পিঠ, বাহু ও কবজিতে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। ফয়সাল সম্পর্কে আরো তথ্য সংগ্রহের জন্য তাঁর নিজ শহরে পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়েছে। তারা ফয়সালের পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলবে।
এদিকে, জিয়ো নিউজ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করা থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন ফয়সাল। এ মামলা তদন্ত করার মতো যথেষ্ট যোগ্যতা নেই_এ কথা বলে ফয়সাল এনএবির মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। গত বছর ১৩ নভেম্বর লেখা ওই চিঠিতে তিনি বলেন, 'আমার পুরো চাকরি জীবনে এ ধরনের বড় দুর্নীতি মামলার তদন্ত করার কোনো আকাঙ্ক্ষাই নেই। স্পর্শকাতর এ মামলাটির তদন্ত ভার কোনো জ্যেষ্ঠ কমকর্তাই ভালো করতে পারবেন।'
ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প (আরপিপি) বরাদ্দে আশরাফ ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ-সংক্রান্ত শুনানি শেষে গত মঙ্গলবার আশরাফসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন সুপ্রিম কোর্ট। তবে গত বৃহস্পতিবার এনএবি আদালতকে জানায়, আশরাফকে গ্রেপ্তার করার পক্ষে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ তাদের কাছে নেই। দুর্নীতির দায়ে গত বছরের ৩০ মার্চ আরপিপির অধীনে সব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি বাতিলের নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে চুক্তিগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দুর্নীতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে এনএবির প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। সূত্র : ডন, টাইমস অব ইন্ডিয়া।

No comments

Powered by Blogger.