বাকৃবিতে ছাত্রলীগ দুই গ্রুপে ফের সংঘর্ষ, গুলিবিনিময়

পূর্বশত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনার সময় কমপক্ষে ১৮ রাউন্ড গুলি ছোড়ে উভয় গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের সময় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে। এদিকে সংঘর্ষের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে সভাপতি নিয়ন্ত্রিত গ্রুপের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড়ে ৮-১০টি দোকানে ভাংচুর চালায়। অন্যদিকে সংঘর্ষের সময় ক্যাম্পাসের এক সাধার শিক্ষার্থীও গুরুতর আহত হয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এদিকে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান খোকন বিশ্ববিদ্যালয়ের আমবাগান এলাকায় মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়ানোর সময় বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শামছুদ্দিন আল আজাদ নিয়ন্ত্রিত গ্রুপের নেতাকর্মীরা তার ওপর অতর্কিত আক্রমন চালায়। এদিকে এ ঘটনা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুজ্জামান ইমন নিয়ন্ত্রিত হলের নেতাকর্মীরা জানতে পারলে উত্তেজিত হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জব্বারের মোড়ের দিকে এগোতে থাকে। অন্যদিকে সভাপতি গ্রুগের নেতাকর্মীরাও জব্বারের মোড়ের দিকে এগোতে থাকলে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া, পাথর নিক্ষেপ ও ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা কমপক্ষে ১৮ রাউন্ড গুলি ছোড়ে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়। এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় আসাদুজ্জামান খোকন, সুজয়, রাহাতসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ্ কেয়ার সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সেজনু ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে বের হলে অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগ কর্মীরা। এতে তার মাথা ফেটে যায়। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ্ কেয়ার সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসার পর গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেজনু সম্প্রতি ৩১তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে যোগদান করেছেন।
এদিকে ব্যাপক গোলাগুলির পরও বাকৃবির প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত)) নাসরিন সুলতানা জানান, ক্যাম্পাসে কোন গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক রফিকুজ্জামান ইমন বলেন, ঘটনাটি অনাকাক্সিক্ষত। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে। তাছাড়া এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি শামছুদ্দিন আল আজাদ বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের খোকনের জব্বারের মোড়ে আসা ঠিক হয়নি। এতে উত্তেজিত হয়ে নেতাকর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।

No comments

Powered by Blogger.